ইসমাইল হোসেন বাবুঃ
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় সার্চ কমিটির বৈঠককে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের গো-হাট সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এতে অন্তত তিনজন আহত হন। পাশাপাশি হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনে সার্চ কমিটির বৈঠক চলছিল। সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সার্চ কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম সরকার, আসাদুজ্জামান মিঠু ও শামসুল ইসলামসহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের একপর্যায়ে শামসুল ইসলামের সঙ্গে অপর পক্ষের বাগ্বিতণ্ডা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শেষ মুহূর্তে হঠাৎ গুলির শব্দে চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি অবস্থান নেয়।
খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে অবস্থা স্বাভাবিক করে। রাত ১২টার পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে শান্ত হয়।
সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী হামিদুল, আরিফ ও টিপু আহত হন। তাদের ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, একজনের মাথায় ও অন্যজনের কনুইয়ে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ঘটনার পর পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি গুলির খোসা ও চারটি তাজা গুলি উদ্ধার করে। তবে বুধবার সকাল পর্যন্ত কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি এবং পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিঠু অভিযোগ করে বলেন, সভা শেষে চলে যাওয়ার মুহূর্তে শামসুল ও তার লোকজন হামলা চালিয়ে গুলি করে। এতে আরিফ ও হামিদুল গুলিবিদ্ধ হন।
সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম সরকার বলেন, শামসুল দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া আচরণ করে আসছেন এবং তিনিই এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন।
অপরদিকে সার্চ কমিটির সদস্য শামসুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি সভা শেষে চলে যাওয়ার পরই পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাকে ও তার ছেলেকে টার্গেট করেই হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে হামলার অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আকাশের বাড়িতে। তার বোন চাঁদনী খাতুন জানান, হামলাকারীরা ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে গেছে। তিনি এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
ভেড়ামারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।
প্রিন্ট