ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

“রান্না করা খাবার নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে ভেড়ামারার ”পরিপাটি নগরী” সংগঠন

করোনা ভাইরাসের থাবায় বিপর্যস্ত দেশ। এ মহামারি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। সারা দেশে চলমান কঠোর ‘লকডাউন’ চলছে।এমন পরিস্থিতিতে কাজ না থাকায় একরকম ক্ষুধার যন্ত্রণায় দিন পার করছেন অসহায় দিনমজুর, খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ।

করোনা ঢেউ মোকাবেলায় চলমান বিধিনিষেধ চলাকালীন পথশিশু, ছিন্নমূল, বাস্তুহারা, দুঃস্থ ও অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করছে ভেড়ামারার ”পরিপাটি নগরী”নামের সংগঠন।রেলওয়ে প্লাটফর্মে প্রতিদিন রাতে প্রায় শতাধিক মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করে।

লকডাউনকালীন প্রতিদিন রাতে ভেড়ামারা প্লাটফর্মে তাদের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিত্তবান যে কেউ চাইলে দুস্থদের খাবার বিতরণে অংশ নিতে পারেন এই ঘোষনায় অসহায়, ক্ষুধার্ত, দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের পাশে গতকাল দাড়ালেন ভেড়ামারা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ডাঃ আমিরুল ইসলাম মান্নান। তিনি একশ”কেজি উন্নতমানে চাউল ”পরিপাটি নগরী”নামের সংগঠনের কাছে উপহার হিসেবে প্রদান করেন।

এ সময় তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে দুস্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণের উদ্যোগে প্রশংসনীয়। সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে দুস্থরা উপকৃত হবে। লকডাউনকালীন সময়ে খাবার বিতরণ অব্যাহত রাখারও দাবি জানান ভেড়ামারা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ডাঃ আমিরুল ইসলাম মান্নান ও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রবীন সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন বাবু।

”পরিপাটি নগরী”র সদস্য বৃন্দরা উক্ত চাউল সহযোগীতা পেয়ে তারা তাদের ওয়েব সাইড ফেসবুক পেজে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন ভেড়ামারা উপজেলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আমাদের “একবেলা আহার” প্রকল্পে ১০০ কেজি চাউল উপহার দিয়েছেন। আমাদের ভলান্টিয়ার টিম ও অসহায় ছিন্নমূল ক্ষুধার্ত মানুষের পক্ষ থেকে তাদের জন্য অসংখ্য শুভকামনা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

উল্লেখ্য, ভেড়ামারায় লকডাউনের শুরু থেকেই অসহায়, ক্ষুধার্ত, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে ভেড়ামারার সুখ্যাতি ”পরিপাটি নগরী”নামের এই সংগঠনটি।

তারা দিনভর খাবার সংগ্রহ এবং পরে রান্না করে খাবারগুলি অসহায়, ক্ষুধার্ত, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সামনে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত এই সংগঠনের সুশিক্ষিত সদস্যবৃন্দ। এই দারুন উদ্দ্যোগটি ক্রমেই পরিনত হয় একটি সফল সংগঠনে। বর্তমানে এটি ”পরিপাটি নগরী” ভেড়ামারা নামে ব্যাপক পরিচিত ও জনপ্রিয় এবং আস্তাভাজন হয়ে উঠেছে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আসলাম উদ্দীন জানান, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই তারা এই কাজটি শুরু করেছেন। শ্রমের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা এবং প্রচেষ্টায় কাজটি এগিয়ে চলেছে। তারা তিনবেলা না পারলেও অনন্ত একবেলা ভালো খাবার পৌঁছে দেয়ার মাঝেই তারা স্বর্গীয় আনন্দ খুজে পান। তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে আমরা মাস্ক বিতরণ করছি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনগনকে সচেতন করছি।”

তাদের প্রতিদিনের মেহমানের তালিকায় গরীব দুঃখী ছাড়াও আছেন কিছু প্রতিবন্ধী, মানুষিক ভারসাম্যহীন মানুষ, যারা আগে অধিকাংশ সময়ই ক্ষুধার তাড়নায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত, রেলষ্টেশনে পড়ে থাকত। তাদের জন্য এই তরুণ উদ্দ্যোক্তারা নির্দিষ্ট খাবার স্থান ঠিক করে দিয়েছেন। রাতের বেলাতে ঘুরে ঘুরে ওই সব মানুষকে খুঁজে খাবার সরবরাহ করা হয় এবং তাদেরকে ভেড়ামারা প্লাটফর্মে জড় করে রাতে দেওয় হয় সুস্বাদু খাবার।

আগামি দিনগুলিতেও তারা তাদের এই সকল কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চায়। মহতি এই উদ্দ্যোগটি নেয়ার জন্য ভেড়ামারার সচেত মহল ”পরিপাটি নগরী”নামের সংগঠনটির সকল সদস্য বুন্দদেরকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

“রান্না করা খাবার নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে ভেড়ামারার ”পরিপাটি নগরী” সংগঠন

আপডেট টাইম : ১২:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অগাস্ট ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ :

করোনা ভাইরাসের থাবায় বিপর্যস্ত দেশ। এ মহামারি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। সারা দেশে চলমান কঠোর ‘লকডাউন’ চলছে।এমন পরিস্থিতিতে কাজ না থাকায় একরকম ক্ষুধার যন্ত্রণায় দিন পার করছেন অসহায় দিনমজুর, খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ।

করোনা ঢেউ মোকাবেলায় চলমান বিধিনিষেধ চলাকালীন পথশিশু, ছিন্নমূল, বাস্তুহারা, দুঃস্থ ও অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করছে ভেড়ামারার ”পরিপাটি নগরী”নামের সংগঠন।রেলওয়ে প্লাটফর্মে প্রতিদিন রাতে প্রায় শতাধিক মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করে।

লকডাউনকালীন প্রতিদিন রাতে ভেড়ামারা প্লাটফর্মে তাদের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিত্তবান যে কেউ চাইলে দুস্থদের খাবার বিতরণে অংশ নিতে পারেন এই ঘোষনায় অসহায়, ক্ষুধার্ত, দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের পাশে গতকাল দাড়ালেন ভেড়ামারা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ডাঃ আমিরুল ইসলাম মান্নান। তিনি একশ”কেজি উন্নতমানে চাউল ”পরিপাটি নগরী”নামের সংগঠনের কাছে উপহার হিসেবে প্রদান করেন।

এ সময় তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে দুস্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণের উদ্যোগে প্রশংসনীয়। সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে দুস্থরা উপকৃত হবে। লকডাউনকালীন সময়ে খাবার বিতরণ অব্যাহত রাখারও দাবি জানান ভেড়ামারা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ডাঃ আমিরুল ইসলাম মান্নান ও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রবীন সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন বাবু।

”পরিপাটি নগরী”র সদস্য বৃন্দরা উক্ত চাউল সহযোগীতা পেয়ে তারা তাদের ওয়েব সাইড ফেসবুক পেজে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন ভেড়ামারা উপজেলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আমাদের “একবেলা আহার” প্রকল্পে ১০০ কেজি চাউল উপহার দিয়েছেন। আমাদের ভলান্টিয়ার টিম ও অসহায় ছিন্নমূল ক্ষুধার্ত মানুষের পক্ষ থেকে তাদের জন্য অসংখ্য শুভকামনা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

উল্লেখ্য, ভেড়ামারায় লকডাউনের শুরু থেকেই অসহায়, ক্ষুধার্ত, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে ভেড়ামারার সুখ্যাতি ”পরিপাটি নগরী”নামের এই সংগঠনটি।

তারা দিনভর খাবার সংগ্রহ এবং পরে রান্না করে খাবারগুলি অসহায়, ক্ষুধার্ত, মানসিক ভারসাম্যহীন এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সামনে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত এই সংগঠনের সুশিক্ষিত সদস্যবৃন্দ। এই দারুন উদ্দ্যোগটি ক্রমেই পরিনত হয় একটি সফল সংগঠনে। বর্তমানে এটি ”পরিপাটি নগরী” ভেড়ামারা নামে ব্যাপক পরিচিত ও জনপ্রিয় এবং আস্তাভাজন হয়ে উঠেছে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আসলাম উদ্দীন জানান, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই তারা এই কাজটি শুরু করেছেন। শ্রমের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা এবং প্রচেষ্টায় কাজটি এগিয়ে চলেছে। তারা তিনবেলা না পারলেও অনন্ত একবেলা ভালো খাবার পৌঁছে দেয়ার মাঝেই তারা স্বর্গীয় আনন্দ খুজে পান। তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখে আমরা মাস্ক বিতরণ করছি ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনগনকে সচেতন করছি।”

তাদের প্রতিদিনের মেহমানের তালিকায় গরীব দুঃখী ছাড়াও আছেন কিছু প্রতিবন্ধী, মানুষিক ভারসাম্যহীন মানুষ, যারা আগে অধিকাংশ সময়ই ক্ষুধার তাড়নায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত, রেলষ্টেশনে পড়ে থাকত। তাদের জন্য এই তরুণ উদ্দ্যোক্তারা নির্দিষ্ট খাবার স্থান ঠিক করে দিয়েছেন। রাতের বেলাতে ঘুরে ঘুরে ওই সব মানুষকে খুঁজে খাবার সরবরাহ করা হয় এবং তাদেরকে ভেড়ামারা প্লাটফর্মে জড় করে রাতে দেওয় হয় সুস্বাদু খাবার।

আগামি দিনগুলিতেও তারা তাদের এই সকল কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চায়। মহতি এই উদ্দ্যোগটি নেয়ার জন্য ভেড়ামারার সচেত মহল ”পরিপাটি নগরী”নামের সংগঠনটির সকল সদস্য বুন্দদেরকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান।


প্রিন্ট