পাবনায় স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) দুপুর একটায় পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক জৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোঃ শামসুল আলামীন এই রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত সোহেল রানা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের ওয়াদুদ হোসেনের ছেলে। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার কনস্টেবল নং ২৯৫৪৬। মামলার বাদি সোহেল রানার স্ত্রী জালেকা খাতুন একই উপজেলার দারামুদা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, সোহেল রানার সাথে জালেকা খাতুনের বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানা। যৌতুকের টাকা না পেয়ে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে মারধর করতেন তিনি। এর এক পর্যায়ে যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করায় ২০১৬ সালের ২৭ আগস্ট গর্ভজাত শিশু সন্তানসহ স্ত্রী জালেকা খাতুনকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন সোহেল। এরপর বাবার বাড়িতে থাকলেও স্ত্রী-সন্তানের কোনো খোঁজ নেননি তিনি। ওই বছরের ৭ অক্টোবর জালেকা খাতুনকে নিয়ে তার স্বজনরা সোহেল রানার বাড়িতে গিয়ে তাকে মেনে নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সোহেল ৫ লাখ টাকা না দিলে জালেকাকে গ্রহণ করবে না বলে জানিয়ে দেন।
পরে ২০১৭ সালের ২৮ জানুয়ারি জালেকা খাতুন বাদি হয়ে (১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায়) পাবনা আমলী আদালত-৩ এ একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাঁথিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা পারভীনকে নির্দেশ দেন। তিনি ওই বছরের ১৪ মার্চ তারিখে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। যার স্মারক নং ২৮। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে একই বছরের ১২ এপ্রিল আসামী সোহেল রানার বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। এরপর সমনে হাজির হয়ে আদালতে থেকে জামিন নেন পুলিশ কনস্টেবল সোহেল।
দীর্ঘ স্বাক্ষ্য প্রমাণ ও শুনানী শেষে আদালত বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) উল্লেখিত সাজার আদেশ দেন। এ সময় আসামী সোহেল রানা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
|
প্রিন্ট