ঢাকা , শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo দৌলতপুর গাছে ঝুলছিল বাকপ্রতিবন্ধী নারীর বিবস্ত্র মরদেহ Logo বালিয়াকান্দিতে মনি মুকুর কিন্ডার গার্টেনের দুই দিনব্যাপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা সম্পন্ন Logo বোয়ালমারীতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত Logo দৌলতপুর সীমান্তে বিএসএফের হাতে ৭ বাংলাদেশী আটক Logo ফরিদপুরে ৩১ দফার সমর্থনে বিএনপির আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল Logo শিবগঞ্জ সীমান্তে বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা করল বিএসএফ Logo রতনদিয়া ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী সম্মেলন সিরাজুল সভাপতিঃ আক্তার সাধারন সম্পদক Logo রায়পুরায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, গুলিতে নারী নিহত Logo ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নির্দেশে লিফলেট বিতরণের অভিযোগে জেলা যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার Logo ফরিদপুর-৪ আসনের বিভিন্ন মাদরাসায় মাওলানা মিজান মোল্লার অনুদান প্রদান
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ লোপাটের অভিযোগ 

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ ২ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা নয়-ছয় ও লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৫০টি স্টল থাকার কথা থাকলেও ২৯ টি স্টল এবং দায়সারা একটি ছোট স্টেজে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। অধিকাংশ আগত অতিথিদের দুপুরের খাবার না পেয়ে অভূক্ত অবস্থায় ফিরে যেতে দেখা গেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলে প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে অনেক কম চেয়ার থাকায় গণমাধ্যমকর্মীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ পুরো অনুষ্ঠানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনের সামান্য অংশে মাথার উপর শামিয়ানা থাকায় তীব্র রোদে  অনুষ্ঠানস্থলে আসা লোকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এছাড়া অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বর এবং পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. মোরশেদুর রহিমকে অন্যান্যদের সাথে ফুলের তোড়া দেয়া হয়নি। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এমনই নানান বিশৃঙ্খলার মধ্যে এবার প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রসঙ্গতঃ গতবারও নানান বিশৃঙ্খলা এবং চরম অব্যবস্থাপনায় বর্তমান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী স্থানীয় হেলিপ্যাড চত্বরে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ভেটিরিনারি হাসপাতালের বাস্তবায়নে এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) সহযোগিতায় এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এম. মোশাররফ হোসেন (মুশা মিয়া) এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা ও পরমেশ্বরদী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মাতুব্বর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র সরকার, কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড়, প্যানেল মেয়র মোমিন খান, পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. মেরশেদুর রহিম প্রমুখ।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. আব্দুল আলীমের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. সেলিম হোসেন। পরে অংশগ্রহণকারী স্টলের মধ্য থেকে চারটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী বারো জনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রথম পুরস্কার হিসেবে তিন হাজার, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে দুই হাজার এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে এক হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়।
জানা যায়, প্রদর্শনী অনুষ্ঠানটি সকাল সাড়ে ৯টার সময় উদ্বোধনের কথা থাকলেও বেলা ১২টার সময় উদ্বোধন করায় অনুষ্ঠানে আগতদের তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে খাতওয়ারি দিকনির্দেশনা দিয়ে সরকারিভাবে বরাদ্দ ছিল দুই লক্ষ ৪৯ বাজার টাকা। ভ্যাট বাবদ ত্রিশ হাজার টাকা বাদ দিলে দুই লক্ষ ঊনিশ হাজার টাকা খরচ করার এখতিয়ার ছিল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার।
খাতওয়ারি নির্দেশনার মধ্যে ছিল প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে ৫০টি স্টল বাবদ বরাদ্দ ব্যয় ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ন চন্দ্র সরকার অর্থ লোপাট করতে নির্ধারিত ৫০টি স্টলের স্থলে ২৯টি স্টল দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। হেলিপ্যাডে পর্যাপ্ত স্থান থাকলেও কমসংখ্যক স্টল করা হয়। ফলে ২৯টি স্টলে ৫৬ জন খামারী গাদাগাদি করে তাদের গরু, ছাগল প্রদর্শন করেন। এছাড়া একটি ছোট স্টেজ করে দায়সারাভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।
উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের রেনিনগর গ্রামের ছাগলের খামার মালিক মো. আবীর হোসেন প্রদর্শনীতে চারটি ছাগলের বাচ্চাসহ উৎকৃষ্ট মানের একটি ছাগল এনে স্টলের শোভাবর্ধন করলেও ছাগল আনা-নেওয়া বাবদ কোন খরচ দেওয়া হয়নি বলে সাংবাদিকদের জানান। সদর ইউনিয়নের চালিনগর গ্রামের বিল্লাল শেখ বলেন, প্রদর্শনীর আগে গরু আনা-নেওয়ার জন্য খরচ দিতে চেয়েছিল, কিন্তু পরে কোন খরচ পাইনি।
অনুষ্ঠান শেষে স্টল মালিকদের এক প্যাকেট করে খাবার দিলেও অধিকাংশ আগত অতিথিদের অভূক্ত অবস্থায় ফেরত যেতে দেখা গেছে।
জানা যায়, দুপুরের খাবারের জন্য স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে ৩৫ হাজার টাকায় ২৫০ প্যাকেট বিরিয়ানি ক্রয় করা হয়। এছাড়া আমন্ত্রিত ৩৫/৪০ জন অতিথিদের জন্য বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। খাবার বাবদ ব্যয় হিসেবে সরকারিভাবে বরাদ্দ ছিল ৬০ হাজার টাকা। স্টলের মালামাল পরিবহনের জন্য গাড়ি ভাড়া বাবদ ১০ হাজার টাকা এবং অনুষ্ঠানটি ব্যাপক প্রচারের জন্য ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল।
এছাড়া অনুষ্ঠানের সরকারি ভাবে খাতওয়ারী বরাদ্দের মধ্যে ছিল ২টি ব্যানার তৈরির জন্য এক হাজার ৫শ টাকা, প্যান্ডেল, স্টেজ, ত্রিপল, ফ্যান, সাউন্ড সিস্টেম, ডেকোরেশন এবং ৫০টি স্টলের জন্য ৬৯ হাজার ৫শত টাকা। আমন্ত্রণপত্র ছাপানো বাবদ ৫ হাজার টাকা হলেও হাতেগোনা কয়েকজনকে আমন্ত্রণ পত্র দেয়া হয়।
এইভাবে খাতওয়ারি সরকারি নির্দেশনা দিয়ে বরাদ্দ থাকলেও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ন চন্দ্র সরকার ব্যয় সংকোচন করে টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গত বছর করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ও পোল্ট্রি চাষীদের নামে ভূয়া তালিকা করে টাকা আত্মসাত করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ন চন্দ্র সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্টল পঞ্চাশটিই হতে হবে এমন নয়। যেভাবে সুন্দর হয় সেভাবে করার কথা। অনেক উপজেলায় ২০/৩০টি স্টলও করেছে।’ প্রদর্শনী স্টলে খামারীদের প্রাণি আনা-নেওয়ার খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা লিস্টেড তাদের খরচ দেয়া হবে। একজনের তিনটি গরু প্রদর্শনীর জন্য তিনজনে নিয়ে আসলেতো তিনজনকে খরচ দেয়া হবে না।’
এদিকে প্রদর্শনী বুধবার অনুষ্ঠিত হলেও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কোন খামারী খরচ পাননি বলে জানা গেছে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দৌলতপুর গাছে ঝুলছিল বাকপ্রতিবন্ধী নারীর বিবস্ত্র মরদেহ

error: Content is protected !!

প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ লোপাটের অভিযোগ 

আপডেট টাইম : ০১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধি, বোয়ালমারী, ফরিদপুরঃ :
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ ২ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা নয়-ছয় ও লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ৫০টি স্টল থাকার কথা থাকলেও ২৯ টি স্টল এবং দায়সারা একটি ছোট স্টেজে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। অধিকাংশ আগত অতিথিদের দুপুরের খাবার না পেয়ে অভূক্ত অবস্থায় ফিরে যেতে দেখা গেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলে প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে অনেক কম চেয়ার থাকায় গণমাধ্যমকর্মীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ পুরো অনুষ্ঠানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনের সামান্য অংশে মাথার উপর শামিয়ানা থাকায় তীব্র রোদে  অনুষ্ঠানস্থলে আসা লোকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এছাড়া অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বর এবং পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. মোরশেদুর রহিমকে অন্যান্যদের সাথে ফুলের তোড়া দেয়া হয়নি। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এমনই নানান বিশৃঙ্খলার মধ্যে এবার প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। প্রসঙ্গতঃ গতবারও নানান বিশৃঙ্খলা এবং চরম অব্যবস্থাপনায় বর্তমান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী স্থানীয় হেলিপ্যাড চত্বরে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ভেটিরিনারি হাসপাতালের বাস্তবায়নে এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) সহযোগিতায় এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এম.এম. মোশাররফ হোসেন (মুশা মিয়া) এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা ও পরমেশ্বরদী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মাতুব্বর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র সরকার, কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড়, প্যানেল মেয়র মোমিন খান, পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. মেরশেদুর রহিম প্রমুখ।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. আব্দুল আলীমের সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. সেলিম হোসেন। পরে অংশগ্রহণকারী স্টলের মধ্য থেকে চারটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী বারো জনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রথম পুরস্কার হিসেবে তিন হাজার, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে দুই হাজার এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে এক হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়।
জানা যায়, প্রদর্শনী অনুষ্ঠানটি সকাল সাড়ে ৯টার সময় উদ্বোধনের কথা থাকলেও বেলা ১২টার সময় উদ্বোধন করায় অনুষ্ঠানে আগতদের তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে খাতওয়ারি দিকনির্দেশনা দিয়ে সরকারিভাবে বরাদ্দ ছিল দুই লক্ষ ৪৯ বাজার টাকা। ভ্যাট বাবদ ত্রিশ হাজার টাকা বাদ দিলে দুই লক্ষ ঊনিশ হাজার টাকা খরচ করার এখতিয়ার ছিল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার।
খাতওয়ারি নির্দেশনার মধ্যে ছিল প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে ৫০টি স্টল বাবদ বরাদ্দ ব্যয় ৬৯ হাজার ৫০০ টাকা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ন চন্দ্র সরকার অর্থ লোপাট করতে নির্ধারিত ৫০টি স্টলের স্থলে ২৯টি স্টল দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। হেলিপ্যাডে পর্যাপ্ত স্থান থাকলেও কমসংখ্যক স্টল করা হয়। ফলে ২৯টি স্টলে ৫৬ জন খামারী গাদাগাদি করে তাদের গরু, ছাগল প্রদর্শন করেন। এছাড়া একটি ছোট স্টেজ করে দায়সারাভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।
উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের রেনিনগর গ্রামের ছাগলের খামার মালিক মো. আবীর হোসেন প্রদর্শনীতে চারটি ছাগলের বাচ্চাসহ উৎকৃষ্ট মানের একটি ছাগল এনে স্টলের শোভাবর্ধন করলেও ছাগল আনা-নেওয়া বাবদ কোন খরচ দেওয়া হয়নি বলে সাংবাদিকদের জানান। সদর ইউনিয়নের চালিনগর গ্রামের বিল্লাল শেখ বলেন, প্রদর্শনীর আগে গরু আনা-নেওয়ার জন্য খরচ দিতে চেয়েছিল, কিন্তু পরে কোন খরচ পাইনি।
অনুষ্ঠান শেষে স্টল মালিকদের এক প্যাকেট করে খাবার দিলেও অধিকাংশ আগত অতিথিদের অভূক্ত অবস্থায় ফেরত যেতে দেখা গেছে।
জানা যায়, দুপুরের খাবারের জন্য স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে ৩৫ হাজার টাকায় ২৫০ প্যাকেট বিরিয়ানি ক্রয় করা হয়। এছাড়া আমন্ত্রিত ৩৫/৪০ জন অতিথিদের জন্য বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। খাবার বাবদ ব্যয় হিসেবে সরকারিভাবে বরাদ্দ ছিল ৬০ হাজার টাকা। স্টলের মালামাল পরিবহনের জন্য গাড়ি ভাড়া বাবদ ১০ হাজার টাকা এবং অনুষ্ঠানটি ব্যাপক প্রচারের জন্য ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল।
এছাড়া অনুষ্ঠানের সরকারি ভাবে খাতওয়ারী বরাদ্দের মধ্যে ছিল ২টি ব্যানার তৈরির জন্য এক হাজার ৫শ টাকা, প্যান্ডেল, স্টেজ, ত্রিপল, ফ্যান, সাউন্ড সিস্টেম, ডেকোরেশন এবং ৫০টি স্টলের জন্য ৬৯ হাজার ৫শত টাকা। আমন্ত্রণপত্র ছাপানো বাবদ ৫ হাজার টাকা হলেও হাতেগোনা কয়েকজনকে আমন্ত্রণ পত্র দেয়া হয়।
এইভাবে খাতওয়ারি সরকারি নির্দেশনা দিয়ে বরাদ্দ থাকলেও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ন চন্দ্র সরকার ব্যয় সংকোচন করে টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গত বছর করোনাকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ও পোল্ট্রি চাষীদের নামে ভূয়া তালিকা করে টাকা আত্মসাত করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ন চন্দ্র সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্টল পঞ্চাশটিই হতে হবে এমন নয়। যেভাবে সুন্দর হয় সেভাবে করার কথা। অনেক উপজেলায় ২০/৩০টি স্টলও করেছে।’ প্রদর্শনী স্টলে খামারীদের প্রাণি আনা-নেওয়ার খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা লিস্টেড তাদের খরচ দেয়া হবে। একজনের তিনটি গরু প্রদর্শনীর জন্য তিনজনে নিয়ে আসলেতো তিনজনকে খরচ দেয়া হবে না।’
এদিকে প্রদর্শনী বুধবার অনুষ্ঠিত হলেও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কোন খামারী খরচ পাননি বলে জানা গেছে।

প্রিন্ট