মাগুরা মহম্মদপুরের দীঘা ইউনিয়নের পাল্লা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।গত ২১ অক্টোবর ২২ শুক্রবার বিকালে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় মাগুরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে।দীঘা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি চাকুরী প্রার্থী তামিম ইকবাল অভিযোগ করেন তার সোনিয়া খানমের চাকুরীর জন্য জুন মাসে পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর আমি ঐ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সাবেক দীঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে আমার স্ত্রীরকে ঐ পদে চাকুরী দেওয়ার দাবী করি।অনেক দরকষাকষির পর সাত লক্ষ টাকার চুক্তিতে আমি সভাপতিকে ৫০০০০০ টাকা অগ্রীম দেয়,পরে তিনি জানিয়ে দেন নয় লক্ষ টাকা না দিলে চাকুরী দেওয়া সম্ভব না, তিনি ১১ লক্ষ টাকা পেয়ে ঐ পদে আদুরীকে চাকুরি দেয়,আমি তার কথা মত ২০০০ টাকা করে তিন জনের জন্য পোষ্টাল অর্ডার কিনি।আমি তাকে রোভা ফাউন্ডেশন থেকে ৯০ হাজার, ব্র্যাক থেকে ৬০ হাজার এবং বাকি টাকা আমার শাশুড়ির কাছ থেকে এনে আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে তার বাসায় স্বামী স্ত্রী দু’জন যেয়ে টাকা গুলো তার হাতে দেই।
তিনি আমার স্ত্রীকে চাকুরি দিবে না তাহলে কেন আমাকে দিয়ে লোন করিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা নিলো?আমি এর সঠিক বিচার চাই। অপর এক চাকরি প্রার্থী পাল্লা গ্রামের উজ্জ্বল বিশ্বাসের স্ত্রী বৈশাখী জানায়, লোক নিয়োগের খবর শুনে আমি আমার মামা মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে যায়, তিনি বলেন তুমি আমার ভাগ্নী হও চাকুরিটা অনেকে চাচ্ছে তাদের দিবো না তোমাকেই দিবো, তুমি জামাইকে বাড়ী আসতে বলো তার সাথে কথা বলে সবকিছু ঠিক করবো।আমার স্বামী এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে বাড়ীতে এলে মামার সাথে দেখা করে কয়েকদিন ঘুরানোর পর অনেক শর্তসাপেক্ষে দরকষাকষির শেষে ১১লক্ষ চুক্তি হয় চাকুরির জন্য, তিনি টাকা গুলো হেড মাষ্টার আব্দুল আলীম মোল্যার কছে দিতে বলেন।
হেড স্যার আজকাল করে কয়েকদিন ঘুরিয়ে আমাদের কাছ অগ্রীম দেড় লক্ষ নগদ টাকা নেয়,আর বিভিন্ন সময় তার বাসায় যাওয়ার সময় মাছ,গোস,ফল,মূল মিষ্টি দিয়ে আরো ৫০ হাজার টাকা খরচ করি, আমার স্বামী এদের এই সময় ক্ষেপণের জন্য ৭ জুন তার কর্মস্থল কক্সবাজার কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকুরিতে গেলে তাকে সেখান থেকে বাদ দিয়ে দেয়, আর তাদের সাথে চুক্তিকৃত টাকা জোড়ার করার জন্য আমি জমি বিক্রি করি, আমার কিছু বন্ধকী জমি রাখা ছিলো সেখান থেকে টাকা নিয়ে আসি, আমার দুটি গরু লচে বেচে দেই, সব মিলে এখন আমরা পথে বসে গেছি, তার স্ত্রী আমার সাথে বোন ডাকার পরও আমাকে চাকুরি দিলো না, আমি এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার চাই।
পাল্লা গ্রামের নাঈম বলেন, প্রধান শিক্ষক আলীমের সাথে ১০ লক্ষ টাকার চুক্তি হয়েছিল আমার স্ত্রীর চাকুরির জন্য তিনি পরে টাকা নিবেন বলে বলেছিলো,কিন্তু পরে তিনি আর আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি,অন্য কারও সাথে চুক্তি বদ্ধ হয়েছে জানতে পেরে আমার স্ত্রীকে পরীক্ষা দিতে যেতে দেয়নি আমি।চাকুরি প্রার্থী সোনিয়া জানায়,পরীক্ষার আগেই আদরী ও পপিকে উত্তর সহ প্রশ্ন দিয়ে দেয় তারা,তার পরও তারা পাশ করতে পারেনি তাই ডিজি প্রতিনিধি পরীক্ষার খাতা দেখা শেষে সন্ধ্যায় আমাদের জনালেন এই নিয়োগ পরীক্ষায় কেউ পাশ করতে পরেনি।
প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির সুপারিশ ক্রমে আমরা আদরী ও পপিকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য মনোনীত করলাম সোনিয়া আরো অভিযোগ করেন অফিস সহায়ক পদে সভাপতির আপন ভায়ের ছেলে রাতুলের বউকে চাকুরী দেবে বলে ঐ পদে আমাদের পদের বিজ্ঞপ্তির এক মাস পরে গোপনে বিজ্ঞপ্তি দেয়, এবং ঐ পদের জন্য কাউকে দরখাস্ত করতে দেয়নি।
এবিষয়ে সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সাথে টাকা পয়সার বিষয়ে কারও সাথে কোন কথা হয়নি। ভাতিজার বউয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কেউ যদি দরখাস্ত না করে, তাহলে আমি কি করবো?
এ বিষয়ে ডিজি প্রতিনিধি ও মাগুরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জিয়াউল হাসান বলেন, অফিস সহায়ক পদে তিন জন পরীক্ষার্থী ছিলো তারা সকলেই পাশ করেছে, আর পরিচ্ছন্ন পদে ৫জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪জন পাশ করেছেন, সবাই ফেল করেছে মর্মে কোন ঘোষণা আমি দেয়নি।
|
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আলীম মোল্যার কাছে টাকা নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি রেগে ফোন কেটে দেন, পরে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে মহম্মদপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মালা রানীর সাথে কথা বলার জন্য মোবাইলে অনেক বার ফোন দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনার ব্যবহৃত দুটি নম্বর-ই বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রিন্ট