ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ডাবলিনে গ্রেটার মৌলভীবাজার অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের বার্ষিক সভা Logo নোয়াখালী চাটখিলে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীকে হত্যার হুমকি Logo খোকসায় ১ম হওয়া শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ও সকল এ+ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা Logo সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী’র ৪ শত কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক Logo বেনাপোলে যুবদলের যৌথ কর্মীসভা Logo পাংশা সরকারী কলেজে জুলাই শহিদ দিবস পালিত Logo যশোরের কেশবপুরে সমাজসেবক বদরুন্নাহার রেশমা চিরনিদ্রায় শায়িত Logo ‘জুলাই শহীদ দিবস–২৫’ উপলক্ষে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণ সভা Logo কৃষি বিজ্ঞানী ড. আলী আফজাল ফুটবল টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে মহম্মদপুর Logo কুষ্টিয়া চাঁদা তোলা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

২৮ দিনের মাথায় তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আবারও এক প্রসূতির মৃত্য‍ু!

ইসমাইল হোসেন বাবুঃ

 

কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলা তারাগুনিয়া ক্লিনিকে একই সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুজন প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

 

সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান।

 

২৮ দিনের মাথায় জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর দুটি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

 

মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।

 

মুন্নির পরিবারের দাবি, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে দৌলতপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীর বড় হাসপাতালে রেফার করার পরামর্শ দেন। পরে সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারে অবস্থিত আবুল হোসেনের মালিকানাধীন ‘তারাগুনিয়া ক্লিনিক, এ ভর্তি করা হয়। সেখানকার কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়। রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।

 

ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেন বলেন, রোগী কীভাবে মারা গেছে, সেটা চিকিৎসকরাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

 

অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা: সফর আলী বলেন, অপারেশন শুরুর আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে প্রবেশ করেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছেন। তখন দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।

 

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন,একই ক্লিনিকে ২৮ দিনের মাথায় ব্যবধানে দুটি প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন,ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়। পরে জানতে পারি, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। শুনেছি, দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করেছে।

 

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ২৮ দিনের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ডাবলিনে গ্রেটার মৌলভীবাজার অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের বার্ষিক সভা

error: Content is protected !!

২৮ দিনের মাথায় তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আবারও এক প্রসূতির মৃত্য‍ু!

আপডেট টাইম : ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
ইসমাইল হোসেন বাবু, সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হোসেন বাবুঃ

 

কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলা তারাগুনিয়া ক্লিনিকে একই সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুজন প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

 

সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান।

 

২৮ দিনের মাথায় জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর দুটি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

 

মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালায় বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।

 

মুন্নির পরিবারের দাবি, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে দৌলতপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীর বড় হাসপাতালে রেফার করার পরামর্শ দেন। পরে সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারে অবস্থিত আবুল হোসেনের মালিকানাধীন ‘তারাগুনিয়া ক্লিনিক, এ ভর্তি করা হয়। সেখানকার কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ান অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়। রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।

 

ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেন বলেন, রোগী কীভাবে মারা গেছে, সেটা চিকিৎসকরাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

 

অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা: সফর আলী বলেন, অপারেশন শুরুর আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে প্রবেশ করেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছেন। তখন দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।

 

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন,একই ক্লিনিকে ২৮ দিনের মাথায় ব্যবধানে দুটি প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন,ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়। পরে জানতে পারি, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। শুনেছি, দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করেছে।

 

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, ২৮ দিনের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।


প্রিন্ট