ঢাকা , সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সুবর্ণচরে রোদের মধ্যে খেলার সময় শিশুর মৃত্যু Logo চরভদ্রাসনে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে – রাজবাড়ীতে ইসি আলমগীর Logo দৌলতপুরে প্রেমের টানে দুলাভাইয়ের হাত ধরে শ্যালকের বউ উধাও Logo মুকসুদপুরে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ Logo কুষ্টিয়ার মিরপুরে নছিমনের ধাক্কায় ব্যবসায়ী নিহত Logo আলফাডাঙ্গাউপজেলাচেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ তাহিদুর রহমান মুক্তর মতবিনিময় সভা Logo নলছিটিতে একাধিক মাদক মামলার আসামি খলিল আটক Logo গরমে হাতিয়ায় শ্রেণিকক্ষেই অসুস্থ হয়ে পড়ল ১৭ শিক্ষার্থী Logo মধুখালীতে ভোটগ্রহনকারী কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সিএনএনকে প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বসম্প্রদায়ের উচিত ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া

-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। -ফাইল ছবি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বসম্প্রদায়ের জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। অব্যাহত এই যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এই যুদ্ধ (ইউক্রেনে) বন্ধ করতে বিশ্বের এগিয়ে আসা উচিত।’ সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব গতকাল মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কেবল নিউজ নেটওয়ার্কে (সিএনএন) সম্প্রচার করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় অংশটি গত রাতে প্রচারিত হওয়ার কথা।

যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেকোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি আমরা। কোনো বিরোধ থাকলে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আমরা কখনোই কোনো ধরনের আগ্রাসন বা কোনো সংঘর্ষকে সমর্থন করি না।’ তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

সাংবাদিক রিচার্ড কোয়েস্টের নেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ইউক্রেনের যুদ্ধ, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, চীন থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত স্পষ্ট, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বিদ্বেষ নয়। আমরা এটি অনুসরণ করছি, তাই যখন আমরা কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন বা আক্রমণ দেখি, আমরা অবশ্যই এর বিরোধিতা করি।’

তিনি বলেন, যুদ্ধ এক পক্ষের দ্বারা সংঘটিত হতে পারে না, উভয় পক্ষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি দেশের নিজস্ব ভূখণ্ডে (স্বাধীনভাবে) বসবাস করার এবং তাদের নিজস্ব অঞ্চল রক্ষার অধিকার রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সমর্থন করে এমন প্রতিটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবার কাছাকাছি—চীন, যুক্তরাষ্ট্র বা ভারত। যারা আমাদের উন্নয়নে সহযোগিতা করছে, আমরা তাদের সঙ্গে আছি। চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। তারা বিনিয়োগ করছে এবং কিছু নির্মাণকাজ করছে, এটিই মূলকথা।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কারো ওপর নির্ভরশীল নই।’

চীন থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক। আমরা বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে বেশির ভাগ ঋণ নিয়ে থাকি। চীন থেকে আমাদের ঋণ খুবই কম। এটা শ্রীলঙ্কা বা অন্য কারো মতো নয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অকারণে সরকার কোনো ঋণ বা কোনো মেগাপ্রকল্প নেয় না। কোনো মেগাপ্রকল্প বা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করি, কোন প্রকল্প থেকে আমরা রিটার্ন পেতে পারি এবং আমরা সুবিধাভোগী হব।’

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বাংলাদেশের কী প্রয়োজন জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, তারা যেন তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেয়। শুধু তাই নয়, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপও শুরু করেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে, তারা সঠিকভাবে সাড়া দিচ্ছে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এরই মধ্যে চীন, আসিয়ান দেশ, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে কথা বলেছে এবং মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ দেওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করেছে।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, মিয়ানমার সরকার কারো কথাই শুনছে না। এটাই সমস্যা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশি (এক কোটি) মানুষকে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় দেওয়ার কথা বিবেচনা করে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা (১২ লাখ) বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’ হয়ে উঠছে। কারণ দেশে অতিরিক্ত জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাকে তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে। আমাকে তাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে।’

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সুবর্ণচরে রোদের মধ্যে খেলার সময় শিশুর মৃত্যু

error: Content is protected !!

সিএনএনকে প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বসম্প্রদায়ের উচিত ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া

আপডেট টাইম : ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বসম্প্রদায়ের জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। অব্যাহত এই যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এই যুদ্ধ (ইউক্রেনে) বন্ধ করতে বিশ্বের এগিয়ে আসা উচিত।’ সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব গতকাল মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কেবল নিউজ নেটওয়ার্কে (সিএনএন) সম্প্রচার করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় অংশটি গত রাতে প্রচারিত হওয়ার কথা।

যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেকোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি আমরা। কোনো বিরোধ থাকলে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আমরা কখনোই কোনো ধরনের আগ্রাসন বা কোনো সংঘর্ষকে সমর্থন করি না।’ তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

সাংবাদিক রিচার্ড কোয়েস্টের নেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ইউক্রেনের যুদ্ধ, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, চীন থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত স্পষ্ট, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বিদ্বেষ নয়। আমরা এটি অনুসরণ করছি, তাই যখন আমরা কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন বা আক্রমণ দেখি, আমরা অবশ্যই এর বিরোধিতা করি।’

তিনি বলেন, যুদ্ধ এক পক্ষের দ্বারা সংঘটিত হতে পারে না, উভয় পক্ষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি দেশের নিজস্ব ভূখণ্ডে (স্বাধীনভাবে) বসবাস করার এবং তাদের নিজস্ব অঞ্চল রক্ষার অধিকার রয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে—এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সমর্থন করে এমন প্রতিটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবার কাছাকাছি—চীন, যুক্তরাষ্ট্র বা ভারত। যারা আমাদের উন্নয়নে সহযোগিতা করছে, আমরা তাদের সঙ্গে আছি। চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। তারা বিনিয়োগ করছে এবং কিছু নির্মাণকাজ করছে, এটিই মূলকথা।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কারো ওপর নির্ভরশীল নই।’

চীন থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক। আমরা বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে বেশির ভাগ ঋণ নিয়ে থাকি। চীন থেকে আমাদের ঋণ খুবই কম। এটা শ্রীলঙ্কা বা অন্য কারো মতো নয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অকারণে সরকার কোনো ঋণ বা কোনো মেগাপ্রকল্প নেয় না। কোনো মেগাপ্রকল্প বা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করি, কোন প্রকল্প থেকে আমরা রিটার্ন পেতে পারি এবং আমরা সুবিধাভোগী হব।’

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বাংলাদেশের কী প্রয়োজন জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, তারা যেন তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেয়। শুধু তাই নয়, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপও শুরু করেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে, তারা সঠিকভাবে সাড়া দিচ্ছে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার এরই মধ্যে চীন, আসিয়ান দেশ, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে কথা বলেছে এবং মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ দেওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করেছে।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, মিয়ানমার সরকার কারো কথাই শুনছে না। এটাই সমস্যা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশি (এক কোটি) মানুষকে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় দেওয়ার কথা বিবেচনা করে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা (১২ লাখ) বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’ হয়ে উঠছে। কারণ দেশে অতিরিক্ত জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাকে তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে। আমাকে তাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে।’