ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo গবাদিপশুর লাম্পি স্কীন ডিজিজ রোগ প্রতিরোধে ফ্রি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প Logo দৌলতপুরে পুলিশের অভিযানে বিদেশী পিস্তল উদ্ধার Logo মুকসুদপুরে জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা, বাড়িঘর ভাংচুর Logo মাইলস্টোন দুর্ঘটনা: ভারতের চিকিৎসা সহায়তার প্রস্তাব Logo সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মজিবুর রহমান ভূঁইয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া Logo রাজশাহী জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট Logo নাটোরে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ৭ Logo বাঘায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী লিটন সহ রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার-২ Logo মৌলভী বাজার জেলা ছাত্র লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ বেনাপোল ইমিগ্রেসনে আটক Logo সদরপুরে ইজিবাইকের চাপায় প্রাণ গেল ২য় শ্রেণীর পড়ুয়া শিক্ষার্থীর
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মহম্মদপুরে খেজুরের গাছ পরিচর্ষায় ব্যস্ত গাছিরা

আবহমান কাল থেকে বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশী। তাই শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে মাগুরার মহম্মদপুর অঞ্চলের গাছিরা খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

খেজুরের রস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গাছ কাটায় পারদর্শীদের স্থানীয় ভাষায় গাছি বলা হয়। এ গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুঁণ হাতে গাছ চাঁচাছোলা ও নলি বসানোর কাজ শুরু করেছেন। তবে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় গাছ কাটা, রস জ্বালানো ও গুড়-পাটালি তৈরির উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার অন্য বছরের তুলনায় গুড়-পাটালির দাম বেশি হবে বলে সংশ্লিষ্ট গাছিরা জানিয়েছেন। তবুও তাদের মুখে ফুটে উঠেছে রসালো হাসি। কারন, এ মৌসুমের উপার্জন দিয়েই সারা বছর চলতে হয় অধিকাংশ গাছিদের।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা বা চাঁচার জন্য গাছিরা দা ও দড়ি তৈরিসহ ভাড় (মাটির ঠিলে) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। চর মুরাইল গ্রামের খেজুর গাছ তোলার গাছি আনজাল হোসেন, রায়পাশা গ্রামের আজিজার এবং জব্বার শেখ, পারলা গ্রামের তোকাব্বের মিয়া ও রহমানসহ একাধিক গাছিরা বলেন, শীত চলে আসছে। এখন খেজুর গাছ তোলার সময়। খেজুর রসের গুড়-পাটালি তৈরি করে মহম্মদপুর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এতে আমরা অনেক লাভবান হয়ে থাকি। কিন্তু ইটভাটায় খেজুর গাছ কেটে জ্বালানি কাজে ব্যবহার করার কারণে এ ঐতিহ্য বিলীন হতে চলেছে। খেজুর গাছকাটা বন্ধে সরকারিভাবে উদ্যোগ না নিলে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হব।

মহম্মদপুর উপজেলায় খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের বন বিভাগ গত কয়েক বছর আগে খেজুর গাছ রোপণের কাজ শুরু করেছিল। উপজেলার ‘জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলে রোপিত হয়েছে খেজুর গাছের হাজার হাজার আঁটি দেশি জাতের সাথে পরীক্ষামূলকভাবে আরব দেশীয় খেজুরের চারাও রোপণ করা হয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানিয়েছেন। তবে ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার সরকারিভাবে নিষিদ্ধ না করলে গাছ রোপণের কোনো উদ্যোগই কাজে আসবে না বলে এ পেশায় জড়িত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দস সোহবান বলেন, খেজুর গাছ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারে সরকারিভাবে বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে। এছাড়া গুড়ের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার নানা উদ্যোগ নেয়া হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গবাদিপশুর লাম্পি স্কীন ডিজিজ রোগ প্রতিরোধে ফ্রি ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প

error: Content is protected !!

মহম্মদপুরে খেজুরের গাছ পরিচর্ষায় ব্যস্ত গাছিরা

আপডেট টাইম : ০২:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০২২
মো. কামরুল হাসান, বিশেষ প্রতিনিধি, মাগুরা :

আবহমান কাল থেকে বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশী। তাই শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে মাগুরার মহম্মদপুর অঞ্চলের গাছিরা খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

খেজুরের রস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গাছ কাটায় পারদর্শীদের স্থানীয় ভাষায় গাছি বলা হয়। এ গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুঁণ হাতে গাছ চাঁচাছোলা ও নলি বসানোর কাজ শুরু করেছেন। তবে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় গাছ কাটা, রস জ্বালানো ও গুড়-পাটালি তৈরির উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার অন্য বছরের তুলনায় গুড়-পাটালির দাম বেশি হবে বলে সংশ্লিষ্ট গাছিরা জানিয়েছেন। তবুও তাদের মুখে ফুটে উঠেছে রসালো হাসি। কারন, এ মৌসুমের উপার্জন দিয়েই সারা বছর চলতে হয় অধিকাংশ গাছিদের।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা বা চাঁচার জন্য গাছিরা দা ও দড়ি তৈরিসহ ভাড় (মাটির ঠিলে) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। চর মুরাইল গ্রামের খেজুর গাছ তোলার গাছি আনজাল হোসেন, রায়পাশা গ্রামের আজিজার এবং জব্বার শেখ, পারলা গ্রামের তোকাব্বের মিয়া ও রহমানসহ একাধিক গাছিরা বলেন, শীত চলে আসছে। এখন খেজুর গাছ তোলার সময়। খেজুর রসের গুড়-পাটালি তৈরি করে মহম্মদপুর বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়। এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। এতে আমরা অনেক লাভবান হয়ে থাকি। কিন্তু ইটভাটায় খেজুর গাছ কেটে জ্বালানি কাজে ব্যবহার করার কারণে এ ঐতিহ্য বিলীন হতে চলেছে। খেজুর গাছকাটা বন্ধে সরকারিভাবে উদ্যোগ না নিলে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হব।

মহম্মদপুর উপজেলায় খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের বন বিভাগ গত কয়েক বছর আগে খেজুর গাছ রোপণের কাজ শুরু করেছিল। উপজেলার ‘জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলে রোপিত হয়েছে খেজুর গাছের হাজার হাজার আঁটি দেশি জাতের সাথে পরীক্ষামূলকভাবে আরব দেশীয় খেজুরের চারাও রোপণ করা হয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানিয়েছেন। তবে ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার সরকারিভাবে নিষিদ্ধ না করলে গাছ রোপণের কোনো উদ্যোগই কাজে আসবে না বলে এ পেশায় জড়িত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দস সোহবান বলেন, খেজুর গাছ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারে সরকারিভাবে বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে। এছাড়া গুড়ের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার নানা উদ্যোগ নেয়া হবে।


প্রিন্ট