ফরিদপুরের নগরকান্দায় প্রজেক্টের নিকট জমি বিক্রি করতে অস্বীকার করায় জমির মালিকদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, চুরি সহ বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের ভোজেরডাঙ্গী গ্রামবাসি ওশান এগ্রো প্র্রজেক্টের মালিকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, পাশ্ববর্তী চরভদ্রাসন উপজেলার খবিরউদ্দিন নামে এক লোক নগরকান্দা উপজেলার ভোজেরডাঙ্গী গ্রামে ৭ একর জমি ক্রয় করেন। ২০১৫ সালে উক্ত জমির উপর গড়ে তোলেন ওশান এগ্রো প্রজেক্ট নামে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান।
চলতি বছরের শুরুতেই মালিকের নজর পড়ে পাশ্ববর্তী জমির উপর। জমি কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয় জমি মালিকদের। তারা জমি বিক্রি করতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে শুরু করে উক্ত জমির মালিকদের উপর বিভিন্ন নির্যাতন। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকার নিরিহ মানুষদেরকে হয়রানি করছেন। আর এই মামলা গুলোর বাদি হচ্ছেন ওশান এগ্রো প্রজেক্টের ম্যানেজার শারমিন আক্তার খুকু। চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন সহ চারটি মামলা দায়ের করে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। এ মামলা থেকে রেহায় পায়নি মহিলারাও।
সরেজমিনে ওশান এগ্রো প্রজেক্টে গিয়ে দেখাগেছে, সেখানে পুকুরে পাঙ্গাস মাছের চাষ করা হয়েছে। কথা হয় প্রজেক্টের ম্যানেজার শারমিন আক্তার খুকুর সাথে। তিনি জানান, প্রজেক্টের মালিক এলাকার কয়েকজনের নামে একটি চাঁদাবাজির মামলা করে। যা পরবর্তীতে উভয় পক্ষের মধ্যে মিমাংসা হয়ে গেছে। এরপর গত ১০ জানুয়ারী প্রায় ২০/২৫ জন লোক প্রজেক্টে প্রবেশ করে আমার নিকট চাঁদা দাবী করে। আমি রাজী না হওয়ায় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এক পর্যায়ে আমার গায়ে হাত দেয়। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করি। এছাড়াও এখান থেকে অনেক কিছু চুরি হয়েছে সে ব্যাপারে মামলা করেছি।
ভুক্তভোগি শাজাহান মাতুব্বর বলেন, ঐ প্রজেক্টের পাশে আমার জমি রয়েছে। ঐ জমি প্রজেক্টের মালিক কিনতে চায়। আমি বিক্রি করতে রাজি হয়নি। তাই তো আমার নামে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
আরও পড়ুনঃ নগরকান্দায় নতুন ঠিকানায় যাচ্ছে আরো ১১০ টি ভূমিহীন পরিবার
আরেক ভূক্তভোগি শামচু মাতুব্বর বলেন, এই প্রজেক্টে চারপাশে জনবসতি এলাকা। এর ভিতর পাঙ্গাশ মাছের চাষ করেছে। পচা দূগন্ধে আশেপাশে আমাদের বসত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমাদের ছেলে মেয়েদেও শরীরে বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।
ভূক্তভোগি হাবিবুর রহমান বলেন, আমি ব্যবসা বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকি। প্রকল্পের আশপাশে আমার কোন জমিজমা নেই। এলাকার কয়েকজন লোক আমার নিকট এসে অভিযোগ করে আমরা জমি লিখে না দেওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। তাই আমি ম্যানেজারকে এই কথা জিজ্ঞাসা করেছিলাম আসল ঘটনা কি? এর কয়েকদিন পর জানতে পারলাম আমার নামে একটি চুরির মামলা দিয়েছে।
ওশান এগ্রো প্রজেক্টের ব্যাবস্থাপণা পরিচালক খবিরউদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঐখানে আমার আর কোন জায়গা লাগবে না। ওনাদের অভিযোগ মিথ্যা। এ সমস্ত লোকেরা আমার প্রজেক্টে অনেক ক্ষতি করতেছে। আমার নিকট কয়েক দফায় চাঁদা দাবি করেছে। আমার সামনে আমার ম্যানেজারকে মারপিট করেছে। আমি মামলা করেছি।
থানা অফিসার ইনচার্জ হাবিল হোসেন বলেন, প্রজেক্টের ম্যানেজার বাদি হয়ে কয়েকজনের নামে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
প্রিন্ট