ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরা মহম্মদপুর শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন মধুমতী নদীর চর থেকে অবৈধভাবে বালু কাটার মহা হিড়িকঃ ভূয়া সাংবাদিক পরিচয় সাদ্দামের

মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন বালুর ঘাঠ থেকে মধুমতী নদীর জেগে ওঠা প্রায় এক কিলোমিটার চর থেকে অবৈধভাবে সরকারি বিধিনিষেধ আইনকে অমান্য করে একটা প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে বালি কাটার মহাহিড়িক চলছে। শুক্রবার বিকাল ৪.৩০ টার সময় শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন মধুমতী বালুর চরে দেখা যায় প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে বেলচা দিয়ে হাজার হাজার ঘনফুট বালি কাটা হয়।
গোপনসূত্রের ভিত্তিতে জানা যায় প্রতিদিন ফজরের নামাজের পূর্ব থেকেই শুরু করে বেলা ১২ টা পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে বালি কাটে লোকজন। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ টা লাটা ট্রাকে বালি নিয়ে যাওয়া হয় যার প্রতি লাটা গাড়িতে ড্রাইভার সহ ৫ জন করে বালি কাটার লোকজন থাকে। এই লাটা গাড়ি চালকদের কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। তারা হলো মহিলা মেম্বার জুলেখার ছেলে হঠাৎপাড়ার রিপন মোল্লা, সোনাপুর গ্রামের গোলজার, শিরগ্রামের বাদশার ছেলে রবিউল।
শিরগ্রামের স্থানীয় এলাকার মাঠের কৃষকরা জানান মধুমতী নদীর চর থেকে বালু কাটার কারণে এই বছরের বর্ষার মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টির পানির কারণে এই এলাকার কৃষি জমি ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আর সেই সাথে কৃষকদের চরম ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিরগ্রাম বাজারের গ্রাম চিকিৎসক বালি ব্যবসায়ী মামুন বলেন আমরা কয়েকজন মিলে এই মধুমতী নদীর চর থেকে নিয়মিত  বালি কেটে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি। গোপালনগর গ্রামের বালি ব্যবসায়ি সেলিম হলো এই ব্যবসার মূলহোতা, তার সাথে আছে শিরগ্রামের ইমদাদ। গোপালনগর গ্রামের সাদ্দামের সাথে দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টারের সাথে মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদের বঙ্গবন্ধু মুরালের সামনে থেকে সন্ধ্যা ৬.৫০ টার সময় সরাসরি কথা হয়।
এই সময় সাদ্দাম উত্তেজিত হয়ে জানায় শিরগ্রামের চর থেকে বালি নিয়ে আমি ব্যবসা করি,  আপনি পারলে বালির প্রতিবেদন করে দেন পত্রিকায়। এই কথা বলে সে তার কালো রংয়ের হিরো হোন্ডা মোটরসাইকেল এর সামনের স্টিকার লাগানো দৈনিক সকাল পত্রিকার নাম দেখিয়ে বলে আমি সকাল পত্রিকার প্রতিনিধি এবং নিজেকে সে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তি পরিচয় দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
দৈনিক সকাল পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এ্যাডভোকেট মির্জা হাফিজ বলেন- সাদ্দাম দৈনিক সকাল পত্রিকার কোন প্রতিনিধি না; আর সে কোন সাংবাদিক নয়। তিনি আরও বলেন গোপালনগর গ্রামের বালি ব্যবসায়ী সেলিমের সাথে সাদ্দামের গভীর সম্পর্ক আছে।
শিরগ্রামের মেম্বার হাসান মোল্লা জানান প্রতিদিন ভোরে পূর্ব থেকে বেলা ১২-১ টার সময় পর্যন্ত চর থেকে বালি কেটে নিয়ে যায় লাটা গাড়িতে আর এই বালি কাটার জন্য শিরগ্রামের মাটির রাস্তার খুবই বেহাল অবস্থা। প্রচুর ধুলা-বালির কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলে অসুবিধা, ঘরে ধুলা-বালি ঢুকে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রী রামানন্দ পাল জানান মধুমতী নদীর চর থেকে বালি কাটার কোন সুযোগ নেই, এটা সরকারি কোন বালি মহাল না। কেউ যদি বালি কেটে থাকে তাহলে সেটা অবৈধ। সেই অবৈধ বালি কাটার ব্যাপারে মহম্মদপুর উপজেলা প্রশাসন তথ্য পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করবে ও আইনের পদক্ষেপ নিবে।তিনি আরও জানান শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন চর থেকে বালি কাটার বিষয়টি দীঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মিয়াকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিলো।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন মধুমতী নদীর চরে জেগে উঠা বালির মহাল মাগুরা জেলার মধ্যে পড়েছে, এটা সরকারি সম্পত্তি। অবৈধভাবে সরকারি জায়গার বালি কাটা বা উত্তোলন করার কোন এখতিয়ার কারোরই নেই এবং এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি আরও বলেন অবৈধভাবে বালি কাটার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনী পদক্ষেপের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সদরপুরে ছাদ থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

error: Content is protected !!

মাগুরা মহম্মদপুর শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন মধুমতী নদীর চর থেকে অবৈধভাবে বালু কাটার মহা হিড়িকঃ ভূয়া সাংবাদিক পরিচয় সাদ্দামের

আপডেট টাইম : ১২:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩
ফারুক আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা :
মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন বালুর ঘাঠ থেকে মধুমতী নদীর জেগে ওঠা প্রায় এক কিলোমিটার চর থেকে অবৈধভাবে সরকারি বিধিনিষেধ আইনকে অমান্য করে একটা প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে বালি কাটার মহাহিড়িক চলছে। শুক্রবার বিকাল ৪.৩০ টার সময় শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন মধুমতী বালুর চরে দেখা যায় প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে বেলচা দিয়ে হাজার হাজার ঘনফুট বালি কাটা হয়।
গোপনসূত্রের ভিত্তিতে জানা যায় প্রতিদিন ফজরের নামাজের পূর্ব থেকেই শুরু করে বেলা ১২ টা পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে বালি কাটে লোকজন। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ টা লাটা ট্রাকে বালি নিয়ে যাওয়া হয় যার প্রতি লাটা গাড়িতে ড্রাইভার সহ ৫ জন করে বালি কাটার লোকজন থাকে। এই লাটা গাড়ি চালকদের কয়েকজনের নাম পাওয়া যায়। তারা হলো মহিলা মেম্বার জুলেখার ছেলে হঠাৎপাড়ার রিপন মোল্লা, সোনাপুর গ্রামের গোলজার, শিরগ্রামের বাদশার ছেলে রবিউল।
শিরগ্রামের স্থানীয় এলাকার মাঠের কৃষকরা জানান মধুমতী নদীর চর থেকে বালু কাটার কারণে এই বছরের বর্ষার মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টির পানির কারণে এই এলাকার কৃষি জমি ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আর সেই সাথে কৃষকদের চরম ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিরগ্রাম বাজারের গ্রাম চিকিৎসক বালি ব্যবসায়ী মামুন বলেন আমরা কয়েকজন মিলে এই মধুমতী নদীর চর থেকে নিয়মিত  বালি কেটে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি। গোপালনগর গ্রামের বালি ব্যবসায়ি সেলিম হলো এই ব্যবসার মূলহোতা, তার সাথে আছে শিরগ্রামের ইমদাদ। গোপালনগর গ্রামের সাদ্দামের সাথে দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টারের সাথে মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদের বঙ্গবন্ধু মুরালের সামনে থেকে সন্ধ্যা ৬.৫০ টার সময় সরাসরি কথা হয়।
এই সময় সাদ্দাম উত্তেজিত হয়ে জানায় শিরগ্রামের চর থেকে বালি নিয়ে আমি ব্যবসা করি,  আপনি পারলে বালির প্রতিবেদন করে দেন পত্রিকায়। এই কথা বলে সে তার কালো রংয়ের হিরো হোন্ডা মোটরসাইকেল এর সামনের স্টিকার লাগানো দৈনিক সকাল পত্রিকার নাম দেখিয়ে বলে আমি সকাল পত্রিকার প্রতিনিধি এবং নিজেকে সে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তি পরিচয় দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
দৈনিক সকাল পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এ্যাডভোকেট মির্জা হাফিজ বলেন- সাদ্দাম দৈনিক সকাল পত্রিকার কোন প্রতিনিধি না; আর সে কোন সাংবাদিক নয়। তিনি আরও বলেন গোপালনগর গ্রামের বালি ব্যবসায়ী সেলিমের সাথে সাদ্দামের গভীর সম্পর্ক আছে।
শিরগ্রামের মেম্বার হাসান মোল্লা জানান প্রতিদিন ভোরে পূর্ব থেকে বেলা ১২-১ টার সময় পর্যন্ত চর থেকে বালি কেটে নিয়ে যায় লাটা গাড়িতে আর এই বালি কাটার জন্য শিরগ্রামের মাটির রাস্তার খুবই বেহাল অবস্থা। প্রচুর ধুলা-বালির কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলে অসুবিধা, ঘরে ধুলা-বালি ঢুকে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রী রামানন্দ পাল জানান মধুমতী নদীর চর থেকে বালি কাটার কোন সুযোগ নেই, এটা সরকারি কোন বালি মহাল না। কেউ যদি বালি কেটে থাকে তাহলে সেটা অবৈধ। সেই অবৈধ বালি কাটার ব্যাপারে মহম্মদপুর উপজেলা প্রশাসন তথ্য পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করবে ও আইনের পদক্ষেপ নিবে।তিনি আরও জানান শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন চর থেকে বালি কাটার বিষয়টি দীঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোকন মিয়াকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিলো।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের শিরগ্রাম বাজার সংলগ্ন মধুমতী নদীর চরে জেগে উঠা বালির মহাল মাগুরা জেলার মধ্যে পড়েছে, এটা সরকারি সম্পত্তি। অবৈধভাবে সরকারি জায়গার বালি কাটা বা উত্তোলন করার কোন এখতিয়ার কারোরই নেই এবং এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। তিনি আরও বলেন অবৈধভাবে বালি কাটার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনী পদক্ষেপের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

প্রিন্ট