মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাড়ীখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ নিয়ে চাকরি করা এবং সরকারি বিশেষ জাতীয় প্রোগ্রাম গুলো দায়িত্বর সাথে পালন করেন না এবিষয়ে কথা উঠেছে।
বুধবার ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টার সময় সরেজমিনে বর্তমান সভাপতি সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ রাড়ীখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত ২ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে স্কুলে অবৈধপন্থায় নিয়োগ নেয়।
এই অবৈধভাবে চালাকি পন্থায় নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্বে ছিলেন, মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের দীঘা ইন্তাজ মোল্যা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউনুস আলী।
এই ইউনুস আলীর কুচক্রী সহায়তায় আবুল কালাম আজাদকে সরকারি বিধিমোতাবেক নিয়ম নীতিকে উপেক্ষা করে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল প্রকাশ্যেই সব শিক্ষক ও সাংবাদিকদের সামনে সভাপতি আব্দুস সালাম দীঘা ইন্তাজ আলী মোল্যা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলীকে হুশিয়ার করেন।
ইউনুস আলী এবিষয়ে কথা শুনলেও সে কথায় কর্ণপাত না করে দ্রুত প্রধান শিক্ষকের অফিস রুম থেকে প্রস্থান করেন। মাগুরা জেলার শিক্ষা অফিসারের স্মারক নং- ৩৭.০২৫৫০০.০০১.১৩.২৯৪.২০-১৫৭ তাং- ১৬/০৩/২০২০ ইং তারিখের এর আলোকে তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হইতে হলে প্রথম এমপিও হইতে সর্বনিম্ন ১২ বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।
সেখানে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের অভিজ্ঞতা ছিলো মাত্র ৯ বছর ৭ মাস, যেখানে ১২ বছর পরিপূর্ণ হতে ২ বছর ৫ মাস কম। এখানেই প্রশ্ন কিভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী নিয়ম ছাড়া অনিয়ম মাফিক প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হলো। ২৯/০৮/২০২২ সালের একটা আবেদন পত্রে দেখা যায়, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিবাহী আদেশ মোতাবেক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহম্মদপুর মাগুরা।
মহম্মদপুর উপজেলার সকল প্রতিষ্ঠানে শোক দিবসের অনুষ্ঠান পালন করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ সেই নির্দেশ উপেক্ষা করিয়া শোক দিবসে রাড়ীখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কোন কর্মসূচি পালন না করিয়া চাকুরী বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। সভাপতির ম্যানেজিং কমিটি স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিকাশ বার বার মৌখিক নির্দেশ দেওয়ার শর্ত্বেও প্রধান শিক্ষক কোন কিছু উপস্থাপন করেন নাই। স্মারক নং- রাড়ী ৫/২০২২, এ বিষয়ে সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, ৩ দিবসের মধ্যে প্রধান শিক্ষককে লিখিতভাবে ম্যানেজিং কমিটির কাছে আবেদন করতে বলা হয়।
কিন্তু সেটাও সে তোয়াক্কা করে, এজন্য তার চেয়ার সাময়িকভাবে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বন্ধ করেছে। সভাপতি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রায় ১০ বছর ধরে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত আছে। প্রধান শিক্ষককে নিয়ে তার এই অপকর্মের চিত্র এসেছে জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়।
এই পত্রিকা গুলোর নাম হলো- জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ বার্তা, দৈনিক খবর বাংলাদেশ, দৈনিক নবচেতনা, দৈনিক ভোরের দর্পন, দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক নয়াদিগন্ত, দৈনিক সারা দেশ, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা দৈনিক খেদমত, দৈনিক প্রবাহ, দৈনিক মাগুরা। এ বিষয়ে রাড়ীখাড়ী স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আনিত অপকর্মের চিত্র সাংবাদিকের কাছে বলেন এগুলো মিথ্যা কথা, আমাকে শুধু শুধু বরখাস্ত করেছে।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, আজকে সকাল বেলা এসেই সে আমাকে কাচের পেপার ওয়েট দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য মারতে গিয়ে ছিলো, আমি অল্পের জন্য আজ এই জালিম শিক্ষকের হাত থেকে মহান আল্লাহপাক রক্ষা করেছেন। আমি এই জালিম প্রধান শিক্ষকের অপকর্মের ও তার জালিয়াতি নিয়োগসহ সমস্ত কিছুই, প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় বিচার দাবি করছি এবং বাংলাদেশ দূর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রধান শিক্ষকের পজিটিভ কথা বলার জন্য শিখিয়ে দিচ্ছে। এ বিষয়ে মাগুরা জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের একটা চৌকস টিম বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে আসেন।
প্রিন্ট