ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গোমস্তাপুরে সরিষার মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত বিস্তীর্ণ মাঠ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এবার দুই হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রায় চেয়ে উৎপাদন বেশি হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন। সরিষাসহ ভোজ্য তেলের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা এই চাষাবাদে ঝুঁকেছেন বেশী । চলতি বছর উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। সরিষা জাতের মধ্যে সর্বাধিক চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে বারি-১৪ ।

এদিকে গোমস্তাপুর উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মাঠগুলোতে চোখ জুড়ানো হলুদের সমারোহ। চোখ জুড়ানো সরিষা ফুলের অপরুপ দৃশ্য। শীতের সিক্ত বাতাশে গোমস্তাপুরের মাঠগুলোতে কৃষকের স্বপ্ন দুলছে সরিষার মৌ মৌ গন্ধে। বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষকরা। গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌরসভাসহ চৌডালা, গোমস্তাপুর, রহনপুর, বোয়ালিয়া, আলিনগর, বাঙ্গাবাড়ী, পার্বতীপুর ও রাধানগর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠগুলো ঘুরে দেখা গেছে, তবে গত বারের তুলনাই এবার সরিষা চাষাবাদ বেশীই করেছেন কৃষকেরা । ফুলে-ফলে ভরে গেছে মাঠ । কৃষকের মনে বইছে আনন্দের জোয়ার।

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার জানায়, দুই একটি চাষাবাদ এমনকি বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপণ করা হয়ে থাকে। আবাদে সেচ, সার ও কীটনাশক লাগে কম। কম খরচে সরিষা উৎপাদন হয়ে থাকে। বর্তমানে মাঠগুলোতে সরিষার ফুল থেকে ফলে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। সরিষা কেটে অনেক কৃষক বোরো ধান চাষাবাদ করবেন। ভাল ফলন ফলাতে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে জমিতে ভাল ফলন হবে বলে কৃষি কর্মকর্তা জানান ।

উপজেলায় টরি সরিষা ৭- ৪২০হেক্টর, বারি ১৪- ২৮৭৫ হেক্টর, বারি ১৫ – ১০ হেক্টর, বারি ১৭-২৫০ হেক্টর,বারি ১৮-৩২০ হেক্টর, বিনা ৯- ১৫০ হেক্টর, বিনা ৪ ৩০৫ হেক্টর, বারি ৯- ৪১০ হেক্টর, বিএডিসি ১-৫০ হেক্টর, রনি ১০- ০.১৩ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। পার্বতীপুর ইউনিয়নের জিনারপুর গ্রামের কৃষক হারুন অর রশীদ জানান, কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে উপজেলা কৃষি বিভাগ তাকে সরিষা চাষাবাদের জন্য সার ও বীজ বিনামূল্যে সহায়তা করেছে। জমিতে বীজ বপণ করে সরিষা ভাল হয়েছে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষাবাদে খরচ কম । উৎপাদন ভাল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সামনে বছর অতিরিক্ত জমিতে সরিষা চাষ করবেন বলে তিনি জানান।

রহনপুর পৌর এলাকার কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রথমবার ৭ বিঘা জমিতে সরিষার চাষাবাদ করেছি, দেখা যাক কেমন উৎপাদন হয়। বাজারে সরিষা দাম ভাল রয়েছে। পরিচর্চা করলে ভাল ফলন হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরোও জানান সরিষা উঠিয়ে ইরি ধান রোপন করবেন।

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার, দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে জানান, চলতি মৌসুমে গোমস্তাপুর উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। গতবছর ছিল দুই হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে, এ বছর প্রায় দ্বিগুণ জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর প্রণোদনা বীজ ও রাসায়নিক দেয়া হয়েছে চার হাজার ৬০০ জনকে।

এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের ৬২৮ জনকে প্রদর্শনী বীজ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরিষা বারি -১৪ জাত উপজেলায় সর্বাধিক চাষাবাদ হয়েছে। এতে খরচ হয় কম, সেচ ও সার লাগে অত্যান্ত কম। সরিষা পাতা উৎকৃষ্ট জৈব সার হিসেবে জমিতে ব্যবহার করা হয়। সরিষা কেটে কৃষকরা ইরি,বোরো ধানও উৎপাদন করতে পারবে বলে তিনি জানান।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ

error: Content is protected !!

গোমস্তাপুরে সরিষার মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত বিস্তীর্ণ মাঠ

আপডেট টাইম : ০৩:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এবার দুই হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রায় চেয়ে উৎপাদন বেশি হবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন। সরিষাসহ ভোজ্য তেলের দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা এই চাষাবাদে ঝুঁকেছেন বেশী । চলতি বছর উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। সরিষা জাতের মধ্যে সর্বাধিক চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে বারি-১৪ ।

এদিকে গোমস্তাপুর উপজেলার ৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মাঠগুলোতে চোখ জুড়ানো হলুদের সমারোহ। চোখ জুড়ানো সরিষা ফুলের অপরুপ দৃশ্য। শীতের সিক্ত বাতাশে গোমস্তাপুরের মাঠগুলোতে কৃষকের স্বপ্ন দুলছে সরিষার মৌ মৌ গন্ধে। বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষকরা। গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌরসভাসহ চৌডালা, গোমস্তাপুর, রহনপুর, বোয়ালিয়া, আলিনগর, বাঙ্গাবাড়ী, পার্বতীপুর ও রাধানগর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠগুলো ঘুরে দেখা গেছে, তবে গত বারের তুলনাই এবার সরিষা চাষাবাদ বেশীই করেছেন কৃষকেরা । ফুলে-ফলে ভরে গেছে মাঠ । কৃষকের মনে বইছে আনন্দের জোয়ার।

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার জানায়, দুই একটি চাষাবাদ এমনকি বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপণ করা হয়ে থাকে। আবাদে সেচ, সার ও কীটনাশক লাগে কম। কম খরচে সরিষা উৎপাদন হয়ে থাকে। বর্তমানে মাঠগুলোতে সরিষার ফুল থেকে ফলে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। সরিষা কেটে অনেক কৃষক বোরো ধান চাষাবাদ করবেন। ভাল ফলন ফলাতে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে জমিতে ভাল ফলন হবে বলে কৃষি কর্মকর্তা জানান ।

উপজেলায় টরি সরিষা ৭- ৪২০হেক্টর, বারি ১৪- ২৮৭৫ হেক্টর, বারি ১৫ – ১০ হেক্টর, বারি ১৭-২৫০ হেক্টর,বারি ১৮-৩২০ হেক্টর, বিনা ৯- ১৫০ হেক্টর, বিনা ৪ ৩০৫ হেক্টর, বারি ৯- ৪১০ হেক্টর, বিএডিসি ১-৫০ হেক্টর, রনি ১০- ০.১৩ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। পার্বতীপুর ইউনিয়নের জিনারপুর গ্রামের কৃষক হারুন অর রশীদ জানান, কৃষি প্রণোদনার অংশ হিসেবে উপজেলা কৃষি বিভাগ তাকে সরিষা চাষাবাদের জন্য সার ও বীজ বিনামূল্যে সহায়তা করেছে। জমিতে বীজ বপণ করে সরিষা ভাল হয়েছে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষাবাদে খরচ কম । উৎপাদন ভাল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সামনে বছর অতিরিক্ত জমিতে সরিষা চাষ করবেন বলে তিনি জানান।

রহনপুর পৌর এলাকার কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রথমবার ৭ বিঘা জমিতে সরিষার চাষাবাদ করেছি, দেখা যাক কেমন উৎপাদন হয়। বাজারে সরিষা দাম ভাল রয়েছে। পরিচর্চা করলে ভাল ফলন হবে বলে তিনি জানান। তিনি আরোও জানান সরিষা উঠিয়ে ইরি ধান রোপন করবেন।

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার, দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে জানান, চলতি মৌসুমে গোমস্তাপুর উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। গতবছর ছিল দুই হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে, এ বছর প্রায় দ্বিগুণ জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর প্রণোদনা বীজ ও রাসায়নিক দেয়া হয়েছে চার হাজার ৬০০ জনকে।

এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের ৬২৮ জনকে প্রদর্শনী বীজ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সরিষা বারি -১৪ জাত উপজেলায় সর্বাধিক চাষাবাদ হয়েছে। এতে খরচ হয় কম, সেচ ও সার লাগে অত্যান্ত কম। সরিষা পাতা উৎকৃষ্ট জৈব সার হিসেবে জমিতে ব্যবহার করা হয়। সরিষা কেটে কৃষকরা ইরি,বোরো ধানও উৎপাদন করতে পারবে বলে তিনি জানান।