ঢাকা , বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আলমডাঙ্গার কানাইনগর-শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া Logo কুষ্টিয়ায় জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় সেই পুলিশ সদস্য ক্লোজড Logo যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের ব্যালকনি ভেঙে প্রকৌশলীসহ নিহত ৩ Logo শিবপুরে কাবিখা ও টিআর প্রকল্পের ৫২ লাখ টাকাসহ দুই কর্মকর্তা গোয়েন্দার জালে আটক Logo বেনাপোলের বাহাদুরপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র জরুরি কর্মীসভা অনুষ্টিত Logo সিংড়ায় ছাত্রশিবিরের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি Logo জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ফুলবাড়ীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দোয়া মাহফিল Logo কাফনের কাপড় পরে কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও Logo তানোরে পানিতে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু Logo তানোরে ফসলি জমি জবরদখল চেষ্টার অভিযোগ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তানোরে প্রতি কেজি আলুতে কৃষকের লোকসান ১৯ টাকা

আলিফ হোসেনঃ

রাজশাহীর তানোরে আলু চাষ করে আলু চাষিরা চরম লোকসানের মুখে পড়ে দেউলিয়া হবার পথে। এবছর প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ (স্টোর জাত পর্যন্ত) ২৫ টাকা। কিন্ত্ত কোল্ড স্টোরে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি দরে। এতে স্টোর ভাড়া বাদে কৃষক পাচ্ছেন প্রতি কেজিতে মাত্র ৬ টাকা,প্রতি কেজিতে লোকসান ১৯ টাকা।

এদিকে কোল্ড স্টোরে ৭০ কেজির এক বস্তা আলু ঢেলে বাছাই করে কৃষক আলু পাচ্ছে ৬০ কেজি, তবে স্টোর ৭০ কেজিরই ভাড়া নিচ্ছেন। স্টোর কর্তৃপক্ষ শ্রমিক খরচসহ প্রতি কেজি আলুর ভাড়া নিচ্ছেন ৬ টাকা।এছাড়াও সেড ভাড়া রয়েছে। এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা এবং ফলন হয়েছে গড় ৫৫ বস্তা (এক বস্তায় ৭০ কেজি)। এবছর আলুর উৎপাদন খরচও উঠছে না। এতে আলু চাষিদের মাথায় হাত। বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকেরা আলু চাষ করে অনেকট দেউলিয়া হবার পথে।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জমি ইজারা, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরিসহ প্রতিক্ষেত্রে অস্বাভাবিকভাবে
খরচ বেড়েছে। তানোরের তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) কালনা গ্রামের মৌসুমি আলু চাষি ইঞ্জিনিয়ার মাহাবুর রহমান মাহাম বলেন, এবছর তিনি সাত বিঘা জমিতে আলু চাষ করে দেউলিয়া হবার পথে। তিনি বলেন, এবছর এক বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।তিনি বলেন, গত বছর তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করে দ্বিগুণ লাভ হয়েছিল। এবারো লাভের আশায় সবকিছু বাড়তি দামে কিনে সাত বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। কিন্ত্ত ১৫ টাকা কেজি দরে একশ’ বস্তা আলু বিক্রি করে তিনি মাত্র ৩০ হাজার টাকা পেয়েছেন।

তবে নিজের জমি বলে লোকসান কিছুটা কম হয়েছে।

উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) জমসেদপুর মাঠে ৪ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে চাষি ওলিকে। তিনি জানান সবকিছুর বাড়তি দামের কারনে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছিল প্রায় ৮০ হাজার টাকা করে। বিঘায় ফলন হয়েছিল ৩৪ বস্তা করে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি করতে হয়েছে ১৪ টাকা কেজি দরে। ৪ বিঘায় লোকসান প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা।

একই মাঠে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আসায় দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে কৃষক আনোয়ারকে। ফটিক নামের অপর কৃষক ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে প্রতি বিঘায় ফলন পেয়েছে ৪০ বস্তা করে।এতে তার বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসান হয়েছে। অন্যদিকে সাফিউল দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, সাত বছর পর লাভের আশায় আলু চাষ করে খরচের অর্ধেক টাকাও তুলতে পারেননি।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, এবারে আলুর লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আলমডাঙ্গার কানাইনগর-শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া

error: Content is protected !!

তানোরে প্রতি কেজি আলুতে কৃষকের লোকসান ১৯ টাকা

আপডেট টাইম : ০৯:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

রাজশাহীর তানোরে আলু চাষ করে আলু চাষিরা চরম লোকসানের মুখে পড়ে দেউলিয়া হবার পথে। এবছর প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ (স্টোর জাত পর্যন্ত) ২৫ টাকা। কিন্ত্ত কোল্ড স্টোরে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা কেজি দরে। এতে স্টোর ভাড়া বাদে কৃষক পাচ্ছেন প্রতি কেজিতে মাত্র ৬ টাকা,প্রতি কেজিতে লোকসান ১৯ টাকা।

এদিকে কোল্ড স্টোরে ৭০ কেজির এক বস্তা আলু ঢেলে বাছাই করে কৃষক আলু পাচ্ছে ৬০ কেজি, তবে স্টোর ৭০ কেজিরই ভাড়া নিচ্ছেন। স্টোর কর্তৃপক্ষ শ্রমিক খরচসহ প্রতি কেজি আলুর ভাড়া নিচ্ছেন ৬ টাকা।এছাড়াও সেড ভাড়া রয়েছে। এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা এবং ফলন হয়েছে গড় ৫৫ বস্তা (এক বস্তায় ৭০ কেজি)। এবছর আলুর উৎপাদন খরচও উঠছে না। এতে আলু চাষিদের মাথায় হাত। বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকেরা আলু চাষ করে অনেকট দেউলিয়া হবার পথে।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জমি ইজারা, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিকের মজুরিসহ প্রতিক্ষেত্রে অস্বাভাবিকভাবে
খরচ বেড়েছে। তানোরের তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) কালনা গ্রামের মৌসুমি আলু চাষি ইঞ্জিনিয়ার মাহাবুর রহমান মাহাম বলেন, এবছর তিনি সাত বিঘা জমিতে আলু চাষ করে দেউলিয়া হবার পথে। তিনি বলেন, এবছর এক বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।তিনি বলেন, গত বছর তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করে দ্বিগুণ লাভ হয়েছিল। এবারো লাভের আশায় সবকিছু বাড়তি দামে কিনে সাত বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। কিন্ত্ত ১৫ টাকা কেজি দরে একশ’ বস্তা আলু বিক্রি করে তিনি মাত্র ৩০ হাজার টাকা পেয়েছেন।

তবে নিজের জমি বলে লোকসান কিছুটা কম হয়েছে।

উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) জমসেদপুর মাঠে ৪ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে চাষি ওলিকে। তিনি জানান সবকিছুর বাড়তি দামের কারনে প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছিল প্রায় ৮০ হাজার টাকা করে। বিঘায় ফলন হয়েছিল ৩৪ বস্তা করে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি করতে হয়েছে ১৪ টাকা কেজি দরে। ৪ বিঘায় লোকসান প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা।

একই মাঠে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে লাভের আসায় দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে কৃষক আনোয়ারকে। ফটিক নামের অপর কৃষক ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করে প্রতি বিঘায় ফলন পেয়েছে ৪০ বস্তা করে।এতে তার বিপুল পরিমাণ টাকা লোকসান হয়েছে। অন্যদিকে সাফিউল দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, সাত বছর পর লাভের আশায় আলু চাষ করে খরচের অর্ধেক টাকাও তুলতে পারেননি।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, এবারে আলুর লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।


প্রিন্ট