ঢাকা , শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কাশিমপুর কারাগারে ঠাঁই হল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী’র Logo চট্টগ্রামের পটিয়ার পাহাড়ি এলাকা থেকে ৭ শিক্ষার্থী অপহ্রতঃ মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্ত Logo নড়াইলের লোহাগড়ার কাউলিডাঙ্গা বিলে যুবক খুন Logo অভিযুক্ত দুইজনের মধ্যে গ্রেপ্তার এক Logo হত্যা মামলায় কারাগারে আইভী Logo রাজবাড়ীতে পুড়ে গেছে ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টার Logo গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাননীয় স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মহোদয়ের দিনাজপুর জেলায় আগমন Logo নানান নাটকীয়তার পর ভোরে আ.লীগ নেত্রী আইভি গ্রেফতার Logo তানোরে ফসলী জমি হ্রাস খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে আইনজীবীর গলিত মরদেহ উদ্ধার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পটিয়ার ঐতিহ্যবাহী গৌরাঙ্গর মিষ্টি

প্রদীপ্ত চক্রবর্তীঃ

চুলা থেকে নামিয়ে ভান্ডারে রাখতেই হুড়াহুড়ি লেগে গেল । জটলা ঠেলে হাত বাড়িয়ে কার আগে কে কিনবেন , খাবেন তা নিয়ে চলছে কিছুটা বাগ বিতন্ডা । মিষ্টিটা গরম তাই কিনতে , খেতে হবে তাড়াতাড়ি । ঠান্ডা হলে উধাও হবে আসল স্বাদ । চট্টগ্রাম – কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া কমল মুন্সী হাটের ঐতিহ্যবাহী গৌরাঙ্গ মিষ্টি বিতান এর রোজকার চিত্রটা এমনই । জিভে স্বাদ লেগে থাকা মজাদার এ মিষ্টির রয়েছে পুরনো ঐতিহ্য । রয়েছে দারুণ খ্যাতি।

.

প্রতিদিন সকালে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গোয়ালাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় খাঁটি দুধ । সেই দুধ থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে তৈরি হয় মিষ্টি । প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কেজি দুধ আসে গৌরাঙ্গ মিষ্টি বিতানের রান্না ঘরে । যেখান থেকে ছানা তৈরি হয় । ছানা তৈরি করার আগে দুধ চুলায় ফুটানো হয় । ফুটানোর পর তাতে সিরকা বা ভিনেগার দেওয়া হয় । তবে পুরনো রীতি অনুযায়ী তারা ব্যবহার করেন ছানার পানি । ঠান্ডা হয়ে গেলে এই দুধের পানি আর ছানা আলাদা হয়ে যায় । একটু পর সেগুলো পরিষ্কার সুতি কাপড় বেঁধে পানি ঝরাতে দেওয়া হয় । পুরো পানি ঝরে গেলে তৈরি হয় ছানা । হাতের তালুতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছানা থেকে গোলাকার অবয়ব তৈরি করে তা চুলার শিরায় ছেড়ে দেওয়া হয় । ব্যস ! তৈরি হয়ে গেল রসগোল্লা , কালোজাম , চমচম এর মত সুস্বাদু মিষ্টি।

.

গৌরাঙ্গ মিষ্টি বিতানের স্বত্বাধিকারী সুমন দাস দোকানের ঐতিহ্য সম্পর্কে বলেন , ১৯৭৩ সালে তার ঠাকুর দাদা সারদা দাস চট্টগ্রাম শহরের কোরবানীগঞ্জের এক মিষ্টির দোকান থেকে কাজ শিখে এসে এখানে দোকান দেন । পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে সারদা দাসের মৃত্যুর পর তার বাবা গৌরাঙ্গ দাস এই দোকানের হাল ধরেন । ২০১২ সালে গৌরাঙ্গ দাসের মৃত্যুর পর থেকে সুমন দাস এই দোকান পরিচালনা করা আসছেন ।

.

তিনি বলেন আমাদের মিষ্টির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আমরা সবসময়ই নির্ভেজাল ছানার মিষ্টি তৈরি করে থাকি । ৬ কেজি দুধ থেকে ১ কেজি ছানা হয় । ১ কেজি ছানা দিয়ে সাড়ে ৩ কেজি মিষ্টি তৈরি হয় । যে কোন উৎসব ,অনুষ্ঠানে প্রয়োজন হয় গৌরাঙ্গের মিষ্টি ‘র । অনুষ্ঠান উৎসবে অতিথি আপ্যায়ন এই গৌরাঙ্গর মিষ্টি ছাড়া কল্পনাই করা যায় না । তাইতো সবাই বলে গৌরাঙ্গর মিষ্টি অপূর্ব সৃষ্টি ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কাশিমপুর কারাগারে ঠাঁই হল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী’র

error: Content is protected !!

পটিয়ার ঐতিহ্যবাহী গৌরাঙ্গর মিষ্টি

আপডেট টাইম : ০২:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
প্রদীপ্ত চক্রবর্তী, পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :

প্রদীপ্ত চক্রবর্তীঃ

চুলা থেকে নামিয়ে ভান্ডারে রাখতেই হুড়াহুড়ি লেগে গেল । জটলা ঠেলে হাত বাড়িয়ে কার আগে কে কিনবেন , খাবেন তা নিয়ে চলছে কিছুটা বাগ বিতন্ডা । মিষ্টিটা গরম তাই কিনতে , খেতে হবে তাড়াতাড়ি । ঠান্ডা হলে উধাও হবে আসল স্বাদ । চট্টগ্রাম – কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া কমল মুন্সী হাটের ঐতিহ্যবাহী গৌরাঙ্গ মিষ্টি বিতান এর রোজকার চিত্রটা এমনই । জিভে স্বাদ লেগে থাকা মজাদার এ মিষ্টির রয়েছে পুরনো ঐতিহ্য । রয়েছে দারুণ খ্যাতি।

.

প্রতিদিন সকালে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গোয়ালাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় খাঁটি দুধ । সেই দুধ থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে তৈরি হয় মিষ্টি । প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কেজি দুধ আসে গৌরাঙ্গ মিষ্টি বিতানের রান্না ঘরে । যেখান থেকে ছানা তৈরি হয় । ছানা তৈরি করার আগে দুধ চুলায় ফুটানো হয় । ফুটানোর পর তাতে সিরকা বা ভিনেগার দেওয়া হয় । তবে পুরনো রীতি অনুযায়ী তারা ব্যবহার করেন ছানার পানি । ঠান্ডা হয়ে গেলে এই দুধের পানি আর ছানা আলাদা হয়ে যায় । একটু পর সেগুলো পরিষ্কার সুতি কাপড় বেঁধে পানি ঝরাতে দেওয়া হয় । পুরো পানি ঝরে গেলে তৈরি হয় ছানা । হাতের তালুতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছানা থেকে গোলাকার অবয়ব তৈরি করে তা চুলার শিরায় ছেড়ে দেওয়া হয় । ব্যস ! তৈরি হয়ে গেল রসগোল্লা , কালোজাম , চমচম এর মত সুস্বাদু মিষ্টি।

.

গৌরাঙ্গ মিষ্টি বিতানের স্বত্বাধিকারী সুমন দাস দোকানের ঐতিহ্য সম্পর্কে বলেন , ১৯৭৩ সালে তার ঠাকুর দাদা সারদা দাস চট্টগ্রাম শহরের কোরবানীগঞ্জের এক মিষ্টির দোকান থেকে কাজ শিখে এসে এখানে দোকান দেন । পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে সারদা দাসের মৃত্যুর পর তার বাবা গৌরাঙ্গ দাস এই দোকানের হাল ধরেন । ২০১২ সালে গৌরাঙ্গ দাসের মৃত্যুর পর থেকে সুমন দাস এই দোকান পরিচালনা করা আসছেন ।

.

তিনি বলেন আমাদের মিষ্টির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আমরা সবসময়ই নির্ভেজাল ছানার মিষ্টি তৈরি করে থাকি । ৬ কেজি দুধ থেকে ১ কেজি ছানা হয় । ১ কেজি ছানা দিয়ে সাড়ে ৩ কেজি মিষ্টি তৈরি হয় । যে কোন উৎসব ,অনুষ্ঠানে প্রয়োজন হয় গৌরাঙ্গের মিষ্টি ‘র । অনুষ্ঠান উৎসবে অতিথি আপ্যায়ন এই গৌরাঙ্গর মিষ্টি ছাড়া কল্পনাই করা যায় না । তাইতো সবাই বলে গৌরাঙ্গর মিষ্টি অপূর্ব সৃষ্টি ।


প্রিন্ট