ঢাকা , শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বেনাপোলে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা Logo মধুখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মেটাডোর কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি নিহত Logo যশোরে দ্যোতনা সাহিত্য পরিষদের ঈদ পুনর্মিলনীঃ ‘কবিরা সমাজকে অর্থবহ বার্তা দেন’ Logo নড়াইলে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার মাগুরার কুখ্যাত মনিরুল ও তার সহযোগীরা Logo জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবেঃ -সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম Logo কালাইয়ে লোক সংস্কৃতি পরিষদের উদ্দ্যোগে গুণীজন সন্মাননা প্রদান Logo বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন, মৃত্যু বেড়ে ১৩ Logo রূপগঞ্জে স্কুল ছাত্র জুবায়ের হত্যা মামলার দুই আসামী গ্রেফতার Logo বিএনপি নেতা প্রয়াত বাবুর স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিল Logo পাংশার মাছপাড়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে কুরবানীর গোস্ত বিতরণ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

হরিপুরে বাবার চোখের সামনেই ডুবে গেল ২ ভাই-বোন

জসীমউদ্দীন ইতিঃ

 

ঈদের ছুটিতে বাবার সঙ্গে নানার বাড়ি বেড়াতে এসে আর ফেরা হলো না দুই ভাই-বোনের। নাগর নদে বাবার চোখের সামনেই পানিতে ডুবে গেল ১১ বছরের বোন ও ৬ বছরের ভাই।

কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় বোনের নিথর দেহ উদ্ধার করা গেলেও ভাইয়ের কোনো সন্ধান মেলেনি।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৩ নম্বর বকুয়া ইউনিয়নের মানিকহাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

 

নিহত শিশুর নাম সাবিনা আক্তার (১১) এবং নিখোঁজ রয়েছে তার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন (৬)।
তাদের বাবা আমিরুল ইসলাম রংপুর থেকে পরিবার নিয়ে মানিকহাড়ি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে এসেছিলেন।

 

স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনরা জানান, আমিরুল ইসলাম পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আসেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে দুই সন্তান সাবিনা ও সাদ্দামকে নিয়ে বাড়ির পাশে নাগর নদে গোসল করতে যান তিনি।

বাবা ও সন্তানরা মিলে পানিতে নেমে আনন্দ করছিলেন। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ নদীর গভীর অংশে চলে যায় দুই শিশু। চোখের পলকে স্রোতের টানে তলিয়ে যায় তারা।

 

সন্তানদের ডুবে যেতে দেখে বাবা আমিরুল ইসলাম তাদের বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেননি।
তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে নদী থেকে উদ্ধার করলেও শিশু দুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

 

খবর পেয়ে গ্রামবাসী নদীতে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।

ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর, দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে সাবিনার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
কিন্তু ছোট ভাই সাদ্দামের কোনো খোঁজ মেলেনি।

আদরের মেয়ের মরদেহ বুকে জড়িয়ে বাবার আর্তনাদে সেখানকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।

 

৩ নম্বর বকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, “রংপুর থেকে বেড়াতে এসে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটবে, তা কেউ ভাবতে পারেনি। বাবার সামনেই দুই সন্তান পানিতে ডুবে গেল। আমরা মেয়েটির লাশ পেয়েছি, কিন্তু ছেলেটি এখনো নিখোঁজ।”

 

এ বিষয়ে হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মন্ডল বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের একটি পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অন্য শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য রংপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে।”

 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, নিখোঁজ শিশু সাদ্দামকে উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি চলছিল।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বেনাপোলে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যা

error: Content is protected !!

হরিপুরে বাবার চোখের সামনেই ডুবে গেল ২ ভাই-বোন

আপডেট টাইম : ০৬:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
জসীমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি :

জসীমউদ্দীন ইতিঃ

 

ঈদের ছুটিতে বাবার সঙ্গে নানার বাড়ি বেড়াতে এসে আর ফেরা হলো না দুই ভাই-বোনের। নাগর নদে বাবার চোখের সামনেই পানিতে ডুবে গেল ১১ বছরের বোন ও ৬ বছরের ভাই।

কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় বোনের নিথর দেহ উদ্ধার করা গেলেও ভাইয়ের কোনো সন্ধান মেলেনি।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৩ নম্বর বকুয়া ইউনিয়নের মানিকহাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

 

নিহত শিশুর নাম সাবিনা আক্তার (১১) এবং নিখোঁজ রয়েছে তার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন (৬)।
তাদের বাবা আমিরুল ইসলাম রংপুর থেকে পরিবার নিয়ে মানিকহাড়ি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে ঈদ করতে এসেছিলেন।

 

স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনরা জানান, আমিরুল ইসলাম পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আসেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে দুই সন্তান সাবিনা ও সাদ্দামকে নিয়ে বাড়ির পাশে নাগর নদে গোসল করতে যান তিনি।

বাবা ও সন্তানরা মিলে পানিতে নেমে আনন্দ করছিলেন। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ নদীর গভীর অংশে চলে যায় দুই শিশু। চোখের পলকে স্রোতের টানে তলিয়ে যায় তারা।

 

সন্তানদের ডুবে যেতে দেখে বাবা আমিরুল ইসলাম তাদের বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন, কিন্তু পারেননি।
তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে নদী থেকে উদ্ধার করলেও শিশু দুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

 

খবর পেয়ে গ্রামবাসী নদীতে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।

ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর, দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে সাবিনার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
কিন্তু ছোট ভাই সাদ্দামের কোনো খোঁজ মেলেনি।

আদরের মেয়ের মরদেহ বুকে জড়িয়ে বাবার আর্তনাদে সেখানকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। পুরো গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া।

 

৩ নম্বর বকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, “রংপুর থেকে বেড়াতে এসে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটবে, তা কেউ ভাবতে পারেনি। বাবার সামনেই দুই সন্তান পানিতে ডুবে গেল। আমরা মেয়েটির লাশ পেয়েছি, কিন্তু ছেলেটি এখনো নিখোঁজ।”

 

এ বিষয়ে হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকারিয়া মন্ডল বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের একটি পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অন্য শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য রংপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে।”

 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, নিখোঁজ শিশু সাদ্দামকে উদ্ধারে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি চলছিল।


প্রিন্ট