জেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, থ্যাইল্যান্ডে কালো জাতের এই ধানের ব্যাপক চাষ হয়। সে দেশের মানুষের প্রিয় খাবারে পরিণত হয়েছে এই ধানের চাল।গতকাল সোমবার সকালে রাজাপুর ইউনিয়নের নাওভাঙ্গা এলাকায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধী নতুন কালো ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু আব্দুল্লাহেল কাফী, ইউএনও রামানন্দ পাল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান, রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বিশ্বাস, উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার, রাজাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাখারুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিজ অর্থায়নে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাঁচজন আদর্শ কৃষককে ৫ কেজি করে কালো ধানের বীজ দেওয়া হয়। উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় প্রায় আট বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এই কালো ধানের চাষ করা হয়েছে। সফল চাষ ও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। সফলতার সম্ভাবনা দেখতে পেয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগ এই জাতের ধান চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ ও সচেতনতা বাড়াতে পরিকল্পনা করছে। কৃষি অধিদপ্তরের গবেষকরা এই ধানের ওপর ব্যাপক গবেষণা করে জানিয়েছেন এই ধানের চাল ডায়াবেটিস, ক্যান্সার নিরাময়সহ আ্যান্টিবোডি তৈরীতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কৃষক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ লিটন বলেন, প্রথমে ইউটিউবে দেখে কালো ধান সম্পর্কে জানতে পেরে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে বীজ সংগ্রহ করেন। শুরু থেকেই কৃষি কর্মকর্তারা ফসলের তদারকিসহ তাকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী মৌসুমে বেশি জমিতে এই ধানের চাষ করে তিনি স্বাবলম্বী হতে চান। বিনোদপুর ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের কালো ধান চাষি মাসুদ শেখ জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ৩৩ শতক জমিতে তিনি কালো ধান চাষ করেছেন। ফলনও ভালো পেয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোকছেদুল মোমিন বলেন, এই জাতের ধানের চালে বিভিন্ন ঔষধি গুণ রয়েছে। এই চালের ভাত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।কালো ধানের গুণাগুণ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুস সোবহান বলেন, মূলত এ জাতের ধানের রং সোনালি বা কালচে হয়। তবে চাল একেবারে কুচকুচে কালো। কালো চালে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। কালো ধানে ডায়াবেটিস প্রতিরোধক ক্ষমতা রয়েছে। এ চাল অনেক উপকারী। পুষ্টিসমৃদ্ধ এই চাল কৃষি অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এই মূল্যবান ধানের জাত খুব দ্রুত দেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সহায়তার থ্যাইল্যান্ড থেকে এ ধানের বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে। ফলন এবং কার্যকারীতা সঠিক হলে এই ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি করা হবে।
প্রিন্ট