ঢাকা , সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo পার্বতীপুরে মাদ্রসার ৪ একর জায়গা জবরদখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত Logo শার্শায় শিয়াল মারার ফাঁদে কৃষকের মৃত্যু    Logo তানোরে একতা যুব সংঘের নিজস্ব অর্থায়নে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন Logo ফরিদপুর পাসপোর্ট অফিসে ৩ জন রোহিঙ্গা ও ২ জন দালাল আটক Logo দুর্নীতিবাজ-মাফিয়াদের রাজনীতি চাই না”— ঝালকাঠিতে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের ঘোষণা Logo কুষ্টিয়ায় পাউবোর কোটি টাকার তেল চুরির অভিযোগে দুদকের অভিযান Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছেলের বউকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুর গ্রেফতার Logo ঠাকুরগাঁওয়ে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ৩ বিষয়ে ফেল Logo কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অস্ত্র-মাদকসহ আটক ১ Logo কুষ্টিয়া পৌরসভার গেটে আবর্জনা ফেলে কর্মবিরতিতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরায় মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর ছাত্রসভা ও মিছিল

মাগুরায় মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ; সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু; করোনাকালীন সকল বেতন-ফি মওকুফ; করোনায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার উদ্যোগে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ সকাল সাড়ে ১০টায় চৌরঙ্গী মোড়ে মাগুরা জেলা প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার আহ্বায়ক কেয়া বিশ্বাস এবং পরিচালনা করেন ঐশী বিশ্বাস । সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য প্রকৌশলী শম্পা বসু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মার্কসবাদীর কেন্দ্রীয় নেতা কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা রেজাউল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাবনী সুলতানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার সদস্য ঋতু বিশ্বাস ।

বক্তাগণ বলেন, ১৯৬২ সালে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার তৎকালীন শিক্ষা সচিব এসএম শরিফের নেতৃত্বে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে প্রণয়ন করেছিল চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি, যা শরিফ কমিশন নামে পরিচিত। ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করে একটি বিশেষ শ্রেণির হাতে তুলে দেয়ার প্রস্তাবসহ একটি সাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতি এদেশের জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল তৎকালীন আইয়ুব সরকার।

এ চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তৎকলীন ছাত্রসমাজ ১৭ সেপ্টেম্বর (১৯৬২) হরতাল আহ্বান করে এবং এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে পেশাজীবী, শ্রমিক, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষ। ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় বের হয় ছাত্র-জনতার বিরাট মিছিল। মিছিলটি যখন হাইকোর্ট পার হয়ে আবদুল গণি রোডে প্রবেশ করে তখন অতর্কিতভাবে পুলিশ গুলিবর্ষণ শুরু করে। শহীদ হন বাবুল (ছাত্র), গোলাম মোস্তফা (বাস কন্টাক্টর), ওয়াজিউল্লাহ (গৃহভৃত্য)সহ নাম না জানা অনেক ছাত্র।

ছাত্র জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে আয়ুব সামরিক জান্তার সরকার এ শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন থেকে পিছু হটে। এরপর থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে । বক্তাগণ আরও বলেন, এই ২০২১ সালে যখন আমরা ৫৯তম শিক্ষা দিবস পালন করছি, যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি; তখন কতটুকু অর্জিত হয়েছে শিক্ষা দিবসের চেতনা ? “টাকা যার শিক্ষা তার” এই নীতির বিরুদ্ধে ছিল এই আন্দোলন আজও তো দেশের শিক্ষানীতি তাই। এই করোনাকালে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য আরও বেড়েছে ।

শ্রমিক কৃষক দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের এনড্রয়েড মোবাইল নেই, কম্পিউটার নেই, উচ্চ মূল্যে ইন্টারনেট ডাটা কেনার সামর্থ্য নেই, গৃহ শিক্ষক রেখে প্রাইভেট পড়ার মতো আর্থিক অবস্থা নেই। এই দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ । তাদের পড়াশোনা হয়নি। শিশু শ্রম, বাল্যবিবাহ বেড়েছে ভয়াবহভাবে।

আশংকা করা হচ্ছে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী শিক্ষাক্ষেত্র থেকে ঝরে যেতে পারে। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার হলেও রাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে কোন দায়িত্ব নেয়নি। সমাবেশ থেকে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ; সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু; করোনাকালীন সকল বেতন-ফি মওকুফ; করোনায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিসমূহ তুলে ধরা হয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

পার্বতীপুরে মাদ্রসার ৪ একর জায়গা জবরদখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

error: Content is protected !!

মাগুরায় মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর ছাত্রসভা ও মিছিল

আপডেট টাইম : ০৫:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
ফারুক আহমেদ, মাগুরা :

মাগুরায় মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ; সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু; করোনাকালীন সকল বেতন-ফি মওকুফ; করোনায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার উদ্যোগে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ সকাল সাড়ে ১০টায় চৌরঙ্গী মোড়ে মাগুরা জেলা প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার আহ্বায়ক কেয়া বিশ্বাস এবং পরিচালনা করেন ঐশী বিশ্বাস । সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরামের সদস্য প্রকৌশলী শম্পা বসু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি মার্কসবাদীর কেন্দ্রীয় নেতা কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা রেজাউল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাবনী সুলতানা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মাগুরা জেলা শাখার সদস্য ঋতু বিশ্বাস ।

বক্তাগণ বলেন, ১৯৬২ সালে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার তৎকালীন শিক্ষা সচিব এসএম শরিফের নেতৃত্বে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে প্রণয়ন করেছিল চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি, যা শরিফ কমিশন নামে পরিচিত। ‘টাকা যার শিক্ষা তার’ এ মূলমন্ত্রকে ধারণ করে শিক্ষাকে পণ্যে পরিণত করে একটি বিশেষ শ্রেণির হাতে তুলে দেয়ার প্রস্তাবসহ একটি সাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতি এদেশের জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল তৎকালীন আইয়ুব সরকার।

এ চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে তৎকলীন ছাত্রসমাজ ১৭ সেপ্টেম্বর (১৯৬২) হরতাল আহ্বান করে এবং এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে পেশাজীবী, শ্রমিক, কৃষকসহ সর্বস্তরের মানুষ। ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় বের হয় ছাত্র-জনতার বিরাট মিছিল। মিছিলটি যখন হাইকোর্ট পার হয়ে আবদুল গণি রোডে প্রবেশ করে তখন অতর্কিতভাবে পুলিশ গুলিবর্ষণ শুরু করে। শহীদ হন বাবুল (ছাত্র), গোলাম মোস্তফা (বাস কন্টাক্টর), ওয়াজিউল্লাহ (গৃহভৃত্য)সহ নাম না জানা অনেক ছাত্র।

ছাত্র জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে আয়ুব সামরিক জান্তার সরকার এ শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন থেকে পিছু হটে। এরপর থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে । বক্তাগণ আরও বলেন, এই ২০২১ সালে যখন আমরা ৫৯তম শিক্ষা দিবস পালন করছি, যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি; তখন কতটুকু অর্জিত হয়েছে শিক্ষা দিবসের চেতনা ? “টাকা যার শিক্ষা তার” এই নীতির বিরুদ্ধে ছিল এই আন্দোলন আজও তো দেশের শিক্ষানীতি তাই। এই করোনাকালে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য আরও বেড়েছে ।

শ্রমিক কৃষক দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের এনড্রয়েড মোবাইল নেই, কম্পিউটার নেই, উচ্চ মূল্যে ইন্টারনেট ডাটা কেনার সামর্থ্য নেই, গৃহ শিক্ষক রেখে প্রাইভেট পড়ার মতো আর্থিক অবস্থা নেই। এই দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ । তাদের পড়াশোনা হয়নি। শিশু শ্রম, বাল্যবিবাহ বেড়েছে ভয়াবহভাবে।

আশংকা করা হচ্ছে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী শিক্ষাক্ষেত্র থেকে ঝরে যেতে পারে। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার হলেও রাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে কোন দায়িত্ব নেয়নি। সমাবেশ থেকে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ; সর্বজনীন, বৈষম্যহীন, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু; করোনাকালীন সকল বেতন-ফি মওকুফ; করোনায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিসমূহ তুলে ধরা হয়।


প্রিন্ট