ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ইউসুফদিয়া এলাকার আপ্তপাড়া গ্রামে চলাচলের রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামবাসি সহ স্থানীয় কয়েক গ্রামের মানুষ। গ্রারে শুরুতে কাঁচা রাস্তা থাকলেও গ্রামের ভেতরে বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে নেই চলাচলের রাস্তা। জরুরী সেবার গাড়ি সহ কোন গাড়িই গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। বৃষ্টি নামলে ও বর্ষাকালে গ্রামবাসির রাস্তা না থাকার কষ্ট কয়েকগুন বেড়ে যায়।
গ্রামের প্রায় সহস্রাধীক মানুষ প্রতিদিন রাস্তা না থাকার কষ্ট নিয়ে জীবন যাপন করছে। রাস্তা না থাকায় প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবী, দিন মুজুর, কৃষকসহ পার্শবর্তী কয়েক গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে। রাস্তা না থাকায় মৌসুমী ফসল ঘরে তুলতেও সমস্যায় পড়েন কয়েক গ্রামের মানুষ। বর্ষাকালে যাতায়াত প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, রোগি থেকে লাশ সব কিছুই যেন থমকে যায় রাস্তা না থাকার কারনে। গ্রামবাসি সহ স্থানীয়রা রাস্তার দাবি জানিয়েছে।
স্থানীয় যুবক শফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তা না থাকায় আমরা প্রতিনিয়ত চরম সমস্যায় দিন কাটাচ্ছি, আমার নিজের মটর সাইকেল অন্য গ্রামে রেখে তারপর হেটে গ্রাামের মধ্যে বাড়িতে আসতে হয়। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে এক প্রান্ত থেকে কোলে নিয়ে গ্রামে প্রবেশের মুখে রাস্তায় নিতে হয়। তাছাড়া এ্যাম্বুলেঞ্চ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ সহ কোন গাড়িই গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। আমরা গ্রামবাসিরা একটা রাস্তা চাই।
সদ্য সরকারি চাকুরী পাওয়া এক যুবক বলেন, রাস্তা না থাকায় অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শেষ করে একটি চাকরি পেয়েছি। কিন্তু বিয়ে করতে পারছি না। রাস্তা না থাকায় এখন এই গ্রামে কেউ আত্বীয় করতে চায় না। তাছাড়া আমার কর্মস্থলে যেতেও রাস্তার খুব দরকার। আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করবো আমাদের রাস্তাটি যেন দ্রুত নির্মান করে দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক বলেন, দুজন উপজেলা চেয়ারম্যান ১০ বছর, ও ইউপি চেয়ারম্যানরা প্রায় ২০ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমানে জেলা পরিষদের সদস্য আমাদের এলাকার উনারা চাইলে অল্প দিনের মধ্যে রাস্তা নির্মান করে দিতে পারতেন। এছাড়াও রাস্তা নির্মানের জন্য প্রায় ২০/৩০ ফুট সরকারি হালট রয়েছে। প্রয়োজনে গ্রামবাসিদের সাথে নিয়ে রাস্তা নির্মান করা যেতে পারে।
এই বিষয়ে জানতে ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়াকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিব করেন নাই। জেলা পরিষদের সদস্য নুর আহম্মদ তোতা মিয়া বলেন, আঃ মান্নান মাকুব্বরের বাড়ির পূর্ব পাশ হইতে দোয়ালের মজড়া পুকুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মানের জন্য স্কিম দিয়ে মাননীয় সংসদ সদস্য শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। রাস্তা নির্মানে প্রয়োজনে পুনরায় আমরা তার কাছে যাব।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, পরবর্তীতে আমরা ওই জায়গা যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াদুদ মাতুব্বর এই প্রতিবেদক কে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। ইন-শা আল্লাহ মাননীয় সংসদ সদস্য শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরীর মাধ্যমে ঐ এলাকায় দ্রুত রাস্তা নির্মান করে দেওয়া হবে।
প্রিন্ট