মাগুরা সদর থানার বড়শোলই কলইডাঙ্গা গ্রামের আদমব্যাপারী মো. কাসেম মোল্লা যেন একটি মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে এক অসহায় ভুক্তভুগি পরিবারের উপর। তার অত্যাচারে গত এক সপ্তাহ যাবৎ পুরুষ শূন্য একই গ্রামের মো. শাহিনুর ইসলামের পরিবার। পরিবারের অভিযোগ গত ৩ বছর পূর্বে শাহিনুর মোল্লার ছেলে প্রবাসী শোভন মোল্লা (২৪) মালয়শিয়াতে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে, পরিবারটি তাদের একমাত্র ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আদম বেপারী মো. কাসেম মোল্লার সাথে যোগাযোগ করলে সে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দাবি করে।
এরপর কলইডাঙ্গা গ্রামের ৩ জন মাতব্বর নায়েব, মোতালেব ও হারুন এর মাধ্যমে তাদের হাতে মো. শাহিনুর ইসলাম ফসলের জমি বন্দুক রেখে উক্ত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করে, কিন্তু গত আড়াই বছরেও আদমব্যাপারী মো. কাসেম মোল্লা অসুস্থ প্রবাসী শোভন মোল্লাকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম না হওয়াই, মো. শাহিনুর ইসলাম বার বার তাগাদা দিলে কাসেম মোল্লা বিভিন্ন টালবাহানা ও প্রতারণা শুরু করে।
অতঃপর কোনো উপায়ন্তর না দেখে মো. শাহিনুর ইসলাম তার একমাত্র অবলম্বন বাজারের দোকান বন্দুক রেখে অন্য একজনকে ধরে ছেলেকে মালয়েশিয়া থেকে ফিরিয়ে আনে। হতোদরিদ্র পরিবারটি কাশেম মোল্লার কাছ থেকে উক্ত টাকা ফেরত চাইতে গেলে সে মারমুখী হয়ে উঠে ও নানা এধরণের হুমকি ধামকি প্রদান করে। পরবর্তীতে এব্যাপারে মাগুরার সদরের কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু শিকদারের কাছে আপোষ মীমাংসার আবেদন করা হয়।
কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু শিকদার জানান কাশেম মোল্লা টাকা তসরূপের ঘটনাটি শিকার করেছেন। গত ঈদুল ফিতরের পরে টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও এখন সে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করছেন ও হঠাৎ আঙ্গুলফুলে কলাগাছ হওয়া আদম বেপারী কাশেম মোল্লা গ্রামে প্রভাবশালী হওয়ায়, এলাকার মোড়ল মাতববরদের নিয়ে অসহায় পরিবারের উপর নানাভাবে অত্যাচার ও হয়রানি করছে।
মো. শাহিনুর ইসলামের স্ত্রী জাহানার খাতুন জানান, গত ৮ জুন বুধবার কাশেম মোল্লা নিজে দলবল এনে আমাদের ঘরে তালা বন্ধ করে দিয়ে যায়। এরপর মহিলাদের উপর চড়াও হয় ও আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং আমরা টানা ৭ দিন অনাহার ও অর্ধাহারে ছিলাম। এমন কি আমার নবম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়ে রানু (১৫) কে পার্শবর্তী মাদ্রাসায় যেতে বাধা প্রদান করিতেছে। আদম বেপারী ও প্রতারক মো. কাসেম মোল্লা, মো. শাহিনুর ইসলামের বাড়িতে পুরুষ লোক থাকলে তাদেরকে পা ভেঙে দেওয়া হবে বলে ভয় ভীতি প্রদর্শন করায় এখন পরিবারটি মূলত পুরুষ শূন্য ও কোনো উপার্জন না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।
অসহায় দরিদ্র পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ জুন শুক্রবার মাগুরা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মাগুরা সদর থানার ওসি নাসিরুদ্দিন জানান, অভিযোগটি আমার কাছে আসা মাত্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে আদমব্যাপারী কাশেম মোল্লার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন তথ্য দেননি।
প্রিন্ট