ঢাকা , বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo নিখোঁজ কন্যাকে ফিরে পেতে সাংবাদিক সম্মেলন করছে ভুক্তভোগী পরিবার Logo নড়াইলে দোকানঘর পোড়ানোর মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo ফরিদপুরে ‌ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরের ‌ ৪৯ তম ‌ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo রাজাপুরে শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগ মাদ্রসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে Logo ভেড়ামারায় বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo তানোরে ভুয়া প্রতিবন্ধী দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ Logo ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে তৃণমুলে জনপ্রিয় মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন Logo আপনার আদরের সন্তানকে আগে মানুষের মতো মানুষ করুনঃ -মিজানুর রহমান Logo গংগাচড়ার আলদাদপুরে সহিংস হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারের খোঁজখবর নিতে জামায়াত নেতা অধ্যাপক রায়হান সিরাজীর পরিদর্শন Logo গংগাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘর মেরামতে উপজেলা প্রশাসনের নজরকাড়া উদ্যোগ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

অনাড়াম্বর আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

লেখক-মকবুল হোসেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের তৎকালীন সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। কবির গুণীজনের কথামালার সময়োপযোগী লেখা গ্রন্থবই ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ এই বইটি মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে অনাড়াম্বর আয়োজনের মধ্যে দিয়ে। কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশন প্রকাশক রাব্বুল ইসলাম খান। গ্রন্থত্ত¡ত্ব ছিলেন মোঃ রফিকুল ইসলাম।

মকবুল হোসেন সাহিত্য-সংস্কৃতি-সমাজকল্যাণ পরিষদ প্রাঙ্গণে গতকাল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মসলেমপুর গ্রামে লেখকের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বনার্ঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব, সাহিত্যিক মকবুল হোসেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম (লালু) এর সভাপতিত্বে ও বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ভেড়ামারা উপজেলার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক তৌহিদুল ইসলাম পান্নার সঞ্চলনায় বিশাল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রয়াত কবির নাতি খায়রুল ইসলাম রিক্তা। তার সার্বিক তত্বাবধান এই অনুষ্ঠানের উপস্থিত সকলের প্রশংসা কুড়ায়।

অনুষ্ঠানে বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন। বিজেএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ আসলাম উদ্দীন ও ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তহিক কুষ্টিয়ার মুখ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ডাক্তার আমিরুল ইসলাম মান্নান, সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক ভোরের কাগজ ও ডেইলি পোষ্ট পত্রিকার ভেড়ামারা প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন বাবু, কুচিয়ামোড়া বিজেএম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শহিদুল ইসলাম, বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বিশেষ আতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

মঞ্চে সকাল ১১টার সময় ঐ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বরেণ্য শিক্ষক কবি সাহিত্যিক মকবুল হোসেনের লেখা বই ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ তার এই বইটি পাঠককে দৃঢ়চেতা হওয়ার প্রেরণা যোগাবে। দেশের ,গ্রামের প্রতি মমতা বাড়াবে। পাঠকরা তার বই পড়ে অনেক উপকৃত হবেন অবশ্যই।

বিজেএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ আসলাম উদ্দীন বলেন, প্রেসিডেন্ট মকবুল হোসেন ব্যক্তি উন্নয়ন ও সামষ্টিক জাগরণে যার সুদূরপ্রসারী চেতনা তার লেখা বইতে ভূমিকা সর্বস্বীকার্য। বিশিষ্টজনদের অভিজ্ঞতা-উৎসারিত এইসব কথামালারই একটি সময়োপযোগী লেখা বই ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’।

ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তহিক কুষ্টিয়ার মুখ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ডাক্তার আমিরুল ইসলাম মান্নান বলেছেন, বিভিন্ন অঙ্গনের সর্বজনশ্রদ্ধেয় ছিলেন মকবুল হোসেন, তিনি সমাজ-সচেতন ব্যক্তি ছিলেন। কবির কর্মপ্রাণ ও সার্থক মানুষদের চিন্তা জ্ঞান প্রজ্ঞার এক অনুপম সম্মিলন ঘটেছে তার লেখা বইতে।

বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হাফিজুর রহমান আজাদ বলেন,এই বইটি পাঠকের উপলব্ধি-জগতকে আলোড়িত ও সংহত করার পাশাপাশি তাদের চিন্তারাজ্যে সৃষ্ট কল্যাণতরঙ্গ জোগাবে আত্মবিকাশের পথে অক্লান্ত হেঁটে চলার সাহস ও শক্তি যোগাবে। সমাজ পরিবর্তনের পথ দেখাবে। মানুষের মনের মুক্তচিন্তা মনের জানালা খুলে দিবে। নতুন প্রেরণা জোগাবে এবং মানুষকে বই পড়া ও লেখার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে তোলবে।

বক্তারা লেখক সম্পর্কে আরো বলেন, শিক্ষক মকবুল হোসেনের লেখার হাত তার অনেক আগে থেকেই ভালো ছিল। তার লেখার মধ্যে সারল্যতার প্রাধান্যটাই বেশি। লেখালেখি মানুষ নিজের তাড়নায় করে। কেউ লেখেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে, কেউ লেখেন মনের আনন্দে। মকবুল হোসেন মনের আনন্দে সরল অভিব্যক্তি প্রকাশের একজন কবি। এমন মন্তব্য বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বলেছেন বক্তারা।

কবি সাহিত্যিক ও অনুবাদক ইংরেজী বাংলা দুভাষ্যতেই নিয়মিত লেখালেখি করেন। আমেরিকা প্রবাসী রওশন হাসান বলেন, ,আমার পিতামহ মকবুল হোসেন ছিলেন একজন বিচক্ষণ শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, কবি, গীতিকার ও সুরকার। তিনি ছিলেন আমার শৈশবের মেন্টর । বাবার সরকারি চাকুরির বদৌলতে আমার শৈশব কেটেছে পিরোজপুরে। আমার পিতামহীর মৃত্যুর পর আমাদের পরিবারের সঙ্গে আমার পিতামহ বসবাস করতেন । আমার শৈশবের স্বর্ণ সময় কেটেছে অরন্যঘেরা পিরোজপুর বাংলোয় । সেসময় বিদ্যালয়ের হোমওয়ার্ক পাঠ আমার পিতামহের কাছে সম্পন্ন করতাম । ইংরেজী গ্রামারের নানাবিধ নিয়ম আমাকে শিক্ষা দিতেন । আমার পিতামহের কারণেই শৈশবে আমার মধ্যে ইংরেজী ভাষার প্রতি অনুরক্তি জাগ্রত হয়েছিল । পরবর্তীতে সেই ইচ্ছেটিকে প্রাধান্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলাম” ।

উল্লেখ্য, মকবুল হোসেন ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ততকালীন সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং পরবর্তীতে নানা কারনে রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সমাজকল্যাণ ও সাহিত্য চর্চায় মনযোগী হন। তিনি বাহাদুরপুর ইউনিয়নের একজন কীর্তিমান পুরুষ হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন।

প্রয়াত কবির পুত্র রফিকুল ইসলাম সংস্থাপন মন্ত্রণায়ের যুগ্ম সচিব হন এবং একসময় পিরোজপুরের এসডিও হিসেবে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। তার আরেক পুত্র রবিউল ইসলাম বিদ্যূৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন। মকবুল হোসেন একজন সুশিক্ষক হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মসলেমপুরে তার নামে মকবুল হোসেন সাহিত্য,সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যান পরিষদ টি শুভ উদ্বোধন করেন।

এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমেরিকাসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকারী তার বংশের বর্তমান প্রজন্ম তথা উত্তরসুরীগণ গ্রামের বাড়িতে সমবেত হন। বক্তারা মকবুল হোসেনের সমৃদ্ধ জীবনের উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন। তার উত্তরসূরীরাও সাহিত্য চর্চায় নিজেদেরকে নিবেদিত রেখেছেন। তাদের মধ্যে আমেরিকা প্রবাসী নাতনী রওশন হাসান এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। তিনি এবারের বাংলা একাডেমির বই মেলায় রওশন হাসানের লেখা “তোমাকে প্রদক্ষিণ করি” কাব্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তার রচিত “অনূদিত বর্ণমালা” এবং “ওভার দ্যা হরিজন” পাঠক মহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে।

কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশনার ষষ্ঠ বছর আটত্রিশ নন্বর বইটি মকবুল হোসেনের লেখা ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ বইটি ৫৯ পৃষ্ঠার। প্রচ্ছদ ও নকশা করেছেন খান রিফাত। বইয়ের মূল্য ১৫০ টাকা।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নিখোঁজ কন্যাকে ফিরে পেতে সাংবাদিক সম্মেলন করছে ভুক্তভোগী পরিবার

error: Content is protected !!

অনাড়াম্বর আয়োজনের মধ্যে দিয়ে ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

আপডেট টাইম : ০৪:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :

লেখক-মকবুল হোসেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের তৎকালীন সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। কবির গুণীজনের কথামালার সময়োপযোগী লেখা গ্রন্থবই ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ এই বইটি মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে অনাড়াম্বর আয়োজনের মধ্যে দিয়ে। কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশন প্রকাশক রাব্বুল ইসলাম খান। গ্রন্থত্ত¡ত্ব ছিলেন মোঃ রফিকুল ইসলাম।

মকবুল হোসেন সাহিত্য-সংস্কৃতি-সমাজকল্যাণ পরিষদ প্রাঙ্গণে গতকাল কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মসলেমপুর গ্রামে লেখকের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় বনার্ঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বাংলাদেশ সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব, সাহিত্যিক মকবুল হোসেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম (লালু) এর সভাপতিত্বে ও বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ভেড়ামারা উপজেলার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক তৌহিদুল ইসলাম পান্নার সঞ্চলনায় বিশাল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রয়াত কবির নাতি খায়রুল ইসলাম রিক্তা। তার সার্বিক তত্বাবধান এই অনুষ্ঠানের উপস্থিত সকলের প্রশংসা কুড়ায়।

অনুষ্ঠানে বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন। বিজেএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ আসলাম উদ্দীন ও ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তহিক কুষ্টিয়ার মুখ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ডাক্তার আমিরুল ইসলাম মান্নান, সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক ভোরের কাগজ ও ডেইলি পোষ্ট পত্রিকার ভেড়ামারা প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন বাবু, কুচিয়ামোড়া বিজেএম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শহিদুল ইসলাম, বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বিশেষ আতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

মঞ্চে সকাল ১১টার সময় ঐ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বরেণ্য শিক্ষক কবি সাহিত্যিক মকবুল হোসেনের লেখা বই ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ তার এই বইটি পাঠককে দৃঢ়চেতা হওয়ার প্রেরণা যোগাবে। দেশের ,গ্রামের প্রতি মমতা বাড়াবে। পাঠকরা তার বই পড়ে অনেক উপকৃত হবেন অবশ্যই।

বিজেএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ আসলাম উদ্দীন বলেন, প্রেসিডেন্ট মকবুল হোসেন ব্যক্তি উন্নয়ন ও সামষ্টিক জাগরণে যার সুদূরপ্রসারী চেতনা তার লেখা বইতে ভূমিকা সর্বস্বীকার্য। বিশিষ্টজনদের অভিজ্ঞতা-উৎসারিত এইসব কথামালারই একটি সময়োপযোগী লেখা বই ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’।

ভেড়ামারা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাপ্তহিক কুষ্টিয়ার মুখ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ডাক্তার আমিরুল ইসলাম মান্নান বলেছেন, বিভিন্ন অঙ্গনের সর্বজনশ্রদ্ধেয় ছিলেন মকবুল হোসেন, তিনি সমাজ-সচেতন ব্যক্তি ছিলেন। কবির কর্মপ্রাণ ও সার্থক মানুষদের চিন্তা জ্ঞান প্রজ্ঞার এক অনুপম সম্মিলন ঘটেছে তার লেখা বইতে।

বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হাফিজুর রহমান আজাদ বলেন,এই বইটি পাঠকের উপলব্ধি-জগতকে আলোড়িত ও সংহত করার পাশাপাশি তাদের চিন্তারাজ্যে সৃষ্ট কল্যাণতরঙ্গ জোগাবে আত্মবিকাশের পথে অক্লান্ত হেঁটে চলার সাহস ও শক্তি যোগাবে। সমাজ পরিবর্তনের পথ দেখাবে। মানুষের মনের মুক্তচিন্তা মনের জানালা খুলে দিবে। নতুন প্রেরণা জোগাবে এবং মানুষকে বই পড়া ও লেখার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে তোলবে।

বক্তারা লেখক সম্পর্কে আরো বলেন, শিক্ষক মকবুল হোসেনের লেখার হাত তার অনেক আগে থেকেই ভালো ছিল। তার লেখার মধ্যে সারল্যতার প্রাধান্যটাই বেশি। লেখালেখি মানুষ নিজের তাড়নায় করে। কেউ লেখেন সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে, কেউ লেখেন মনের আনন্দে। মকবুল হোসেন মনের আনন্দে সরল অভিব্যক্তি প্রকাশের একজন কবি। এমন মন্তব্য বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বলেছেন বক্তারা।

কবি সাহিত্যিক ও অনুবাদক ইংরেজী বাংলা দুভাষ্যতেই নিয়মিত লেখালেখি করেন। আমেরিকা প্রবাসী রওশন হাসান বলেন, ,আমার পিতামহ মকবুল হোসেন ছিলেন একজন বিচক্ষণ শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, কবি, গীতিকার ও সুরকার। তিনি ছিলেন আমার শৈশবের মেন্টর । বাবার সরকারি চাকুরির বদৌলতে আমার শৈশব কেটেছে পিরোজপুরে। আমার পিতামহীর মৃত্যুর পর আমাদের পরিবারের সঙ্গে আমার পিতামহ বসবাস করতেন । আমার শৈশবের স্বর্ণ সময় কেটেছে অরন্যঘেরা পিরোজপুর বাংলোয় । সেসময় বিদ্যালয়ের হোমওয়ার্ক পাঠ আমার পিতামহের কাছে সম্পন্ন করতাম । ইংরেজী গ্রামারের নানাবিধ নিয়ম আমাকে শিক্ষা দিতেন । আমার পিতামহের কারণেই শৈশবে আমার মধ্যে ইংরেজী ভাষার প্রতি অনুরক্তি জাগ্রত হয়েছিল । পরবর্তীতে সেই ইচ্ছেটিকে প্রাধান্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছিলাম” ।

উল্লেখ্য, মকবুল হোসেন ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ততকালীন সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং পরবর্তীতে নানা কারনে রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে সমাজকল্যাণ ও সাহিত্য চর্চায় মনযোগী হন। তিনি বাহাদুরপুর ইউনিয়নের একজন কীর্তিমান পুরুষ হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেন।

প্রয়াত কবির পুত্র রফিকুল ইসলাম সংস্থাপন মন্ত্রণায়ের যুগ্ম সচিব হন এবং একসময় পিরোজপুরের এসডিও হিসেবে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। তার আরেক পুত্র রবিউল ইসলাম বিদ্যূৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন। মকবুল হোসেন একজন সুশিক্ষক হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মসলেমপুরে তার নামে মকবুল হোসেন সাহিত্য,সংস্কৃতি ও সমাজ কল্যান পরিষদ টি শুভ উদ্বোধন করেন।

এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমেরিকাসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানকারী তার বংশের বর্তমান প্রজন্ম তথা উত্তরসুরীগণ গ্রামের বাড়িতে সমবেত হন। বক্তারা মকবুল হোসেনের সমৃদ্ধ জীবনের উপর আলোকপাত করে বক্তব্য রাখেন। তার উত্তরসূরীরাও সাহিত্য চর্চায় নিজেদেরকে নিবেদিত রেখেছেন। তাদের মধ্যে আমেরিকা প্রবাসী নাতনী রওশন হাসান এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। তিনি এবারের বাংলা একাডেমির বই মেলায় রওশন হাসানের লেখা “তোমাকে প্রদক্ষিণ করি” কাব্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তার রচিত “অনূদিত বর্ণমালা” এবং “ওভার দ্যা হরিজন” পাঠক মহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে।

কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশনার ষষ্ঠ বছর আটত্রিশ নন্বর বইটি মকবুল হোসেনের লেখা ‘যে নামের আবৃত্তিতে এত মধু আছে’ বইটি ৫৯ পৃষ্ঠার। প্রচ্ছদ ও নকশা করেছেন খান রিফাত। বইয়ের মূল্য ১৫০ টাকা।


প্রিন্ট