মাগুরা সদর উপজেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজারে গত সোমবার ২৩ মে বিকাল অনুমান ৫ টার সময় দুই গরু ব্যবসায়ী তৌহিদ ও সাইদ এর মধ্যে মারামারি সংঘটিত হয়। এই মারামারির আসল পূর্বের ঘটনার রহস্য বাঙ্গাবেরইল গ্রামের তৌহিদুজ্জামান (২৩) বলেন, এ বছর ২০২২ সালে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ হতে অর্নাস পাশ করেছি।
গত সোমবার মালঞ্চি গ্রামের গরু ব্যবসায়ী সাইদুল মিয়ার কাছে থেকে একটা গরু ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করে কিছু টাকা বায়না দেয়, এরপর সাইদুল মিয়ার সহায়তায় তৌহিদ গরুটি তার বোনজামাই বাড়ি দিয়ে আসে। এরপর তৌহিদ বাড়ি ফেরার পথে তার মোটরসাইকেল টি আবু সাইদের দোকানের সামনে আসার সাথে সাথেই গরু ব্যবসায়ী আবু সাইদ মোল্লা অনুমান ১১-১২.৩০ টার সময় এলোপাতাড়ি গালে চড় থাপ্পড় মারে তৌহিদ কে আর বাপ-মা তুলে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। তখন তৌহিদ আবু সাইদের দোকানে বসে পড়ে মারের তীব্র ব্যথায় দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরে, তখন সে আবু সাইদ মোল্লাকে বলে আপনি আমার বাপ বয়সী লোক আপনি আমার কাছে গরুর ক্রয় করা বিষয়ে শুনতেন, আমি না হয় আমার গরু আপনাকে দিয়ে দিতাম। কিন্তু সাইদ মোল্লা সেই কথা না শুনে তৌহিদের বাপ-মা তুলে গালাগালি দেয়।
চড় মারার এ সময় ঘটনা স্থানে উপস্থিত ছিলো বেরইল গ্রামের জাহিং গরু ব্যাপারী, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের গাড়িওয়ালা আজম, মোজাফফর ব্যাপারী, তেঘরিয়া গ্রামের মনিরুদ্দি। ঘটনার এ বিষয় সম্পর্কে ব্যাঙ্গাবেরইল গ্রামের রাশেদ বিশ্বাস (৫৬) বলেন, বিষয়টি আমি সমাধানের জন্য সাবেক মেম্বার নান্নু মৃধার কাছে মালঞ্চি গ্রামে গিয়ে ছিলাম। কিন্তু আবু সাইদ মোল্লা আমাকে মামলার ৪ নং আসামি করেছি, আমি তো তখন বিকালের মারামারির সময় নান্নু মৃধার সাথে। মারামারির এ বিষয় সম্পর্কে তৌহিদুজ্জামান পিং- আক্তার হোসেন অশ্রুসিক্ত নয়নে ক্রন্দনরত অবস্থায় বলেন, আমাকে বিনা কারণে, বিনা দোষে, বিনা অপরাধে আবু সাইদ মোল্লা তার নিজ বাড়ির দোকানের সামনে থেকে মানুষের সামনে এলোপাতাড়ি গালে চড় মারে।
এই চড় মারার জন্য আমি নিজেকে মানসিক ভাবে সামলাতে পারছিলাম না, কারণ আমার তো মান-সম্মান সবই জনসম্মুখে শেষ হয়ে গেলো। তাই তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার মোটরসাইকেলে বিকাল অনুমান ৫ টার সময় ২ চাচাতো ভাই সহ আমি আবু সাইদ মোল্লার দোকানে প্রবেশ করি এবং আমাকে সকাল বেলার চড় মারার জন্য তার দিকে ছুটে যেতেই সে ভয়ে দৌড় দেয়। এই দৌড়ানোর সময় টেবিলে আঘাত লেগে সে নিজেই পড়ে গিয়ে মনে হয় মাথা কাটে।
আর তখন তার নিজের শরীরের আঘাতে তাকের টিভি পড়ে ভেঙ্গে যায়। মামলার বিষয়ে ৬ লাখ টাকার ছিনতাই সম্পর্কে তৌহিদুজ্জামান বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য ও কথা। তারা মামলার নতিতে তথ্য দিয়েছে আমরা ঘটনার সময় ১০ জন ছিলাম, আসলে এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন, আসল ঘটনা হলো প্রথমে আমিসহ ৩ জন যায়, বড় দূর্ঘটনা যাতে না হয় তার জন্য এরপর আমাদের কে ফিরিয়ে আনতে পরে ৬/৭ আমার নিকটতম ঘনিষ্ঠজন গিয়ে ছিলো।
এ বিষয় সম্পর্কে আবু সাইদ মোল্লা জানান, সংঘবদ্ধ ১০ জন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হঠাৎ করে আমার দোকানে এসে হামলা করে আমাকে মেরে রক্তাত্ব করে দোকানের কাশ বাক্স থেকে নগদ প্রায় ৬ লাখ টাকা নিয়ে গেছে এবং সেই সাথে দোকানের মালামাল ও টিভি ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। ৬ লাখ টাকা ছিনাতাই হয়েছে এ বিষয়ে তৌহিদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি এ রকম আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি এবং ঘটনা জটিল পর্যায়ে গেলে আমিও আইনের সাহায্য ও সহযোগিতা নিবো। তিনি আরও বলেন, আবু সাইদ মোল্লার এলোপাতাড়ি গালের চড়ে তার দুই কানের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেছে, এখন ভালো করে শ্রবণ শুনতে সমস্যা ও বিশাল ব্যথা হয়েছে।
প্রিন্ট