বাড়িতে বাবার লাশ, আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে চারপাশ। এমন পরিস্থিতিতে চোখের পানি চোখে রেখেই হাতে প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যায় শেখ সোহেল রানা (১৬)।
সোহেল রানা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার জুঙ্গুরদি গ্রামের মজিবর শেখের (৪৬) ছেলে । সে নগরকান্দা সরকারি মহেন্দ্র নারায়ণ একাডেমি থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে সোহেল রানার বাবা মজিবর শেখ (৪০) মারা যান।
সকালে সোহেল রানার কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা ছিল। তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে সকালেই রানার কয়েকজন সহপাঠী তার বাড়িতে যান। রানার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সহপাঠীরা সান্ত্বনা দিয়ে রানাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যান।
নগরকান্দার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আক্রামুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে রানা কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা দেয়।
পরিক্ষা কেন্দ্র সচিব মাহবুব আলী মিঞা জানান, যথাসময়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে রানা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বাবা মারা যাওয়ায় সে অনেকটা ভেঙে পড়েছিল। পরীক্ষা চলাকালে আমরা সার্বক্ষণিক তার খোঁজখবর নিয়েছি।
সরকারি এম এন একাডেমির প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, সকালেই রানার বাবার মৃত্যুর খবর শুনেছি। এটি খুবই কষ্টদায়ক। আমরা সকালেই রানার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং তার মনমানসিকতা ভালো রাখতে ও ভালোভাবে পরিক্ষা সম্পুর্ন করতে আমরা রানার সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছি।
রানার নিকট আত্মীয় মিজানুর রহমান বলেন, সকালেই রানার সহপাঠীরা বাড়িতে আসে এবং তাকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে আমরা পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। রানার বাবা পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিলেন। হটাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার ভোর রাতে তিনি মারা যান। দুই ভাইয়ের মধ্যে রানা সবার ছোট। বড় ভাই হৃদয় শেখ বেকার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতার মৃত্যুতে দিশেহারা তার পরিবার।
বিকালে আসর নামাজের পর জুঙ্গুরদী ঈদগা মাঠে জানাজা শেষে জুঙ্গরদী কবর স্থানে দাফন সম্পন্ন করা হবে।
প্রিন্ট