ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে লোকালয়ে প্লাস্টিক কারখানার বর্জ্য ও মেশিনের উচ্চ শব্দে দূষিত হয়ে পড়ছে আশ পাশের ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শেখর ইউনিয়নের সহ¯্রাইল বাজারের পূর্ব দিকে মাঝকান্দি ভাটিয়াপাড়া মহাসড়কের পাশের্^ অনুমোদনহীন প্লাস্টিক কারখানা গড়ে উঠেছে। এতে করে যেমন পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, তেমই ক্ষতির মুখে পড়ছে মানুষের বসবাসের স্থান।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন স্থান থেকে প্লাস্টিকের নষ্ট ও ভাঙ্গাচোরা আসবাবপত্র, প্লাস্টিকের বোতল, লোহা, পুরাতন বই, ইত্যাদি ভাঙ্গাড়ি মালামাল ক্রয় করে কারখানায় স্তুপ করে রেখেছে। এর ভেতর প্লাস্টিকের বোতল মেশিনে দিয়ে কেটে কাঁচা মাল তৈরী করেন। সেই মেশিনের উচ্চ শব্দে কারখানার আশ পাশের লোকজন ঘরে বসবাস করতে পারছেনা।
অন্যান্য প্লাস্টিক পুড়ানোর সময় তার গন্ধে ও কালো ধোঁয়ায় এলাকার চার পাশ অন্ধকার হয়ে যায়। এতে করে স্থানীয় লোকজনের শ্বাসকষ্টের সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসি।
প্লাস্টিক কারখানার পাশের বাসিন্দা মো. মোফাজ্জেল হোসেন চুন্নু মুন্সি (৭৫) অভিযোগ করে বলেন, প্লাস্টিক কারখানার উচ্চ শব্দ, এবং এর দূর্গন্ধে বাড়ি ঘরে বসবাস করা যায় না।
এ কারখানা হওয়ার আগে মনে করেছিলাম এখানে শুধু ভাঙ্গারি মালামাল ক্রয় বিক্রয় করা হবে। তবে তিন মাস হয়েছে বোতল কাটা মেশিন চালু করায় কানস্তব্ধ হয়ে যায়। মাথা ঘুরে প্রাণ অস্থির হয়।
তিনি আরও বলেন, শেষ বয়সে কি এ যন্ত্রণা সহ্য করা যায়? এর থেকে আমরা প্রতিকার চাই। অনতিবিলম্বে এই অবৈধ প্লাস্টিক কারখানা বন্ধ করে এলাকার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে বলে সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাই।
সহস্রারাইল পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. আজিজুর রহমান আজগর বলেন, ছয় মাস হয়েছে এ প্লাস্টিক কারখানা নির্মাণ করেছে, তবে মিল চালু করেছে তিন মাস হয়েছে। এর মধ্যে তারা কারখানার মেশিন ২৪ ঘন্টায় চালু থাকে। মেশিনের উচ্চ শব্দের কারণে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়া লেখা করতে প্রচন্ড ব্যাঘাত ঘটে। এ কারখানা এভাবে চলতে থাকলে এলাকার মানুষ অচিরেই বধীর হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কারখানার ভেতরের চিত্র দেখলে চোখ কপালে উঠে যায়। বিভিন প্রকার ভাঙ্গাড়ির মালামাল ময়লার স্তুপ পড়ে রয়েছে। তার ভেতরে মশা, মাছি ও বিভিন্ন প্রকার জীবাণু উৎপাদন হয়ে পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছে।
এসময় প্লাস্টিক কারখানার মালিক মো. সোহেল রানা তার কারখানার কোন বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে পারেননি। তবে তিনি বলেছেন আমি পরে আপনাদের কাগজ পত্র দেখাবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোশারেফ হোসেন বলেন, মফস্বল এলাকায় প্লাস্টিক কারখানা করা আইনগত নিষেধ আছে। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে পরিবেশের ক্ষতি হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রিন্ট