ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গাছ তলায় বসে দুপুরের খাবার…

মাথার উপর ফ্যান নেই, নেই ডাইনিং টেবিল-চেয়ার। নেই জগ-মগ-গ্লাস-প্লেট। নেই খবারের রকমারী আয়োজন। একটি পাত্রে ভাত আর নিরামিষ তরকারি।
গাছ তলায় মাটির উপর বসে খেয়ে নিচ্ছেন দুপুরের খাবার। খাবারের পর নেই আয়েসি বিশ্রাম। আবার কাজে লেগে যেতে হবে। স্থানীয় একটি ইটভাটার শ্রমিক তিনি। কাক ডাকা ভোর থেকে কাজ শুরু হয়। বাড়ি যেতে সন্ধ্যা নামে। দুপুরের খাবার নিয়ে আসেন। এক ফাঁকে ইটভাটার এক কোনে বসে খেয়ে নেন।
কী তরকারি দিয়ে ভাত খেলেন? লজ্জা পেলেন। ভাই গরীব মানসির আবার খাওয়া। কোনোমতো বাঁচে থাহা। মাছ দৈনিক খাতি পারিনে। মাছের দাম মেলা। খালি হাটের দিন মাছ কিনি। ডাল আর শাকসবজি খাই বেশি।
আমাদের ভাত থাকলি হলো। সাথে কি থাকল সিডা বিষয় না। মরিচ-পিযেজ দিয়ে দুই থাল ভাত খায়ে ফেলতি পারি।
দিন ৪০০ টাকায় ভাটায় কাজ করি। সপ্তায় ১৩০০ টাকা দিতি হয় এনজিওর কিস্তি। চার জনের সংসার কোনমতো চলে যায়। কিছু পয়সা জমাই। অসুখ বিসুখ হলি কামে আসতি পারিনে। তহন পুঁজি ভাঙ্গে খাতি হয়।
এর মধ্যেই দরাজ কন্ঠ। খাতি এতো সুমায় লাগে?  খাতিই দিন চলে গিলি কাম করবানে কোনসুমা। হয়ে গেছে ভাই।  আসতেছি… শ্রমিক সর্দারের তাগাদা…
কোনোমতে হাতমুখ ধুয়ে না ধুয়ে মুখ মুছতে মুছতে কাজে চলে গেলেন তিনি।
নামটিও শোনা হলো না।নানা ব্যাঞ্জনায় কেউ দশ তলায় আবার কেউ গাছ তলায় নুন ভাত খায়। কতো মানুষের ভাগ্যে তিন বেলা খাবারই জোটেনা। দিনে শেষে সবাই সমান।
মহান আল্লাহর সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে দিনের পর রাত আসে। একদিন  গাছতলা আর দশতলার সব বৈষম্য ঘুচে যায়। শেষ গন্তব্য হয় সবার এক ও অভিন্ন।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

গাছ তলায় বসে দুপুরের খাবার…

আপডেট টাইম : ১২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ ২০২১
মাথার উপর ফ্যান নেই, নেই ডাইনিং টেবিল-চেয়ার। নেই জগ-মগ-গ্লাস-প্লেট। নেই খবারের রকমারী আয়োজন। একটি পাত্রে ভাত আর নিরামিষ তরকারি।
গাছ তলায় মাটির উপর বসে খেয়ে নিচ্ছেন দুপুরের খাবার। খাবারের পর নেই আয়েসি বিশ্রাম। আবার কাজে লেগে যেতে হবে। স্থানীয় একটি ইটভাটার শ্রমিক তিনি। কাক ডাকা ভোর থেকে কাজ শুরু হয়। বাড়ি যেতে সন্ধ্যা নামে। দুপুরের খাবার নিয়ে আসেন। এক ফাঁকে ইটভাটার এক কোনে বসে খেয়ে নেন।
কী তরকারি দিয়ে ভাত খেলেন? লজ্জা পেলেন। ভাই গরীব মানসির আবার খাওয়া। কোনোমতো বাঁচে থাহা। মাছ দৈনিক খাতি পারিনে। মাছের দাম মেলা। খালি হাটের দিন মাছ কিনি। ডাল আর শাকসবজি খাই বেশি।
আমাদের ভাত থাকলি হলো। সাথে কি থাকল সিডা বিষয় না। মরিচ-পিযেজ দিয়ে দুই থাল ভাত খায়ে ফেলতি পারি।
দিন ৪০০ টাকায় ভাটায় কাজ করি। সপ্তায় ১৩০০ টাকা দিতি হয় এনজিওর কিস্তি। চার জনের সংসার কোনমতো চলে যায়। কিছু পয়সা জমাই। অসুখ বিসুখ হলি কামে আসতি পারিনে। তহন পুঁজি ভাঙ্গে খাতি হয়।
এর মধ্যেই দরাজ কন্ঠ। খাতি এতো সুমায় লাগে?  খাতিই দিন চলে গিলি কাম করবানে কোনসুমা। হয়ে গেছে ভাই।  আসতেছি… শ্রমিক সর্দারের তাগাদা…
কোনোমতে হাতমুখ ধুয়ে না ধুয়ে মুখ মুছতে মুছতে কাজে চলে গেলেন তিনি।
নামটিও শোনা হলো না।নানা ব্যাঞ্জনায় কেউ দশ তলায় আবার কেউ গাছ তলায় নুন ভাত খায়। কতো মানুষের ভাগ্যে তিন বেলা খাবারই জোটেনা। দিনে শেষে সবাই সমান।
মহান আল্লাহর সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে দিনের পর রাত আসে। একদিন  গাছতলা আর দশতলার সব বৈষম্য ঘুচে যায়। শেষ গন্তব্য হয় সবার এক ও অভিন্ন।