আলিফ হোসেনঃ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজ সম্পন্ন প্রার্থীদের প্রাধান্য দেবে বিএনপি। রাজশাহী-১ আসনে পরিচ্ছন্ন ও বিতর্কমুক্ত ব্যক্তি ইমেজ সম্পন্ন নেতৃত্ব হিসেবে আলোচনায এগিয়ে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও সাবেক স্বরাস্ট্র সচিব এসএম জহুরুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অবঃ) শরিফ উদ্দিন ও ব্যারিস্টার মাহাফুজুর রহমান মিলন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই তিনজনকে নিয়েই মুলত নির্বাচনী আলোচনা ঘুরপাঁক খাচ্ছে। তাদের কর্মী-সমর্থকেরা নিজ নিজ প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরে চায়ের কাপে ঝড় তুলছে।এদিকে গত ১৭ বছর মানুষ যা দেখেছেন তাতে ব্যবসায়ীদের প্রতি এই জনপদের সাধারণ মানুষের কোনো আস্থা-ভরসা নাই।
.
স্থানীয়রা জানান, রাজশাহী-১ আসনে পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজের প্রার্থী হিসেবে যারা আলোচনায় রয়েছেন এদের কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই, সবাই পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজের অধিকারী। এরা কখানো কোনদিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করেননি। আদর্শিক ও বিএনপির মুল ধারার সঙ্গে থেকে বিএনপির রাজনীতিতে অবদান রেখে চলেছেন।
.
সাবেক সচিব এসএম জহুরুল ইসলাম বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা, তিনি নির্বাচনে সহকারী ও রির্টানিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনসহ প্রশাসনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।এমনকি দেশে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা প্রতিরোধে অগ্রণী ভুমিকা রেখেছেন। তিনি দীর্ঘ কর্মজীবনে নেপথ্যে থেকে বিএনপির রাজনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখেছেন।এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের সামরিক সচিব।অন্যদিকে ব্যারিষ্টার মাহাফুজুর রহমান মিলন একজন আদর্শিক নেতৃত্ব। তিনি তার কর্মজীবন শুরু থেকে এখন পর্যন্ত্য বিএনপির যতো নেতাকর্মীর মামলা-মোকদ্দমার দেখভাল ও আইনি সহযোগীতা করেছেন,তার সংখ্যা কয়েক হাজার। এই তিন নেতৃত্বই নিজ নিজ জায়গায় সফল।
.
সুত্র জানায়,ইতমধ্যে বিএনপি মাঠপর্যায়ে আদর্শিক,নিবেদিতপ্রাণ ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজ সম্পন্ন প্রার্থীর সন্ধানে মাঠে নেমেছেন। বিগত ১৭ বছর যারা নানা কৌশলে আওয়ামী লীগে অর্থের যোগান দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা রেখে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ ও নিজের পাশাপাশি ব্যবসা-বানিজ্য নিরাপদ রেখে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।কিন্ত্ত গণঅভ্যুত্থানের পর আবার খোলস পাল্টিয়ে রাতারাতি বিএনপি নেতা সেজে মাঠ নামতে চাইছে বা নেমেছে বা যাদের রাজনৈতিক জীবনটাই পালাবলের এমন নেতারা কোনোভাবেই বিএনপির দলীয মনোনযন পাবেন না বলে তৃণমুল নেতাকর্মীদের মাঝে জোর আলোচনা চলছে।
.
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছে, রাজশাহী-১ আসনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে এমন আলোচনা বা প্রচারের পর পরই কারো কারো চোখে মুখে হতাশার ছাপ ফুটে উঠেছে। কেউ মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে, কারো মাঠ ছাড়া এখন সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছে তৃণমুল।
.
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বিগত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের সুবিধা নেয়া, নানা অপকর্মে জড়িত বা বিতর্কিত কোনো ব্যবসায়ী বা আমলা এমন কাউকে কোনো ভাবেই মনোনয়ন দেবে না দলটি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এটা নিয়ে আসনভিত্তিক কাজ শুরু করেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দল থেকে যাদের চূড়ান্ত প্রার্থী করা হয়েছিল, যারা দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত, বিশেষ করে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর-পরবর্তী আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পৃক্ত ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজধারীদের দিয়ে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার খসড়া তৈরি করা হবে।
.
আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যে এই খসড়া তালিকা তৈরির কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে। বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু না করলেও গত ফেব্রুয়ারিতে দলের বর্ধিত সভা থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তৃণমূল নেতাদের নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করবে দলটি বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
.
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ভাষ্য, বিএনপির নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হলে আদর্শিক ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজ সম্পন্ন প্রার্থী হিসেবে মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন, সাবেক স্বরাস্ট্র সচিব এসএম জহুরুল ইসলাম ও ব্যারিষ্টার মাহাফুজুর রহমান মিলনের মধ্যে তীব্র প্রতিদন্দিতা হবে। যদিও বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছে,রাজশাহী-১ আসনে অপ্রতিদন্দী নেতৃত্ব প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক পরিবারের কোনো বিকল্প নাই, সেটা বিএনপিবিরোধীরাও কল্পনা করেন না।
.
এদিকে বিএনপি এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে ‘গ্রীণ সিগন্যাল’ না দিলেও দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বসে নেই। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নানা ভাবে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।এবিষয়ে সাবেক সচিব এসএম জহুরুল ইসলাম বলেন,দলের নীতিনির্ধারণী মহল যদি মনে করেন তাকে প্রার্থী হতে হবে তাহলে তিনি প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন।এবিষয়ে ব্যারিষ্টার মাহাফুজুর রহমান মিলন বলেন, তিনি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন, তবে দলীয় সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত।
.
এবিষয়ে তানোর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হযরত আলী মাষ্টার বলেন, বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। তিনি বলেন,যে কেউ দলের মনোনয়ন চাইতেই পারেন, তবে আমাদের নেতা মেজর জেনারেল (অবঃ) শরিফ উদ্দিন এখানে মনোনয়ন পাবেন এটা প্রায় নিশ্চিত এটা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহের অবকাশ নাই। তিনি বলেন, তাদের টার্গেট দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে তাদের নেতার বিজয় নিশ্চিত করা, তাদের নিরঙ্কুশ বিজয় হবে ইনশাল্লাহ।
প্রিন্ট