ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ‘ক্ষুধার্তের আত্মচিৎকার’ নামে এক ভার্চুয়াল গ্রুপ অগ্নিদগ্ধ এক গৃহবধূর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। অগ্নিদগ্ধ ওই গৃহবধূর চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করেছে ওই ভার্চুয়াল গ্রুপটি। ‘ক্ষুধার্তের আত্মচিৎকার’ ভার্চুয়াল গ্রুপের এডমিন মোহাম্মদ শামীম প্রধান জানান, মাস দুয়েক আগে খাদিজা বেগম (২১) নামে এক গৃহবধূ রান্না করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হন।
তিনি আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের চরবেলবানা গ্রামের মো. রবিউল মোল্যার স্ত্রী। খাদিজা বেগমের দুই বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আগুনে খাদিজা বেগমের শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে যায়। স্বামী অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ায় স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে ব্যর্থ হন। সুচিকিৎসা অভাবে খাদিজার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন ধরে।
বিষয়টি জানতে পেরে ওই এলাকার বাসিন্দা এবং বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ওটি এটেন্ড্যান্ট এ কে এম আফসার উদ্দিন ওই গৃহবধূর সুচিকিৎসার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা চালান। কিন্তু অর্থাভাবে তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন। পরে ‘ক্ষুধার্তের আত্মচিৎকার’ গ্রুপ ওই গৃহবধূর বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
শামীম প্রধান আরো জানান, তিনিসহ ভার্চুয়াল গ্রুপটির অপর এডমিন জং হাবিব, মডারেটর নাঈম, ম্যারিড সাদি, মো. হানিফ প্রমুখের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বিভিন্ন সহৃদয়বান ব্যক্তির নিকট থেকে ওই গৃহবধূর চিকিৎসাবাবদ সংগৃহীত হয় ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা। অবশেষে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. কে এম মাহমুদ রহমানের তত্ত্বাবধানে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. কে এম মাহমুদ রহমান বলেন, এখন ওই গৃহবধূর সুচিকিৎসা চলছে। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন দিন পনেরোর মধ্যেই তিনি বাড়ি যেতে পারবেন। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে কয়েক মাস লাগবে।
এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন দি ইস্টার্ন সার্জিক্যাল ক্লিনিকে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে খাদিজা বেগমের চিকিৎসা বাবদ সংগৃহীত টাকা ওই গৃহবধূর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওটি এটেন্ড্যান্ট এ কে এম আফসার উদ্দিনের হাতে তুলে দেন। এ সময় বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. কে এম মাহমুদ রহমানসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রিন্ট