ঢাকা , সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ভেড়ামারায় স্বামীকে বেধে মারধর করে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ৫ Logo রাজশাহী কাটাখালী পৌরসভা বিএনপি’র নতুন অফিস উদ্বোধন Logo শেখ হাসিনার রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে গত ১৭ বছর রাজনীতি করেছি: টিপু Logo বালিয়াকান্দিতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন Logo শার্শায় হতদরিদ্রের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির চাল ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক ২ Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে অ্যাসিডে পোড়ানো মরদেহ উদ্ধার Logo ভেড়ামারায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু Logo বেনাপোল চেকপোষ্টে দোকানে চুরি Logo ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত Logo ফরিদপুরে মাদার অফ জুলাই উপলক্ষে আলোচনা সভা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভেড়ামারায় স্বামীকে বেধে মারধর করে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ৫

ইসমাইল হােসেন বাবু:

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল শনিবার (৩ আগস্ট) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকার কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করেছে।

 

পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত কাল শনিবার রাত সাড়ে দশটায় কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকায় ভুক্তভোগী বাড়িতে ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তাদের গতিরোধ করে পার্শ্ববর্তী একটি লিচু বাগানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বামীকে বেঁধে মারধর করে এবং স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

 

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। এছাড়া অভিযুক্তদের ধরতে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করা হয়।

স্থানীয় আমিরুল ইসলাম ও সেলিম এবং পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী ওই নারী (২৬) পেশায় একজন হোটেল কর্মচারী। ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে তার স্বামীর বাড়ি। বারো মাইল এলাকার ওই হোটেলে কাজ শেষ করে রাতে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যানযোগে তিনি বাসায় ফিরছিলেন।

এ সময় উপজেলার মসলেমপুর ফাঁকা মাঠ এলাকা থেকে একদল দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ করে। এরপর স্বামীকে মারধর করে বেঁধে রেখে ওই নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। ঘটনার পরপরই ভেড়ামারা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৫ জনকে আটক করে।

 

আটকৃতরা হলেন, মসলেমপুর গ্রামের কালু প্রামানিক (৪৬), ষোল দাগ এলাকার মুর্শিদ শেখ (৪৫), টিটু মন্ডল ওরফে টিপু (৪২), এজাজুল (৪২) এবং ভ্যানচালক রুবেল আলী (২৪)।

 

অন্যদিকে, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার স্বামীকে পুলিশ ভেড়ামারা থানায় নিয়ে আসে। এরপর রাতভর তাদের থানায় রাখা হয়। সে সময় সাংবাদিকরা কথা বলার চেষ্টা করলেও ভেড়ামারা থানা পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

 

ভুক্তভোগী নারীকে রাতেই থানায় নেওয়া হলেও সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে হয়েছে। ঘটনার দীর্ঘ সময় পরও তাকে কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো হয়নি। এ নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মামলা শেষে ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে।

 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করা হলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে ওই নারী দাবি করেছেন যে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন। তার দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পাঁচজনকে আটক করেছি।

 

এব্যাপারে বাহিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোওশান আরা বেগম জানান, ঘটনা শুনেছি স্বামী-স্ত্রী বার মাইলের একটি হোটেলে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে মধ্যে সংঘবদ্ধরা স্বামীকে মারধর করে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষন করে।

 

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।

 

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রব তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।

 

ভেড়ামারা থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি করে প্রেসরিলিজ দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী সংবাদিক ফোরাম, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি আমাদের সময় পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুল আলম স্বপন।

 

তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, ভেড়ামারায় গত শনিবার রাতে স্বামীর সামনে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করেছে ধর্ষকরা। কিন্তু ভেড়ামারা থানার ওসি ধর্ষকদের বাঁচাতে মরিয়া। ওসি আব্দুর রব তালুকদার ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে না পাঠিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে থানায় আটকে রেখেন। দেখানো হচ্ছে ধর্ষকদের আটকের নাটক ! সাংবাদিকদের দেয়া হচ্ছে না কোন তথ্য। জনদরদী রাজনৈতিক নেতারা ও তথাকথিত মানবাধিকার কর্মীরা মুখে কুলুপ এটে বসে আছে। কত টাকা ঘুষ নেয়ার কারণে আইনি ব্যবস্থা নেয়নি ওসি ? পুলিশ সুপার কেন নীরব ? এই জঘণ্য ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই । সেই সাথে ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতারসহ ওসির প্রত্যাহার দাবি জানাচ্ছি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ভেড়ামারায় স্বামীকে বেধে মারধর করে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ৫

error: Content is protected !!

ভেড়ামারায় স্বামীকে বেধে মারধর করে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ৫

আপডেট টাইম : ২৪ ঘন্টা আগে
ইসমাইল হোসেন বাবু, সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হােসেন বাবু:

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। গতকাল শনিবার (৩ আগস্ট) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকার কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের পাশে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করেছে।

 

পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত কাল শনিবার রাত সাড়ে দশটায় কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকায় ভুক্তভোগী বাড়িতে ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তাদের গতিরোধ করে পার্শ্ববর্তী একটি লিচু বাগানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বামীকে বেঁধে মারধর করে এবং স্ত্রীকে সংঘবদ্ধভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।

 

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। এছাড়া অভিযুক্তদের ধরতে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করা হয়।

স্থানীয় আমিরুল ইসলাম ও সেলিম এবং পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী ওই নারী (২৬) পেশায় একজন হোটেল কর্মচারী। ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামে তার স্বামীর বাড়ি। বারো মাইল এলাকার ওই হোটেলে কাজ শেষ করে রাতে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ভ্যানযোগে তিনি বাসায় ফিরছিলেন।

এ সময় উপজেলার মসলেমপুর ফাঁকা মাঠ এলাকা থেকে একদল দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ করে। এরপর স্বামীকে মারধর করে বেঁধে রেখে ওই নারীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। ঘটনার পরপরই ভেড়ামারা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৫ জনকে আটক করে।

 

আটকৃতরা হলেন, মসলেমপুর গ্রামের কালু প্রামানিক (৪৬), ষোল দাগ এলাকার মুর্শিদ শেখ (৪৫), টিটু মন্ডল ওরফে টিপু (৪২), এজাজুল (৪২) এবং ভ্যানচালক রুবেল আলী (২৪)।

 

অন্যদিকে, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার স্বামীকে পুলিশ ভেড়ামারা থানায় নিয়ে আসে। এরপর রাতভর তাদের থানায় রাখা হয়। সে সময় সাংবাদিকরা কথা বলার চেষ্টা করলেও ভেড়ামারা থানা পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

 

ভুক্তভোগী নারীকে রাতেই থানায় নেওয়া হলেও সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে হয়েছে। ঘটনার দীর্ঘ সময় পরও তাকে কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো হয়নি। এ নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মামলা শেষে ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য হাসপাতালে পাঠানো হবে।

 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করা হলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে ওই নারী দাবি করেছেন যে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন। তার দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পাঁচজনকে আটক করেছি।

 

এব্যাপারে বাহিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোওশান আরা বেগম জানান, ঘটনা শুনেছি স্বামী-স্ত্রী বার মাইলের একটি হোটেলে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে মধ্যে সংঘবদ্ধরা স্বামীকে মারধর করে স্ত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষন করে।

 

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।

 

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রব তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।

 

ভেড়ামারা থানার ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি করে প্রেসরিলিজ দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী সংবাদিক ফোরাম, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি আমাদের সময় পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুল আলম স্বপন।

 

তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, ভেড়ামারায় গত শনিবার রাতে স্বামীর সামনে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করেছে ধর্ষকরা। কিন্তু ভেড়ামারা থানার ওসি ধর্ষকদের বাঁচাতে মরিয়া। ওসি আব্দুর রব তালুকদার ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে না পাঠিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে থানায় আটকে রেখেন। দেখানো হচ্ছে ধর্ষকদের আটকের নাটক ! সাংবাদিকদের দেয়া হচ্ছে না কোন তথ্য। জনদরদী রাজনৈতিক নেতারা ও তথাকথিত মানবাধিকার কর্মীরা মুখে কুলুপ এটে বসে আছে। কত টাকা ঘুষ নেয়ার কারণে আইনি ব্যবস্থা নেয়নি ওসি ? পুলিশ সুপার কেন নীরব ? এই জঘণ্য ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই । সেই সাথে ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতারসহ ওসির প্রত্যাহার দাবি জানাচ্ছি।


প্রিন্ট