ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার Logo এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Logo মাগুরা শ্রীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার Logo রাশিয়ার কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন Logo কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির বিপক্ষে যাওয়ায় ১৫ নেতাকে শোকজ Logo ভিডিও ফুটেজে নারীর ওপর হামলা, পুলিশের প্রতিবেদনে উলটে গেল ঘটনা Logo নতুন নেতৃত্বের আ’লীগ চায় বিএনপি Logo বোয়ালমারীতে ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পরিচিতি সভা Logo লালপুরে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সরল আটক Logo গোদাগাড়ীতে ইউপি বিএনপি’র কর্মী সভা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম

মাঠে পানি জমে, খেলা হয় না

মাগুরার মহম্মাদপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ করছে।

মাগুরার মহম্মদপুরে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। গত তিন দিনের ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে এলাকার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। উপজেলা শহর সংলগ্ন শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামটিতে জমেছে অথৈ পানি। গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে স্টেডিয়ামটি তলিয়ে গেলেও এ সমস্যা দীর্ঘদিনের।
সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি জমে খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে মাঠটি। মাঠের রক্ষণাবেক্ষণে থাকা কর্তৃপক্ষের কোনো সুদৃষ্টি নেই। বৃষ্টি নামলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় নিয়মিত খেলা, অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খেলোয়াড়রা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

মহম্মদপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত অর্থবছরে স্টেডিয়ামটিকে খেলার উপযোগী করতে কয়েক দফা সংস্কার করা হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে খেলোয়াড়দের দাবির মুখে মাঠের পানি সরাতে অস্থায়ী একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কিন্তু তাতেও পানি নিস্কাশন হচ্ছে না।

তবে স্থানীয় সাবেক ফুটবলারদের দাবি বারবার মাঠটি সংস্কার না করে বরং স্থায়ীভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। তা না হলে স্টেডিয়ামটি কখনোই খেলার উপযোগী হবে না। আবার মাঠের এই দুরবস্থার জন্য সংশ্নিষ্টদের গাফিলতি ও উদাসীনতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

১৯৬৭ সালে উপজেলা সদরের আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশন স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় এই ফুটবল মাঠটি নির্মাণ করে। এই মাঠে ফুটবল অনুশীলন করে মহম্মদপুর উপজেলার অনেক খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বেশ কয়টি জাতীয় দলের ফুটবলারদের অংশগ্রহণে এই মাঠে লাখো দর্শকের উপস্থিতিতে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মাঠে অনুশীলন করে জিল্লুর রহমান লাজুক, রহমত ও রয়েল ফুটবলের জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মেলা এই মাঠে হয়ে থাকে। বর্তমানে মাঠের এমন অবস্থার জন্য অনুশীলন করতে না পারায় নতুন খেলোয়াড় তৈরিতে বাধার সৃষ্টি হয়েছে বলে কয়েকজন সাবেক ফুটবলার জানিয়েছেন।

২০১৭ সালে এই ফুটবল মাঠটিকে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে উন্নীত করা হয়। মহম্মদপুর উপজেলার মানুষ ফুটবলপ্রিয় হওয়ায় এক সময় প্রায় প্রতিদিনই প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলা এ মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। তাই সময়ের বিবর্তনে এই খেলাকে ঘিরে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে উঠেছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আছাদুজ্জামান ফুটবল একাডেমি, খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, সূর্য সংঘ, একতা ক্লাব, বিপ্লব সংঘ, স্পোর্টস একাডেমি ইত্যাদি।

গতকাল সোমবার সকালে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠজুড়ে অথৈ পানি। বৃষ্টি নামলে মাঠের পানি বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামান্য বৃষ্টি নামলেই মহম্মদপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

মহম্মদপুর আছাদুজ্জামান ফুটবল একাডেমির ক্যাপ্টেন মেহেদী হাসান সুজন বলেন, এক বছর ধরে মাঠে পানি জমে থাকায় অনুশীল বন্ধ রয়েছে।

প্রাক্তন খেলোয়াড় ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাবুল বলেন, অযোগ্যরা ক্রীড়া সংস্থা দখল করে নেওয়ায় মাঠের দিকে কারও খেয়াল নেই।

মহম্মদপুর খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি ঈদুল শেখ বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় স্টেডিয়ামটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মিলন বলেন, স্টেডিয়ামটি খেলাধুলার অনুপযোগী হওয়ায় জুলাই মাসে মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার এসে মাঠটি পরিদর্শন করবেন। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দুরবস্থা তিনি দেখেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় এমপির সঙ্গে কথা বলবেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম

মাঠে পানি জমে, খেলা হয় না

আপডেট টাইম : ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২১
মোঃ শফিকুল ইসলাম জীবন, মহম্মদপুর, মাগুরা প্রতিনিধিঃ :
মাগুরার মহম্মদপুরে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। গত তিন দিনের ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে এলাকার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল। উপজেলা শহর সংলগ্ন শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামটিতে জমেছে অথৈ পানি। গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে স্টেডিয়ামটি তলিয়ে গেলেও এ সমস্যা দীর্ঘদিনের।
সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি জমে খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়ে মাঠটি। মাঠের রক্ষণাবেক্ষণে থাকা কর্তৃপক্ষের কোনো সুদৃষ্টি নেই। বৃষ্টি নামলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় নিয়মিত খেলা, অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খেলোয়াড়রা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

মহম্মদপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত অর্থবছরে স্টেডিয়ামটিকে খেলার উপযোগী করতে কয়েক দফা সংস্কার করা হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে খেলোয়াড়দের দাবির মুখে মাঠের পানি সরাতে অস্থায়ী একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কিন্তু তাতেও পানি নিস্কাশন হচ্ছে না।

তবে স্থানীয় সাবেক ফুটবলারদের দাবি বারবার মাঠটি সংস্কার না করে বরং স্থায়ীভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। তা না হলে স্টেডিয়ামটি কখনোই খেলার উপযোগী হবে না। আবার মাঠের এই দুরবস্থার জন্য সংশ্নিষ্টদের গাফিলতি ও উদাসীনতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

১৯৬৭ সালে উপজেলা সদরের আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশন স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় এই ফুটবল মাঠটি নির্মাণ করে। এই মাঠে ফুটবল অনুশীলন করে মহম্মদপুর উপজেলার অনেক খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বেশ কয়টি জাতীয় দলের ফুটবলারদের অংশগ্রহণে এই মাঠে লাখো দর্শকের উপস্থিতিতে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মাঠে অনুশীলন করে জিল্লুর রহমান লাজুক, রহমত ও রয়েল ফুটবলের জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মেলা এই মাঠে হয়ে থাকে। বর্তমানে মাঠের এমন অবস্থার জন্য অনুশীলন করতে না পারায় নতুন খেলোয়াড় তৈরিতে বাধার সৃষ্টি হয়েছে বলে কয়েকজন সাবেক ফুটবলার জানিয়েছেন।

২০১৭ সালে এই ফুটবল মাঠটিকে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে উন্নীত করা হয়। মহম্মদপুর উপজেলার মানুষ ফুটবলপ্রিয় হওয়ায় এক সময় প্রায় প্রতিদিনই প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলা এ মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। তাই সময়ের বিবর্তনে এই খেলাকে ঘিরে বিভিন্ন সংগঠন গড়ে উঠেছিল। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আছাদুজ্জামান ফুটবল একাডেমি, খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, সূর্য সংঘ, একতা ক্লাব, বিপ্লব সংঘ, স্পোর্টস একাডেমি ইত্যাদি।

গতকাল সোমবার সকালে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠজুড়ে অথৈ পানি। বৃষ্টি নামলে মাঠের পানি বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামান্য বৃষ্টি নামলেই মহম্মদপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

মহম্মদপুর আছাদুজ্জামান ফুটবল একাডেমির ক্যাপ্টেন মেহেদী হাসান সুজন বলেন, এক বছর ধরে মাঠে পানি জমে থাকায় অনুশীল বন্ধ রয়েছে।

প্রাক্তন খেলোয়াড় ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাবুল বলেন, অযোগ্যরা ক্রীড়া সংস্থা দখল করে নেওয়ায় মাঠের দিকে কারও খেয়াল নেই।

মহম্মদপুর খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি ঈদুল শেখ বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় স্টেডিয়ামটি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মিলন বলেন, স্টেডিয়ামটি খেলাধুলার অনুপযোগী হওয়ায় জুলাই মাসে মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার এসে মাঠটি পরিদর্শন করবেন। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দুরবস্থা তিনি দেখেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় এমপির সঙ্গে কথা বলবেন।


প্রিন্ট