নওগাঁর আত্রাইয়ে মিষ্টি আলু চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। দাম কম হওয়ায় এ ফসলের চাষ করা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন কৃষকরা। তবে এখন ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা আবার মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। কয়েক বছর ধরে মিষ্টি আলুর ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।এখন মৌসুমি সময়ে বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০/২৫ টাকায়।
মৌসম ছাড়া মিষ্টি আলু ৩৫/- টাকা থেকে ৪০/- টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়। ফলে পুনরায় কৃষকরা মিষ্টি আলুর চাষ শুরু করেছেন।আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীবিধৌত আত্রাইয়ের মাটি বেলে দোআঁশ হওয়ায় এখানে আগে থেকেই মিষ্টি আলুর ভালো ফলন হয়।
নব্বইয়ের দশকের দিকে মিষ্টি আলুর কেজি ছিল ২/৩ টাকা। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সবকিছুর দাম বাড়লেও মিষ্টি আলুর দাম তুলনা মুলকভাবে বাড়েনি। তাই কৃষকেরা মিষ্টি আলু চাষ থেকে প্রায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। চরের পতিত জমিগুলোতে কৃষকেরা মিষ্টি আলু চাষ করেন। এটি চাষে জমিতে বাড়তি কোন সার পাঁউস দিতে হয় না।
শুধু কৃষকেরা জমিতে তিন চারটি চাষ দিয়ে মাটি ঝড়ঝড়ে করে কার্তিক ও অগ্রহায়ন মাসে মিষ্টি আলুর কান্ড রোপণ করেন এবং জৌষ্ঠ থেকে আষার মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আলু উত্তোলন করেন। এ ক্ষেত্রে বলা যায়, কোন পরিচর্যা ছাড়াই কৃষকরা এর ফলন পান।
আত্রাই উপজেলার ৭নং কালিকাপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মিষ্টি আলু চাষি আফতাব আলী জানান , এ বছর আমি এক বিঘা জমিতে মিষ্টি আলু লাগিয়েছি। সবটুকু জমির মিষ্টি আলু উত্তোলন করে আমি ৬৫ মন মিষ্টি আলু পেয়েছি। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় আমি খুশি।
আরও পড়ুনঃ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে
৮নং হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের মিষ্টি আলু চাষি ছমির উদ্দিন বলেন, চাষ দিয়ে জমিতে কান্ড রোপণ করার পর আর কোন পরিচর্যা করতে হয়না। কয়েক মাস পর শুধু জমি থেকে মিষ্টি আলু উত্তোলন করতে হয়। তিনি এ বছর ২৫ শতাংশ জমি থেকে ৩৫ মন মিষ্টি আলু পেয়েছেন।
আত্রাই উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে , চলতি বছরে মিষ্টি আলু চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হেঃ জমিতে। অর্জিত হয়েছে ৩০ হেক্টও জমিতে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিধ কে এম কাওছার বলেন, মিষ্টি আলু একটি ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার। এটি আমাদের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় এবং অন্য ফসলের তুলনায় এ ফসলে ভালো লাভের কারনে আত্রাইয়ের কৃষকেরা এখন মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকেছেন।
প্রিন্ট