ফিরোজ আলমঃ
রাজশাহী জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহনপুর উপজেলা ফুটবল দল। পুঠিয়া উপজেলা ফুটবল দলকে টাইব্রেকারে ০৫-০৪ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে মোহনপুর উপজেলা ফুটবল টিম। নির্ধারিত সময়ের খেলা ০১-০১ গোলে ড্র হলে ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ায়।
সোমবার (২১ জুলাই) রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে জমকালো আয়োজনে ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। খেলার শুরু থেকে উভয় দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা জমে ওঠে। ম্যাচের ১৫তম মিনিটে মোহনপুর টিমের ইসমাইল নামের একজন খেলোয়াড় দুর্দান্ত হেডে দলকে ০১-০ গোলে এগিয়ে দেন। পিছিয়ে পড়ে পুঠিয়া উপজেলা ফুটবল টিম মরিয়া হয়ে ওঠে, কিন্তু বিরতির আগে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়।
বিরতির পর আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে পুঠিয়া টিম। খেলোয়াড়দের “ঊর্ধ্বগামী” জেদে ফলও আসে। দ্বিতীয়ার্ধের ১৫তম মিনিটে প্রণয়ের হেড থেকে পুঠিয়া টিম সমতা ফেরায় (০১-০১)। নির্ধারিত সময়ের বাকী অংশে আর কোনো গোল না হওয়ায় খেলা শেষ হয় ০১-০১ সমতায়। টাইব্রেকারে মোহনপুর উপজেলা ফুটবল দল ০৫-০৪ গোলে পুঠিয়াকে পরাজিত করে।
রানারআপ হলেও ম্যাচে সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন পুঠিয়া উপজেলার প্রণয় মারান্ডি। দুই দলের ফাইনাল ম্যাচটি উপভোগ করেন বিপুল সংখ্যক দর্শক। ম্যাচে কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন সাবেক ফুটবলার মুরাদুজ্জামান এলান।
ম্যাচ শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি আফিয়া আখতার।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলের খেলোয়াড়দের হাতে ট্রফি, প্রাইজমানি এবং একটি করে ফলজ গাছের চারা তুলে দেওয়া হয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিচালক (পরিদর্শক) ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান পিপিএম (বার), রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান এবং পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আয়েশা সিদ্দিকা, মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জোবায়দা সুলতানা, উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) তারিকুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সঈদ আলী রেজাসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, দলীয় নেতৃবৃন্দ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও হাজারো দর্শক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, “ফুটবল খেলাধুলা যুবসমাজকে মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে রাখে। খেলাধুলা শরীর ও মন দুটোই সুস্থ রাখে এবং এটি পরিবারের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে। আজকের খেলায় জয়-পরাজয়ের চেয়েও বড় ছিল মাঠে উপস্থিত শত শত কিশোর-তরুণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অনুপ্রেরণা।”
জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি আফিয়া আখতার বলেন,
“এই জয় শুধু একটি খেলার সাফল্য নয়, বরং মোহনপুর উপজেলার ভবিষ্যত সম্ভাবনাও উন্মোচিত হয়েছে।”
তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন,
“এই বিজয় আগামী দিনে মোহনপুর উপজেলার যুব সমাজসহ অন্যান্য অংশীজনদের অনুপ্রাণিত করবে এবং উপজেলা ক্রীড়াঙ্গনকে দেশের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এই টুর্নামেন্ট শুধু খেলা নয়, এটি আমাদের তরুণ সমাজের মধ্যে শৃঙ্খলা এবং সম্মিলিত কাজের চেতনা গড়ে তুলবে। আমরা ভবিষ্যতেও এই আয়োজন অব্যাহত রাখবো।”
প্রিন্ট