ঢাকা , শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ঈশ্বরদীতে তাপদাহে লিচুর ফলন বিপর্যয়, বেড়েছে দাম Logo স্কুল ছাত্র অন্তর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আজিজুল গ্রেফতার Logo যাত্রীর গায়ের পোশাক পুড়িয়ে মিলল সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ Logo কালুখালীতে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ সম্পন্ন Logo ঈশ্বরদীতে জব্দকৃত খিচুড়ি এতিমখানায় বিতরণ, জরিমানা ১০ হাজার টাকা Logo ফরিদপুর পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo হাতিয়ার দিঘীতে মিললো এক মণ ওজনের কোরাল মাছ, ৪০ হাজারে বিক্রি ! Logo পদ্মা নদী থেকে ১৯ ঘণ্টা পর কিশোরের লাশ উদ্ধার Logo প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ‌ছাত্রলীগের কর্মসূচি পালিত Logo ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‌ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরা মাঙ্গনডাঙ্গার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল শেখ পায়নি বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব 

মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার কাদিরপাড়া ইউনিয়নের মাঙ্গনডাঙ্গা গ্রামের ইসরাইল শেখ (৮৫) একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু ভাগ্যর নির্মম পরিহাসে তাকে দেওয়া হয়নি বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব। মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসরাইল শেখ এর পিতার নাম মৃত আবেদ শেখ, মাতার নাম আহাতুন নেছা, স্ত্রী শেফালী বেগম তার পৈতৃক বাড়ি মাঙ্গনডাঙ্গা গ্রামের (বিশ্বাস পাড়া) এলাকায়। সংসার জীবনে সে ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক ১৯৭১ সালে তার বড় পুত্র আনিছুর রহমান (যুদ্ধা) জন্ম গ্রহণ করে তাই বড় ছেলেকে আদর করে ডাক নাম রাখা হয়েছিলো যুদ্ধা।
কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রায় ৫ বছর পূর্বে সম্ভবত ২০১৭ সালে তার ছোট পুত্র তৈয়বুর রহমান হঠাৎ করে মারা যায়। মুক্তিযুদ্ধা ইসরাইল শেখ ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পূর্বে সম্ভবত ১৯৬০ সাল- ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য ছিলেন এবং দেশ স্বাধীনের পরও ২০০০ সাল পর্যন্ত আনসার ও ভিডিপি বাহিনীর সদস্য হয়ে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেছেন। ১৯৭১ সালে দেশে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি দেশ মাতৃকার টানে বাংলাদেশকে শত্রু মুক্ত করতে পাকিস্তানি পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। তিনি শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের শ্রীকোল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর কমান্ডারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান কমান্ডারের অধীনে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার ঐতিহাসিক কামান্নার যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন দীর্ঘ ৯ মাস।
তার স্ত্রী শেফালী বেগম বলেন যুদ্ধের সময় শত্রুদের গুলির আঘাতে নারকেল গাছ থেকে ডাব তার ঘাড়ের কাঁধের উপর পড়ে ছিলো তবুও তিনি সেই প্রচন্ড ব্যাথাকে সহ্য করে অনেক কষ্টকে ধারণ করে হাসিমুখে যুদ্ধ করে ছিলেন। ইসরাইল শেখ এর সাথে যুদ্ধ করে ছিলেন সব্দালপুর ইউনিয়নের নহাটা গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুয়াজ্জেন মোল্লা। এবিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুয়াজ্জেন মোল্লার পুত্র মকিদ মোল্লা জানান আমার আব্বার সাথে ইসরাইল শেখ চাচা একসাথে অবস্থান করে দেশকে স্বাধীন করার জন্য ৭১ সালে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে ছিলো।
সব্দালপুর ইউনিয়নের নহাটা গ্রামের মৃত আসমত আলীর পুত্র মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা (গেজেট-১০২৫ লাল কার্ড) মৃত্যুর পূর্বে এই প্রতিবেদকের কাছে ভিডিও বক্তব্য বলেন ইসরাইল শেখ একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। একসাথে আমরা শৈলকূপায় যুদ্ধ করেছি কিন্তু চূড়ান্ত তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে জানান শ্রীপুর উপজেলার কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নবুওয়্যাত মোল্লার গাফিলতির কারনে ইসরাইল শেখ এর নাম বাদ পড়ে যায়।
৬ নং কাদিরপাড়া ইউনিয়নের অনলাইন আবেদনে দাবিদার মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় দেখা যায় ৭ নং ক্রমিকে ডিজি নং- ১৩১ মোঃ ইসরাইল শেখ এর নাম। কাদিরপাড়া ইউনিয়ন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু বক্কার মোল্লা (বাংলাদেশ সেনা গেজেট- ১০৬৪১) বলেন, মাঙ্গনডাঙ্গার ইসরাইল শেখ প্রকৃত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তার নাম অনলাইন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ডিজি নং- ১৩১ ক্রমিক নং সিরিয়ালে আছে।
মাগুরা জেলা ইউনিট কমান্ড (যুদ্ধকালিন কমান্ডার) এস. এম. আব্দুর রহমান (যুদ্ধাহত) বলেন, ইসরাইল শেখ সম্ভবত বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর মিয়ার অধীনে বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে ছিলো। ইসরাইল শেখের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের একটাই চাওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছে মৃত্যুর আগে যেন প্রকৃত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পান ইসরাইল শেখ।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

ঈশ্বরদীতে তাপদাহে লিচুর ফলন বিপর্যয়, বেড়েছে দাম

error: Content is protected !!

মাগুরা মাঙ্গনডাঙ্গার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল শেখ পায়নি বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব 

আপডেট টাইম : ১১:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার কাদিরপাড়া ইউনিয়নের মাঙ্গনডাঙ্গা গ্রামের ইসরাইল শেখ (৮৫) একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু ভাগ্যর নির্মম পরিহাসে তাকে দেওয়া হয়নি বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব। মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইসরাইল শেখ এর পিতার নাম মৃত আবেদ শেখ, মাতার নাম আহাতুন নেছা, স্ত্রী শেফালী বেগম তার পৈতৃক বাড়ি মাঙ্গনডাঙ্গা গ্রামের (বিশ্বাস পাড়া) এলাকায়। সংসার জীবনে সে ২ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তানের জনক ১৯৭১ সালে তার বড় পুত্র আনিছুর রহমান (যুদ্ধা) জন্ম গ্রহণ করে তাই বড় ছেলেকে আদর করে ডাক নাম রাখা হয়েছিলো যুদ্ধা।
কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রায় ৫ বছর পূর্বে সম্ভবত ২০১৭ সালে তার ছোট পুত্র তৈয়বুর রহমান হঠাৎ করে মারা যায়। মুক্তিযুদ্ধা ইসরাইল শেখ ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পূর্বে সম্ভবত ১৯৬০ সাল- ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য ছিলেন এবং দেশ স্বাধীনের পরও ২০০০ সাল পর্যন্ত আনসার ও ভিডিপি বাহিনীর সদস্য হয়ে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেছেন। ১৯৭১ সালে দেশে যুদ্ধ শুরু হলে তিনি দেশ মাতৃকার টানে বাংলাদেশকে শত্রু মুক্ত করতে পাকিস্তানি পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। তিনি শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের শ্রীকোল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর কমান্ডারের নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান কমান্ডারের অধীনে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার ঐতিহাসিক কামান্নার যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন দীর্ঘ ৯ মাস।
তার স্ত্রী শেফালী বেগম বলেন যুদ্ধের সময় শত্রুদের গুলির আঘাতে নারকেল গাছ থেকে ডাব তার ঘাড়ের কাঁধের উপর পড়ে ছিলো তবুও তিনি সেই প্রচন্ড ব্যাথাকে সহ্য করে অনেক কষ্টকে ধারণ করে হাসিমুখে যুদ্ধ করে ছিলেন। ইসরাইল শেখ এর সাথে যুদ্ধ করে ছিলেন সব্দালপুর ইউনিয়নের নহাটা গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুয়াজ্জেন মোল্লা। এবিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুয়াজ্জেন মোল্লার পুত্র মকিদ মোল্লা জানান আমার আব্বার সাথে ইসরাইল শেখ চাচা একসাথে অবস্থান করে দেশকে স্বাধীন করার জন্য ৭১ সালে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে ছিলো।
সব্দালপুর ইউনিয়নের নহাটা গ্রামের মৃত আসমত আলীর পুত্র মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা (গেজেট-১০২৫ লাল কার্ড) মৃত্যুর পূর্বে এই প্রতিবেদকের কাছে ভিডিও বক্তব্য বলেন ইসরাইল শেখ একজন প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা। একসাথে আমরা শৈলকূপায় যুদ্ধ করেছি কিন্তু চূড়ান্ত তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে জানান শ্রীপুর উপজেলার কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নবুওয়্যাত মোল্লার গাফিলতির কারনে ইসরাইল শেখ এর নাম বাদ পড়ে যায়।
৬ নং কাদিরপাড়া ইউনিয়নের অনলাইন আবেদনে দাবিদার মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকায় দেখা যায় ৭ নং ক্রমিকে ডিজি নং- ১৩১ মোঃ ইসরাইল শেখ এর নাম। কাদিরপাড়া ইউনিয়ন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু বক্কার মোল্লা (বাংলাদেশ সেনা গেজেট- ১০৬৪১) বলেন, মাঙ্গনডাঙ্গার ইসরাইল শেখ প্রকৃত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তার নাম অনলাইন মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ডিজি নং- ১৩১ ক্রমিক নং সিরিয়ালে আছে।
মাগুরা জেলা ইউনিট কমান্ড (যুদ্ধকালিন কমান্ডার) এস. এম. আব্দুর রহমান (যুদ্ধাহত) বলেন, ইসরাইল শেখ সম্ভবত বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর মিয়ার অধীনে বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে ছিলো। ইসরাইল শেখের স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাদের একটাই চাওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছে মৃত্যুর আগে যেন প্রকৃত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পান ইসরাইল শেখ।