ঢাকা , রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঘুষে ফায়ার লাইসেন্স, ভুয়া বিলের কারসাজি Logo চরভদ্রাসনে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ওয়ালিদ হোসাইন গ্রেপ্তার Logo চরভদ্রাসনে ১৬৫ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারি গ্রেপ্তার Logo রূপগঞ্জে বিদেশী পিস্তল, গুলি ও নগদ টাকা উদ্ধার Logo তারেক রহমান ও বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে রূপগঞ্জে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo কৃষি বিজ্ঞানী ড. আলী আফজাল ফুটবল টুর্নামেন্টে জয়ী ওরা ১১জন মাগুরা Logo রংপুরে সিও বাজারে এলপিজি গ্যাস পাম্পে ভয়াবহ বিস্ফোরণঃ নিহত ১, বহু আহত Logo ফরিদপুরে ড্যাব এর চিকিৎসকদের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo গোমস্তাপুরে সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু Logo শহীদ সাগরের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী আজঃ শোক আর শূণ্যতায় কাতর বাবা-মা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বর্ষার প্রতিক কদম ফুলে রাঙিয়ে তুলেছে প্রকৃতি

মুরাদ হোসেনঃ

ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আর ফুলকে বলা হয় ঋতুর দূত বা প্রকৃতির হাসি। ঋতুচক্রের ভিন্নতায় বিভিন্ন ফুলে বাহারী রঙ্গে রঙ্গিন হয়ে ওঠে প্রকৃতি। প্রকৃতির এই সাজ ও হাসিকে যুগ যুগ ধরে অব্যাহত রাখতে ঋতুতে ঋতুতে দেখা যায় চেনা অচেনা অসংখ্য ফুলের সমাহার। জানা অজানা অজ এ সব ফুল অপরুপ সাজে সাজিয়ে তুলে প্রকৃতিকে। তেমনই একটি ঐতিহ্যবাহী বনফুল হচ্ছে কদম। আর এই কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষা ঋতুর প্রতিক।
কদম- প্রকৃতির অনিদ্যসুন্দর একটি ফুলের নাম। আষাঢ়-শ্রাবণের অবিরল ধারায় পত্রপল্লবে যখন মুখরিত থাকে চারদিক।

কদম এ সময়ের ফুল, যা আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতে ফোটে। কদম ফুল নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত অনবদ্য কবিতা-
‘ধন্য কদম কেশব ঢেকেছে আজ বনতলে ধূলি, মৌমাছিরা কেয়া বনের পথ গিয়েছে ভুলি’।
বর্ষার প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলেছে আষাড়ের ফুল কদম। বিভিন্ন এলাকার রাস্তার ধারে, বাড়ী বা অফিসের আঙ্গিনায় দেখা যায় বাহারী সাজে বর্ষা ঋতুর প্রতিক কদম ফুলকে। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের প্রতিক চিরো চেনা এই কদম ফুল গাছকে নিয়ে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নন্দিত লেখা-
‘রিম ঝিম ঝিম রিম ঝিম ঝিম নামিল দেয়া, শুনি শিহরে কদম বিদরে কেয়া। ঝিলে শাপলা কদম, ওই মেলিল দল, মেঘ-অন্ধ গগন, বন্ধ খেয়া’!!

গ্রামাঞ্চলের প্রিয় ফুল কদমের মঞ্জুরি একক, গোল। ছোট ছোট অনেকগুলো পাঁপড়ি নিয়ে কদম পূর্ণতা পায়। কদম ফুল পূর্ণ প্রস্ফুটিত মঞ্জুরির রঙ সাদা হলুদ মেশানো গোল বলের মতো ঝলমলে। আমাদের বাংলা সাহিত্যে, কবিতায়, গানে, চিত্রে কদম ফুল বারবার এসেছে। তাইতো বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম গানে গেয়েছেন-
বাঁশি বাজায় কে কদম তলায় ওগো ললিতে, শুনে সরে না পা চলিতে। তার মনের বেদন শত সুরে সুরে, কি যেন চাহে মোরে বলিতে’!

বর্ষা ঋতুর প্রথম মাস আষাঢ়ের শুরুতেই গাছে গাছে ফোটে কদম ফুল। প্রতিবছরই কদম ফুল বর্ষার আগাম বার্তা বয়ে আনে প্রকৃতির বুকে। রাস্তার ধারে বাড়ির পাশের ঝোপ-ঝাড়ে অফিসের কোনে গজিয়ে উঠা বনবৃক্ষ কদমের গাছে গাছে ফুটে ওঠা ফুলের সুগন্ধে লোকালয় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে মানুষের মনে জাগিয়ে দিচ্ছে বর্ষার অনুভ’তি। কদম ফুলের সৌন্দর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্য্যে বিমোহিত হন না এমন বেরসিক মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার।

বাঙালি ও কদমফুল একই সুত্রে গাঁথা। বাংলা সাহিত্যে এনে দিয়েছে  স্নিগ্ধতা। এই কদম ফুল বাঙালির শিল্প-সাহিত্যের এক অনন্য উৎস। মোহনীয় গন্ধে ভরপুর এই কদম ফুলকে ঘিরে বাংলা সাহিত্যে রচিত হয়েছে অসংখ্য কবিতা, ছড়া, গান ও উপন্যাস। রাধারমণ দত্তের বিখ্যাত প্রেমসংগীতে গেয়েছেন-
‘প্রাণ সখিরে ওই শোন কদম্বতলে বংশী বাজায় কে? আমার মাথার বেনী খুইলা দিমু, তারে আনিয়া দে’।

প্রতিটি বাঙালিকে কদম ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে প্রকৃতির প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। আকাশে মেঘের গর্জন আর প্রচন্ড বর্ষনই বলে দেয় কদম ফুলের সময় এটা। বর্ষা ঋতুর সৌন্দর্য্যরে প্রতিক এ কদম ফুল আষাঢ়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে সাজিয়ে তুলেছে। গাছের মগডালে ফুটে ওঠা কদম ফুলের জুড়ি নেই। কদম ফুলের সৌন্দর্য্যে হ্নদয়কে রাঙ্গিয়ে তুলেছে নানা বয়সি নারী পুরুষ।

তবে বর্তমানে কদম ফুল গাছ খুব একটা দেখা যায়না বাড়ির পাশের ঝোপ-ঝাড়ে, রাস্তার ধারে বা অফিসের কোনে। প্রকৃতি থেকে প্রায় হারিয়ে যেতেই বসেছে বর্ষা ঋতুর প্রতিক এই কদম ফুল গাছ।

 


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুষে ফায়ার লাইসেন্স, ভুয়া বিলের কারসাজি

error: Content is protected !!

বর্ষার প্রতিক কদম ফুলে রাঙিয়ে তুলেছে প্রকৃতি

আপডেট টাইম : ০৩:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
মুরাদ হোসেন, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি :

মুরাদ হোসেনঃ

ছয় ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। আর ফুলকে বলা হয় ঋতুর দূত বা প্রকৃতির হাসি। ঋতুচক্রের ভিন্নতায় বিভিন্ন ফুলে বাহারী রঙ্গে রঙ্গিন হয়ে ওঠে প্রকৃতি। প্রকৃতির এই সাজ ও হাসিকে যুগ যুগ ধরে অব্যাহত রাখতে ঋতুতে ঋতুতে দেখা যায় চেনা অচেনা অসংখ্য ফুলের সমাহার। জানা অজানা অজ এ সব ফুল অপরুপ সাজে সাজিয়ে তুলে প্রকৃতিকে। তেমনই একটি ঐতিহ্যবাহী বনফুল হচ্ছে কদম। আর এই কদম ফুলকে বলা হয় বর্ষা ঋতুর প্রতিক।
কদম- প্রকৃতির অনিদ্যসুন্দর একটি ফুলের নাম। আষাঢ়-শ্রাবণের অবিরল ধারায় পত্রপল্লবে যখন মুখরিত থাকে চারদিক।

কদম এ সময়ের ফুল, যা আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতে ফোটে। কদম ফুল নিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত অনবদ্য কবিতা-
‘ধন্য কদম কেশব ঢেকেছে আজ বনতলে ধূলি, মৌমাছিরা কেয়া বনের পথ গিয়েছে ভুলি’।
বর্ষার প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলেছে আষাড়ের ফুল কদম। বিভিন্ন এলাকার রাস্তার ধারে, বাড়ী বা অফিসের আঙ্গিনায় দেখা যায় বাহারী সাজে বর্ষা ঋতুর প্রতিক কদম ফুলকে। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যের প্রতিক চিরো চেনা এই কদম ফুল গাছকে নিয়ে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নন্দিত লেখা-
‘রিম ঝিম ঝিম রিম ঝিম ঝিম নামিল দেয়া, শুনি শিহরে কদম বিদরে কেয়া। ঝিলে শাপলা কদম, ওই মেলিল দল, মেঘ-অন্ধ গগন, বন্ধ খেয়া’!!

গ্রামাঞ্চলের প্রিয় ফুল কদমের মঞ্জুরি একক, গোল। ছোট ছোট অনেকগুলো পাঁপড়ি নিয়ে কদম পূর্ণতা পায়। কদম ফুল পূর্ণ প্রস্ফুটিত মঞ্জুরির রঙ সাদা হলুদ মেশানো গোল বলের মতো ঝলমলে। আমাদের বাংলা সাহিত্যে, কবিতায়, গানে, চিত্রে কদম ফুল বারবার এসেছে। তাইতো বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম গানে গেয়েছেন-
বাঁশি বাজায় কে কদম তলায় ওগো ললিতে, শুনে সরে না পা চলিতে। তার মনের বেদন শত সুরে সুরে, কি যেন চাহে মোরে বলিতে’!

বর্ষা ঋতুর প্রথম মাস আষাঢ়ের শুরুতেই গাছে গাছে ফোটে কদম ফুল। প্রতিবছরই কদম ফুল বর্ষার আগাম বার্তা বয়ে আনে প্রকৃতির বুকে। রাস্তার ধারে বাড়ির পাশের ঝোপ-ঝাড়ে অফিসের কোনে গজিয়ে উঠা বনবৃক্ষ কদমের গাছে গাছে ফুটে ওঠা ফুলের সুগন্ধে লোকালয় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে মানুষের মনে জাগিয়ে দিচ্ছে বর্ষার অনুভ’তি। কদম ফুলের সৌন্দর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্য্যে বিমোহিত হন না এমন বেরসিক মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার।

বাঙালি ও কদমফুল একই সুত্রে গাঁথা। বাংলা সাহিত্যে এনে দিয়েছে  স্নিগ্ধতা। এই কদম ফুল বাঙালির শিল্প-সাহিত্যের এক অনন্য উৎস। মোহনীয় গন্ধে ভরপুর এই কদম ফুলকে ঘিরে বাংলা সাহিত্যে রচিত হয়েছে অসংখ্য কবিতা, ছড়া, গান ও উপন্যাস। রাধারমণ দত্তের বিখ্যাত প্রেমসংগীতে গেয়েছেন-
‘প্রাণ সখিরে ওই শোন কদম্বতলে বংশী বাজায় কে? আমার মাথার বেনী খুইলা দিমু, তারে আনিয়া দে’।

প্রতিটি বাঙালিকে কদম ফুলের মৌ-মৌ গন্ধে প্রকৃতির প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। আকাশে মেঘের গর্জন আর প্রচন্ড বর্ষনই বলে দেয় কদম ফুলের সময় এটা। বর্ষা ঋতুর সৌন্দর্য্যরে প্রতিক এ কদম ফুল আষাঢ়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে সাজিয়ে তুলেছে। গাছের মগডালে ফুটে ওঠা কদম ফুলের জুড়ি নেই। কদম ফুলের সৌন্দর্য্যে হ্নদয়কে রাঙ্গিয়ে তুলেছে নানা বয়সি নারী পুরুষ।

তবে বর্তমানে কদম ফুল গাছ খুব একটা দেখা যায়না বাড়ির পাশের ঝোপ-ঝাড়ে, রাস্তার ধারে বা অফিসের কোনে। প্রকৃতি থেকে প্রায় হারিয়ে যেতেই বসেছে বর্ষা ঋতুর প্রতিক এই কদম ফুল গাছ।

 


প্রিন্ট