ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর পদ্মা নদী থেকে উদ্ধারকৃত ভাসমান মরদেহ (মিনারুল হত্যা) মামলার মূল আসামি তুফান (২০) কে শনিবার (১৩ আগষ্ট) বেলা ৩টার সময় নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তুফান ভেড়ামারা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর এলাকার আব্দুল মালিথার পূত্র।
উল্লেখ্য গত ৫ আগষ্ট সকাল ১১টার সময় ভেড়ামারা থানা পুলিশ গোলাপনগর মনি পার্কের উত্তর পাশে পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় মুখ ও পা বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে।
ঐদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন পাকশী লক্ষীকুন্ডা থেকে নৌ-পুলিশ। তারা লাশটি উদ্ধার করে তাদের হেফাজতেই নেয়। নিহতর ফিঙ্গার প্রিন্ট এর সাথে জাতীয় পত্র পরীক্ষা ও ম্যাচিং করে পরিচয় সনাক্ত হয়েছে। অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তিটির নাম মিনারুল ইসলাম, পিতার নাম আইয়ুব আলী, গ্রাম নীলগঞ্জ তাঁতী পাড়া উপজেলা ও জেলা যশোর।
আজ শনিবার বেলা ০৩.০০ টার সময় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম পুলিশ লাইনে আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে উদ্ধারকৃত মিনারুল হত্যার সাথে জড়িত আসামী তুফান (২০) ।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খাইরুল আলম আরো জানান যে, পিক আপ ভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে যশোরের মিনারুল ইসলামকে কৌশলে ভেড়ামারায় এনে তার গলায় গামছা পেচিয়ে তাকে হত্যা করেছে আসামীরা। হত্যা করার পর তার লাশ গোপন করার উদ্দেশ্যে নদীতে ফেলে রেখে আসে আসামীরা। এই লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মজিবুর রহমান জানান ভিকটিম মিনারুল ইসলাম (৪৩) যশোর কোতয়ালী থানা পেশায় একজন পিক আপ ভ্যান চালক। তার নিজ নামীয় পিক আপ রেজিঃ নং-ঢাকা মেট্রো ন-১৮-১১৮৫ ।
গত ১০/০৮/২০২২ তারিখ সকাল ১১.০০ টায় আসামী মোঃ তুফান হোসেন ও সঙ্গীয় একজন আসামী ভেড়ামারা থেকে ট্রেনযোগে যশোর যায়। সেখানে পার্টস কেনার জন্য ঘোরাঘুরি করে। এক পর্যায়ে ভিকটিমের পিকআপটি ভাড়া নেয় তারা। তারা বলে তাদের একটি ট্রাকের ইঞ্জিন আছে। ১০/০৮/২২ তারিখ সন্ধ্যায় ভেড়ামারা উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রাত ১২ টার আগেই জুনিয়াদহ ইউনিয়নের মওলাহাবাসপুরে পৌছায়। সেখানে পূর্ব থেকে অপেক্ষমান থাকা অপর এক আসামীসহ তিনজন ভিকটিমের গলায় গামছা পেচিয়ে এবং মুখে স্কচটেপ পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
অতঃপর পিকআপটিতে ভিকটিমের লাশ নিয়ে ১১/০৮/২২ তারিখ রাত ০১ টার সময় ভেড়ামারা থানাধীন গোলাপনগরস্থ মনি পার্কের পার্শ্বে শ্মশান ঘাট সংলগ্ন পদ্মা নদীর কিনারে পানিতে লাশ ফেলে পিকআপটি নিয়ে চলে যায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে এই তথ্য স্বীকার করে। ধৃত তুফানকে নৌ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পদ্মা নদীতে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার
উল্লেখ্য, এমাসের ১১ তারিখ উপরোল্লিখিত স্থান থেকে এলাকাবাসীর প্রদত্ত তথ্য মোতাবেক অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশ হিসেবে মিনারুলের লাশটি উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
প্রিন্ট