ঢাকা , শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আটা সরবরাহ নিয়ে মিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় ওএমএস ডিলারের দোকানে ক্রেতাসাধারণের উপচে পড়া ভিড়।

রাজবাড়ী জেলার পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমে ক্রেতাদের আগ্রহ বেড়েছে। চাল-আটা ক্রয়ে ডিলারের দোকানে উপচে পড়া ভিড় লক্ষণীয়। কিন্তু ওএমএস ডিলারের দোকানে আটা সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ মিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমের প্রথম দিন গত ২৫ জুলাই আটা ছাড়াই শুধুমাত্র চাল বিক্রি করেছেন ডিলাররা। ওইদিন অজ্ঞাত কারণে মিল কর্তৃপক্ষ আটা সরবরাহ করে নাই।

মিল কর্তৃপক্ষ ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাইয়ের জন্য পাংশার ৪জন ডিলারের অনুকূলে প্রথম চালান হিসেবে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের নিমিত্তে ২৫ জুলাই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পত্র প্রেরণ করে। পাংশায় ২৬ জুলাই থেকে চালের সাথে আটা বিক্রি শুরু হয়।

এদিকে, বুধবার ২৮ জুলাই পাংশার একটি ডিলারের দোকানে আটা ছাড়াই শুধু মাত্র চাল বিক্রি করার বিষয়টি জানাজানি হলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে রাজবাড়ীর সাগর রাইস মিল কর্তৃপক্ষের সাথে পাংশার খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন।

কাগজকলমে পাংশার ৪জন ডিলারের অনুকূলে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের তথ্য থাকলেও মূলত পাংশায় তিন দিনের জন্য ১১ মেট্রিক টন আটা সরবরাহ করার বিষয়টি এক পর্যায়ে স্বীকার করেন মিল কর্তৃপক্ষ। ফলে ১২ মেট্রিক টন আটার স্থলে কার্যত ১১ মেট্রিক টন আটা সরবরাহ করার বিষয়ে মিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। এটি ভুল নাকি কোনো কারসাজি তা খতিয়ে দেখা জরুরী বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সাগর রাইস মিল কর্তৃপক্ষের সাথে পাংশার মাছপাড়ার একটি রাইস মিলের মালিকের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। দিলীপ নামের ওই মিল মালিক ও চাল ব্যবসায়ী পাংশার ওএমএস কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত এবং ডিলারদের আটা সরবরাহের বিষয়টি তিনিই দেখভাল করেন।

এ ব্যাপারে পাংশার ওসি-এলএসডি মোহাম্মদ ইব্রাহীম আদমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, ২৫ জুলাই পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমের প্রথম দিন মিল কর্তৃপক্ষ আটা সরবরাহ করতে পারেন নাই। তাদের ২৫ জুলাই দেওয়া চিঠিতে পাংশার ৪জন ডিলারের দোকানে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

কিন্তু বুধবার দুপুরে মনিটরিং করতে গিয়ে দেখা যায় একজন ডিলারের দোকানে শুধুমাত্র চাল বিক্রি হচ্ছে। তখন মিল কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। সরকারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহীম আদম আরও বলেন, মিল কর্তৃপক্ষ সরাসরি ওএমএস’র ডিলারের দোকানে আটা সরবরাহ করবেন।

খাদ্য গুদামের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, প্রকৃত পক্ষে মিল কর্তৃপক্ষ পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমে আটা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রথম চালানে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের স্থলে ১১ মেট্রিক টন আটা সরবরাহে কোনো কারসাজি আছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না।

প্রসঙ্গতঃ করোনা ভাইরাসের চলমান সংক্রমণের কারণে আরোপিত বিধি নিষেধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তা প্রদানের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের আওতায় পাংশা পৌরসভার অভ্যন্তরে ওএমএস’র বিশেষ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কার্যক্রম বাস্তবায়নে অরুন কুমার দাস, ওয়াহিদ হাসান, নাঈমুল হাকিম (রনো) ও গোবিন্দ চন্দ্র কুন্ডু নামের চারজন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।

শুক্রবার বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্রতিদিন স্বাস্থ্য বিধি মেনে একজন ক্রেতা সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি করে চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি করে আটা ক্রয় করতে পারবেন। ২৫ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ওএমএস কার্যক্রম চলবে ৭ আগস্ট পর্যন্ত।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

হরিপরে বিএসএফ এর গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত

error: Content is protected !!

আটা সরবরাহ নিয়ে মিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

আপডেট টাইম : ০৯:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১
মোঃ মোক্তার হোসেন, পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধিঃ :

রাজবাড়ী জেলার পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমে ক্রেতাদের আগ্রহ বেড়েছে। চাল-আটা ক্রয়ে ডিলারের দোকানে উপচে পড়া ভিড় লক্ষণীয়। কিন্তু ওএমএস ডিলারের দোকানে আটা সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ মিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমের প্রথম দিন গত ২৫ জুলাই আটা ছাড়াই শুধুমাত্র চাল বিক্রি করেছেন ডিলাররা। ওইদিন অজ্ঞাত কারণে মিল কর্তৃপক্ষ আটা সরবরাহ করে নাই।

মিল কর্তৃপক্ষ ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাইয়ের জন্য পাংশার ৪জন ডিলারের অনুকূলে প্রথম চালান হিসেবে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের নিমিত্তে ২৫ জুলাই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পত্র প্রেরণ করে। পাংশায় ২৬ জুলাই থেকে চালের সাথে আটা বিক্রি শুরু হয়।

এদিকে, বুধবার ২৮ জুলাই পাংশার একটি ডিলারের দোকানে আটা ছাড়াই শুধু মাত্র চাল বিক্রি করার বিষয়টি জানাজানি হলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে রাজবাড়ীর সাগর রাইস মিল কর্তৃপক্ষের সাথে পাংশার খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করেন।

কাগজকলমে পাংশার ৪জন ডিলারের অনুকূলে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের তথ্য থাকলেও মূলত পাংশায় তিন দিনের জন্য ১১ মেট্রিক টন আটা সরবরাহ করার বিষয়টি এক পর্যায়ে স্বীকার করেন মিল কর্তৃপক্ষ। ফলে ১২ মেট্রিক টন আটার স্থলে কার্যত ১১ মেট্রিক টন আটা সরবরাহ করার বিষয়ে মিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। এটি ভুল নাকি কোনো কারসাজি তা খতিয়ে দেখা জরুরী বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সাগর রাইস মিল কর্তৃপক্ষের সাথে পাংশার মাছপাড়ার একটি রাইস মিলের মালিকের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। দিলীপ নামের ওই মিল মালিক ও চাল ব্যবসায়ী পাংশার ওএমএস কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত এবং ডিলারদের আটা সরবরাহের বিষয়টি তিনিই দেখভাল করেন।

এ ব্যাপারে পাংশার ওসি-এলএসডি মোহাম্মদ ইব্রাহীম আদমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, ২৫ জুলাই পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমের প্রথম দিন মিল কর্তৃপক্ষ আটা সরবরাহ করতে পারেন নাই। তাদের ২৫ জুলাই দেওয়া চিঠিতে পাংশার ৪জন ডিলারের দোকানে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

কিন্তু বুধবার দুপুরে মনিটরিং করতে গিয়ে দেখা যায় একজন ডিলারের দোকানে শুধুমাত্র চাল বিক্রি হচ্ছে। তখন মিল কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হয়। সরকারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহীম আদম আরও বলেন, মিল কর্তৃপক্ষ সরাসরি ওএমএস’র ডিলারের দোকানে আটা সরবরাহ করবেন।

খাদ্য গুদামের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, প্রকৃত পক্ষে মিল কর্তৃপক্ষ পাংশায় ওএমএস কার্যক্রমে আটা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। প্রথম চালানে ১২ মেট্রিক টন আটা সরবরাহের স্থলে ১১ মেট্রিক টন আটা সরবরাহে কোনো কারসাজি আছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না।

প্রসঙ্গতঃ করোনা ভাইরাসের চলমান সংক্রমণের কারণে আরোপিত বিধি নিষেধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষকে সহায়তা প্রদানের জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের আওতায় পাংশা পৌরসভার অভ্যন্তরে ওএমএস’র বিশেষ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কার্যক্রম বাস্তবায়নে অরুন কুমার দাস, ওয়াহিদ হাসান, নাঈমুল হাকিম (রনো) ও গোবিন্দ চন্দ্র কুন্ডু নামের চারজন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।

শুক্রবার বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্রতিদিন স্বাস্থ্য বিধি মেনে একজন ক্রেতা সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি করে চাল ও ১৮ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি করে আটা ক্রয় করতে পারবেন। ২৫ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ওএমএস কার্যক্রম চলবে ৭ আগস্ট পর্যন্ত।


প্রিন্ট