মাত্র ৩ শতাংশ বসতভিটা ছাড়া আর কোনো জমি নেই। তাই ভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন করি তা দিয়েই কোনো রকম সংসার চলছে। জিনিস পত্রের যে দাম বেড়েছে তাতে তিন বেলা ভাত খেয়ে বেঁচে থাকা কষ্ট হয়ে পড়ছে। এক দিন ভ্যান না চালালে বাড়ির হাড়ি জলেনা না খেয়ে থাকতে হয়। এসব কথা বললেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের ভ্যান চালক কায়েম মিয়া।
স্ত্রী ও চার সন্তান নিয়ে কায়েম মিয়ার সংসার। এর মধ্যে মেঝ মেয়ে মারিয়া বাক প্রতিবন্ধী। মেয়েটি কোনো কাজ করতে পারেনা। ঘরে মায়ের মায়ের কাজে সহযোগীতা করেন বড় মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কারিমা খানম। প্রতিবন্ধী মেয়েটির ভাতার জন্য কাগজপত্র নিয়ে দারে দারে ঘুরেছেনবাবা। ভাতা হবে বলে দেওয়া হয়েছে আশ্বাস।শত চেষ্টার পরেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোনো সরকারি ভাতা। বড়ই কষ্টে জীবন যাপন করছে পরিবারটি।
আড়পাড়া গ্রামে কায়েম মিয়ার.বাড়িতে গেলে দেখা যায়, ৩ শতাংশ জমিতে ছয় সদস্যর থাকার জায়গা বলতে এক চালা টিনের ছাপড়া, পাট খড়ির বেড়া। শরীরে তাদের জীর্ণ শীর্ণ পোশাক।
কামেয় মিয়ার স্ত্রী সাথি বেগম জানান, আল্লাহ আমাদের চার সন্তান দিয়েছেন। এর মধ্যে মেঝ মেয়েটি কথা বলতে পারে না। শুনেছি, সরকার প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়। আমাদের ভাগ্যে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি ভাতা বা সাহায্য জোটেনি। ছোট বাচ্চাটির বয়স এক মাস। জন্ম নেওয়ার সময় সিজার অপারেশন করতে হয়েছে। প্রতি মাসে অনেক টাকার ওষুধ লাগছে। শরীর অনেক দুর্বল টাকার অভাবে ভালো কিছু খেতে পারি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমদাদুল হক ওরফে উকিল মিয়া বলেন, আমি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি গত ডিসেম্বর মাসে প্রতিবন্ধী মেয়েটির ভাতার বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসে এক সেট কাগজ জমা দেওয়া হয়েছে।
ভাতার বিষয়ে জানতে বানা ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ হারুন-অর-রশীদকে একাধীক বার ফোন দিলে তিনি এক বার ফোন ধরেন। প্রতিবন্ধী ভাতার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর আবারও তাকে ফোন দিলে আর ফোন রিছিপ করেন নি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বজলুর রশীদ জানান, এই পরিবারের প্রতিবন্ধী সন্তানের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যেমে আবেদন করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও রফিকুল হক জানান, প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।
প্রিন্ট