ঢাকা , শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আহতদের সেবা ও পরামর্শ দিলেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল Logo রংপুরে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনাঃ খাদে পড়ে গেল আলিফ পরিবহন, আহত অন্তত ২০ Logo হাতিয়া চরকিং ইউনিয়নে আব্দুল হাই ভূঁইয়া ল্যাংগুয়েজ ক্লাবের উদ্দ্যেগে বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ফ্রি ইংরেজি শেখার কার্যক্রম চালু হয়েছে Logo শার্শায় কৃষকের বাড়ি ভাংচুর ও বোমা হামলা ঘটনার মুল হোতা তোতা আটক Logo হাতিয়ায় মুয়াজ্জিন পেলেন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা Logo আলিপুর টি ১০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত  Logo শালিখায় স্ত্রীহত্যা মামলার আসামি মিজানুর গ্রেফতার Logo বাঘায় আগুন নিয়ন্ত্রনে ব্যাপক ক্ষতি থেকে রক্ষা Logo ভূরুঙ্গামারীতে “Movement for Punctuality” আয়োজিত কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত Logo গণসংযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এনসিপিঃ সামনে জুলাই পদযাত্রা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভেড়ামারায় আইন অমান্য করে মা ইলিশ ধরছে জেলেরা

৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ মা ইলিশের প্রজনন মৌসুম। ডিম ছাড়তে মা ইলিশ পদ্মায় আসে এ সময়। এই ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণে ইলিশসহ সব প্রজাতির মা মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। অন্য সময়ের চেয়ে এ সময় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে ডিমওয়ালা মা ইলিশ। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে পদ্মায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে কোনো ফলই হচ্ছে না। নাম মাত্র অভিযানে কৌশল পাল্টে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জেলেরা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচেই যেখানে রয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। তাও প্রশাসনের একেবারে নাকের ডগায় মা ইলিশ ধরছে জেলেরা।

জানা যায়, ৪ থেকে ১৫ অক্টোবর ১১ দিনের মধ্যে মাত্র ৩ দিন (৯, ১২ ও ১৪) অক্টোবর ভেড়ামারা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোকসানা খাতুন ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) নদীতে অভিযান চালিয়ে বেশকিছু কারেন্ট জাল উদ্ধার করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। সরকারি টাকা বরাদ্দ থাকলে ও বাকি দিনগুলো নাম মাত্র অভিযান চলছে। যার ফলে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে চলছে পদ্মায় মা ইলিশ শিকার।

ভেড়ামারার পদ্মার র্তীরবতী এলাকার আমিরুল  জানান, নদীতে নির্ভরশীল লাইসেন্সপ্রাপ্ত কিছু জেলে এবং এলাকার সাধারণ মানুষ রাতের অন্ধকারে মা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ শিকার করছে নিয়মিত। এর ফলে ভাবিষ্যতে জাতীয় ইলিশ মাছ উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিবার এ মৌসুমে জেলেদের সরকারি অনুদান দিলেও এবার তা দেওয়া হয়নি।

আব্দুল আলীম নামে একজন জানান, বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এ সময়কালে ডিমওয়ালা ইলিশ মাছ বেশি ধরা পড়ে। আর বাজারে এর দাম ভালো পাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু জেলেরা এ মাছ ধরে। এবার প্রশাসনের অভিযান ও তৎপরতা কম বলে জেলেরা এ সময়েও ইলিশ ধরা অব্যহত রেখেছে।

পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে, বাহাদুরপুর-রায়টা পাথর ঘাটের মাঝামাঝি বিভিন্নস্থানে দিনের বেলাতেও জেলেরা সরকারের কঠোর নির্দেশ ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে জেলেরা কারেন্ট জাল পেতে অবাধে ডিমওয়ালা মা ইলিশ শিকার করছে বলে জানায় স্থানীয়রা।

ভেড়ামারা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরিন ০৭ এপ্রিল যোগদান করেন। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরদী উপজেলায় হওয়ার সুবাধে তিনি সেখানেই থাকেন।

এদিকে প্রায়দিনই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাজিরায় অনিয়ম করেন এবং সে কারণে সময় মতো মা ইলিশ নিধন প্রতিরোধের চলমান অভিযান ঢিলেঢালাভাবে চলছে এমনটি অভিযোগ পাওয়া যায়।

ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) রোকসানা খাতুন  জানান, ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ জারি করা হয়েছে। আমি নিজে ২ দিন নদীতে অভিযানে গিয়ে কারেন্ট জাল ও মা ইলিশ উদ্ধার করেছি।

ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, নদীতে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। খবর পেলে ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থল যাওয়ার আগেই জেলেরা পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ভেড়ামারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরিনের সঙ্গে  মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মিরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজিউল ইসলাম জানান, ৪ অক্টোবর থেকে সকাল ও বিকেলে প্রতিদিন আমরা পদ্মায় মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করি। অবৈধ কারেন্ট জাল ও মা ইলিশ উদ্ধার অভিযান অব্যহত রেখেছি। অভিযানের ক্ষেত্রে আমাদের ট্রলারের চেয়ে অতি গতি সম্পন্ন জেলেদের ট্রলার হওয়ায় প্রায়ই জেলেরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। যদি স্পিডবোর্ট কিংবা উচ্চ গতি সম্পন্ন ট্রলার আমরা ব্যবহার করতে পারি তাহলে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান আরো গতিশীল হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আহতদের সেবা ও পরামর্শ দিলেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল

error: Content is protected !!

ভেড়ামারায় আইন অমান্য করে মা ইলিশ ধরছে জেলেরা

আপডেট টাইম : ০৬:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ :
৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ মা ইলিশের প্রজনন মৌসুম। ডিম ছাড়তে মা ইলিশ পদ্মায় আসে এ সময়। এই ২২ দিন মা ইলিশ সংরক্ষণে ইলিশসহ সব প্রজাতির মা মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। অন্য সময়ের চেয়ে এ সময় ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে ডিমওয়ালা মা ইলিশ। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে পদ্মায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে কোনো ফলই হচ্ছে না। নাম মাত্র অভিযানে কৌশল পাল্টে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জেলেরা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচেই যেখানে রয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। তাও প্রশাসনের একেবারে নাকের ডগায় মা ইলিশ ধরছে জেলেরা।

জানা যায়, ৪ থেকে ১৫ অক্টোবর ১১ দিনের মধ্যে মাত্র ৩ দিন (৯, ১২ ও ১৪) অক্টোবর ভেড়ামারা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোকসানা খাতুন ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) নদীতে অভিযান চালিয়ে বেশকিছু কারেন্ট জাল উদ্ধার করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। সরকারি টাকা বরাদ্দ থাকলে ও বাকি দিনগুলো নাম মাত্র অভিযান চলছে। যার ফলে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে চলছে পদ্মায় মা ইলিশ শিকার।

ভেড়ামারার পদ্মার র্তীরবতী এলাকার আমিরুল  জানান, নদীতে নির্ভরশীল লাইসেন্সপ্রাপ্ত কিছু জেলে এবং এলাকার সাধারণ মানুষ রাতের অন্ধকারে মা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ শিকার করছে নিয়মিত। এর ফলে ভাবিষ্যতে জাতীয় ইলিশ মাছ উৎপাদনে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিবার এ মৌসুমে জেলেদের সরকারি অনুদান দিলেও এবার তা দেওয়া হয়নি।

আব্দুল আলীম নামে একজন জানান, বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এ সময়কালে ডিমওয়ালা ইলিশ মাছ বেশি ধরা পড়ে। আর বাজারে এর দাম ভালো পাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিছু জেলেরা এ মাছ ধরে। এবার প্রশাসনের অভিযান ও তৎপরতা কম বলে জেলেরা এ সময়েও ইলিশ ধরা অব্যহত রেখেছে।

পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে, বাহাদুরপুর-রায়টা পাথর ঘাটের মাঝামাঝি বিভিন্নস্থানে দিনের বেলাতেও জেলেরা সরকারের কঠোর নির্দেশ ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে জেলেরা কারেন্ট জাল পেতে অবাধে ডিমওয়ালা মা ইলিশ শিকার করছে বলে জানায় স্থানীয়রা।

ভেড়ামারা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরিন ০৭ এপ্রিল যোগদান করেন। তার বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঈশ্বরদী উপজেলায় হওয়ার সুবাধে তিনি সেখানেই থাকেন।

এদিকে প্রায়দিনই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাজিরায় অনিয়ম করেন এবং সে কারণে সময় মতো মা ইলিশ নিধন প্রতিরোধের চলমান অভিযান ঢিলেঢালাভাবে চলছে এমনটি অভিযোগ পাওয়া যায়।

ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) রোকসানা খাতুন  জানান, ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশসহ সব প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ জারি করা হয়েছে। আমি নিজে ২ দিন নদীতে অভিযানে গিয়ে কারেন্ট জাল ও মা ইলিশ উদ্ধার করেছি।

ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, নদীতে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। খবর পেলে ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থল যাওয়ার আগেই জেলেরা পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ভেড়ামারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরিনের সঙ্গে  মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মিরপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজিউল ইসলাম জানান, ৪ অক্টোবর থেকে সকাল ও বিকেলে প্রতিদিন আমরা পদ্মায় মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান পরিচালনা করি। অবৈধ কারেন্ট জাল ও মা ইলিশ উদ্ধার অভিযান অব্যহত রেখেছি। অভিযানের ক্ষেত্রে আমাদের ট্রলারের চেয়ে অতি গতি সম্পন্ন জেলেদের ট্রলার হওয়ায় প্রায়ই জেলেরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। যদি স্পিডবোর্ট কিংবা উচ্চ গতি সম্পন্ন ট্রলার আমরা ব্যবহার করতে পারি তাহলে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান আরো গতিশীল হবে।


প্রিন্ট