জেলার বোয়ালমারী উপজেলা রূপাপাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্যার (সোনা মিয়া) বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চেয়ারম্যান বোর্ড অফিসের কার্যক্রম রূপাপাত বাজারে তার নিজ ব্যক্তিগত অফিসে নেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।মেম্বারগণ (ইউপি সদস্য) প্রতিবাদ করায় দুই গ্রুপের পের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর বোর্ড অফিসে রেশন কার্ড অনলাইন করবে বলে মেম্বারদের নিজ নিজ ওয়ার্ড থেকে কার্ডপ্রাপ্তদের আসতে বলেন চেয়ারম্যান। মেম্বরসহ সুবিধাভোগীরা সকাল ৯ টার মধ্যে আসলেও দুপুর পর্যন্ত চেয়ারম্যান ও উদ্দ্যোক্তা না আসায় সকলে ক্ষিপ্ত হন।
স্থানীয় সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গেলে মেম্বার ও জনগণ তার বিরুদ্ধে দূর্ণীতি, অনিয়ম, ক্ষমতার দাপট, অন্যায় ও অত্যাচারের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। এরই মধ্যে একদিন রাতে উদ্দ্যোক্তা রাব্বি ও গুপি রাত ৮টার সময় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তাদের অফিস থেকে কম্পিউটার সহ সকল প্রকার মালামাল বের করে নেওয়ারপ্রস্তুতি নেয়। মেম্বারদের দাবি ওই মালামাল চেয়ারম্যানের নির্দেশে বের করে নেয়া হচ্ছিল। পরে বাধার মুখে ব্যর্থ হয়।
ইউপি মেম্বার শামিমা আক্তার, আইয়ুব আলী মঙ্গল, মুঞ্জুরুল ইসলাম, খুরশিদুল বারি, রফিকুল ইসলাম রানিজ, আওয়াল মোল্যা, ইলিয়াস মোল্যা, সানোয়ার মোল্যা বলেন, পূর্বের রেশন কার্ড বাতিল করে চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকদের রেশন কার্ড দিচ্ছে। জন্ম নিবন্ধনে ইচ্ছা মতে ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ৫০ টাকা, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট নিতে আসলে তার পক্ষের লোকজন না হলে ভোগান্তিতে ফেলে। যারা ভোট দেয় নাই তারা কোন কাজে আসলে কালক্ষেপন করে ঘুরাতে থাকে। সরকারের কোন বরাদ্দ, উন্নয়ন মূলক প্রজেক্ট সকল প্রকার কাজে সদস্যদের সাথে মিটিং না করে তার ইচ্ছামতো কাজ করে নিজেই বিল তোলেন। কোন সমন্বয় মিটিং এর তোয়াক্কা করে না সে। সর্ব প্রকার সুবিধা ভোগী ভাতা কার্ড তার ইচ্ছা মতে করে থাকে।
ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা বলেন, চেয়ারম্যান সময়মতো অফিস করেন না। কোন কাজে আসলে ১ থেকে ৬ মাস লেগে যায়। বিভিন্ন সময় চেয়ারম্যান জনগনের সাথে খারাপ আচরণ, গালিগালাজ ও মারধর করেছে।
সাদিয়া নামের জনৈক বাসিন্দা বলেন, আমার ছেলে স্বপ’র জন্য জন্ম নিবন্ধন করতে গেলে আমার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেয়। ৬ মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো আমাকে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয় নাই।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব বলেন, আমি বদলি হয়ে গেছি। এখন আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারবো না। এ বিষয় ইউনিয়ন রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মিজানুর রহমান মোল্যা (সোনা) বলেন, মেম্বারদের অভিযোগ সত্য নয়। তাদেরকে কোন কাজ দিলে লুটে-পুটে খায়। সঠিক ভাবে জনগন পায়না বলে অভিযোগ পাই। পরে তাদের কাজের সাথে তদারকি করি বলে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওই সকল মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
গোপনে কম্পিউটার নিয়ে যাওয়ার নির্দেশের অভিযোগের বিষয় কথা বললে তিনি বলেন, তাদের ব্যক্তিগত কম্পিউটার তারা নিতেই পারে। সরকারি কোন কম্পিউটার বা মালামাল তারা নিতে যায় নাই।
উপজেলা চেয়াম্যান এম.এম মোশারেফ হোসেন (মুশা মিয়া) বলেন, এটা চেয়ারম্যান মেম্বারদের বিষয়, না জেনে শুনে আমার কোন মতামত নেই।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন বলেন, আমি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ জাতীয় কোন অভিযোগ এখনও পাইনি।
প্রিন্ট