মহম্মদপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত অর্থবছরে স্টেডিয়ামটিকে খেলার উপযোগী করতে কয়েক দফা সংস্কার করা হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে খেলোয়াড়দের দাবির মুখে মাঠের পানি সরাতে অস্থায়ী একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কিন্তু তাতেও পানি নিস্কাশন হচ্ছে না।
তবে স্থানীয় সাবেক ফুটবলারদের দাবি বারবার মাঠটি সংস্কার না করে বরং স্থায়ীভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। তা না হলে স্টেডিয়ামটি কখনোই খেলার উপযোগী হবে না। আবার মাঠের এই দুরবস্থার জন্য সংশ্নিষ্টদের গাফিলতি ও উদাসীনতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৯৬৭ সালে উপজেলা সদরের আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশন স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় এই ফুটবল মাঠটি নির্মাণ করে। এই মাঠে ফুটবল অনুশীলন করে মহম্মদপুর উপজেলার অনেক খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বেশ কয়টি জাতীয় দলের ফুটবলারদের অংশগ্রহণে এই মাঠে লাখো দর্শকের উপস্থিতিতে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মাঠে অনুশীলন করে জিল্লুর রহমান লাজুক, রহমত ও রয়েল ফুটবলের জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।
বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মেলা এই মাঠে হয়ে থাকে। বর্তমানে মাঠের এমন অবস্থার জন্য অনুশীলন করতে না পারায় নতুন খেলোয়াড় তৈরিতে বাধার সৃষ্টি হয়েছে বলে কয়েকজন সাবেক ফুটবলার জানিয়েছেন।
২০১৭ সালে এই ফুটবল মাঠটিকে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে উন্নীত করা হয়। মহম্মদপুর উপজেলার মানুষ ফুটবলপ্রিয় হওয়ায় এক সময় প্রায় প্রতিদিনই প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলা এ মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। তাই সময়ের বিবর্তনে এই খেলাকে ঘিরে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে উঠেছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আছাদুজ্জামান ফুটবল একাডেমি, খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, সূর্য সংঘ, একতা ক্লাব, বিপ্লব সংঘ, স্পোর্টস একাডেমি ইত্যাদি।
গতকাল সোমবার সকালে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠজুড়ে অথৈ পানি। বৃষ্টি নামলে মাঠের পানি বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামান্য বৃষ্টি নামলেই মহম্মদপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
মহম্মদপুর আছাদুজ্জামান ফুটবল একাডেমির ক্যাপ্টেন মেহেদী হাসান সুজন বলেন, এক বছর ধরে মাঠে পানি জমে থাকায় অনুশীল বন্ধ রয়েছে।
মহম্মদপুর খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি ঈদুল শেখ বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় স্টেডিয়ামটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মিলন বলেন, স্টেডিয়ামটি খেলাধুলার অনুপযোগী হওয়ায় জুলাই মাসে মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার এসে মাঠটি পরিদর্শন করবেন। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দুরবস্থা তিনি দেখেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় এমপির সঙ্গে কথা বলবেন।
প্রিন্ট