কখনো গাছের ডাল কেটে সাবাড় করছেন, কখনো জমির ফসল কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কখনো অন্যের জমি নিজের দাবি করে চাষ দিচ্ছেন। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতেও সাহস করছেন না। তাঁর অত্যাচারে পুরো গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ।
৫০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম জামাল শাহ। তিনি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মৃত রমজান শাহের ছেলে। উপায় না পেয়ে অবশেষে গতকাল শনিবার তাঁর বিরুদ্ধে শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।
ভুক্তভোগীদের একজন প্রসেন চন্দ্র। তিনি বলেন, `জামালের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। মাঠের ফসল পরিপক্ব হলেই সে কেটে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। গরু-ছাগল দিয়ে ফসল খাওয়ায়। পুকুরের মাছ ধরে নেয়। গত বুধবার সে আমার ৩০ শতাংশ জমির আমগাছের ডাল কেটে ক্ষতি করেছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে ট্রাক্টর দিয়ে আমার ভাইয়ের জমি চাষ দিয়েছে। এ অবস্থায় উপায় না পেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’
আরেক ভুক্তভোগী খাইরুল ইসলাম বলেন, `অনেক কষ্ট করে জমিতে আমন ধান করেছিলাম। কিন্তু ধান ঘরে তুলতে পারিনি। ধান পরিপক্ব হতেই জামাল রাতের আঁধারে সব ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে গেছে। গ্রামবাসী মিলে মাঠে পাহারাদার রেখেও ধান কাটা আটকাতে পারিনি।’
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাহুল ক্রান্তি ঘোষ বলেন, `আমার নিজের পরিবারসহ আশপাশের সব পরিবার এই জামাল শাহের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। মাঠের ফসল, পুকুরের মাছ কিছুই কৃষকেরা ঘরে তুলতে পারছেন না। সে নিজের দাবি করে ক্ষতি সাধন করছে। নিষেধ করলে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এমন অবস্থায় আমরা ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান বাদশা বলেন, `জামাল শাহের অত্যাচারে এলাকাবাসী সবাই অতিষ্ঠ। সে ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় থাকা জমিও নিজের দাবি করে চাষ দিয়েছে। কয়েক বছর আগে তার এসব কর্মকাণ্ডের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাও দেওয়া হয়েছিল। ইদানীং সে আবারও অত্যাচার শুরু করেছে। ইউনিয়ন পরিষদে বিচার করেও সুরাহা হয়নি। যেকোনো সময় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে পারে। এ জন্য এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’
জানতে চাইলে জামাল শাহ নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, `আমি ভালো থাকি, সেটা তাঁরা চান না। মাঠের অধিকাংশ জমি আমার বাপ-দাদার ছিল। বাপ-দাদাকে ঠকিয়ে সব জমি তাঁরা নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। এ জন্য আমি নিজের মনে করেই জমি চাষ দিয়েছি, নিজের জমির ফসল কেটেছি।’
এ বিষয়ে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রিন্ট