মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া হাটে বাজার প্রকাশ্যে দিবালোকে গত মঙ্গলবার অনুমান বিকাল ২-৩ টার সময় শ্রীকোল ইউনিয়নের ছোনগাছা (পশ্চিম পাড়া) ওমেদ আলী শেখ কে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হাত-পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে বুধবার ৩০ নভেম্বর খামারপাড়া বাজারে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, ছোনগাছা গ্রামের ওমেদ আলী শেখ (৪২), পিং- মৃত মালেক শেখ,পেঁয়াজ হাটা থেকে বাজার করতে এসে নৃশংস হামলার শিকারে গুরুতর হাত- দুই পায়ের গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।এছাড়াও হাটুতে মারাত্মক ভাবে জখম ও এক হাতের কবজা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম হয়েছে। খামারপাড়া বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীদের গোপন সূত্রে জানা যায়, পেঁয়াজ হাটের মনিরুলের দোকানের সামনে এবং রুহুল মন্ডলের দোকানের পাশে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় ধারালো দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, রামদা, ছ্যান্দা ও হাতুড়ি নিয়ে টুপিপাড়া গ্রামের রানা মিয়া (৩৫), পিং- মুক্তাদির রহমান (আবু কাল), বারই পাড়া গ্রামের আলমগীর (৩২), খামারপাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রী নাজমুল কাজী (২৫), পিং- মুকুল কাজী, খামারপাড়া গ্রামের জলিল (৩৫), পিং- তুকা, টুপিপাড়ার শিপনের ছেলে শীতল (২৫), খামারপাড়ার শামসেল ফকিরের ছেলে নুর ইসলাম শাহেদ (৩৭), খামারপাড়ার মুকার ছেলে গোরস্থান মোড়ে চা দোকানদার আজীজুল (২৫), খামারপাড়া গ্রামের জিল্লুর ছেলে সোহেল (২৮) সহ আরও অনেক লোকজন হঠাৎ করেই ওমেদ আলী শেখ এর উপর আক্রমণ করে মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে শরীরের এক-তৃতীয়াংশ হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ছোনগাছা গ্রামে ওমেদ আলীর বাড়ির প্রতিবেশী ও ঘনিষ্ঠ স্বজনরা বলেন,
ছোনগাছা গ্রামের রুহুল মন্ডলের ছেলে আলামীন মন্ডল (২৫), রুস্তম আলী শেখের ছেলে রইজ শেখ (৪৫), ইবাদত সর্দারের ছেলে আলম সর্দার (৫০), শহীদ শেখের ছেলে রাব্বি শেখ (২৫) এরাও সহযোগী ছিলো কুপানোর সময়। ওমেদ আলী শেখের স্ত্রী নাসরিন খাতুনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে, তিনি দৈনিক সমাজের কথা কে জানান, আমার স্বামী এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের বেডে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে আসলে রাত থেকে বুধবার সকাল ৮ পর্যন্ত অপারেশন করে চিকিৎসকগণ।
সকাল ১০ টার সময় একটু হুশ ফিরলে সে আমাকে বলে খামারপাড়া বাজারের পেঁয়াজের হাট থেকে মনিরুলের দোকানের সামনে ও রুহুল মন্ডলের দোকানের পাশে থেকে হঠাৎ করে চাপাতি, রামদা দিয়ে রানা, রাজন, রইচ, রুহুলের ছেলে সহ আরও অনেক লোকজন আমাকে মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়ি কুপায়। নাসরিন খাতুন ক্রন্দনরত অবস্থায় বলেন, আমার স্বামীর কিছু হলে যারা এই নেক্কারজনক কাজ করেছে তাদের বুজে দেওয়া লাগবে। আমার ২টা ছেলে নিয়ে আমি এখন কি করবো সংসারে একমাত্র আয়ের লোক হলো আমার স্বামী ওমেদ আলী। আমার স্বামী কি ক্ষতি বা অন্যায় করেছে সে গেছে বাজার করতে। আমি দোষীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে বিচারের জন্য আইনের সুদৃষ্টি কামনা করি। নাসরিন খাতুন সবশেষে বলেন, ঢাকা থেকে ফিরে এসে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।বর্তমানে আহত ওমেদ শেখকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে উন্নত মানের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে কিন্তু ভবিষ্যতে কি হবে কর্তব্যরত চিকিৎসক এখনও কিছু বলছে না।
এ ঘটনায় এলাকায় মাগুরা জেলা পুলিশ ও শ্রীপুর থানা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ জনকে থানা হেফাজতে আনা হয়েছিলো। ঘটনার এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাব্বারুল ইসলাম বলেন, ছোনগাছা গ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং এই ঘটনার সাথে যারা সরাসরি জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
প্রিন্ট