আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর তানোরের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। মাঠে মাঠে বোরো ধানের সোনালী শীষে কৃষকের স্বপ্ন যেনো দোল খাচ্ছে। বৈশাখের খরতাপ ও রোদে আগাম জাতের বোরো ধানের শীষে পাক ধরেছে। আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে ধান কাটা। এবার কৃষকরা আশায় বুক বেঁধেছেন, বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাবেন। তানোর উপজেলায় প্রধান ফসল বোরো ধান চাষ।শীতের শুরুতে বোরো চাষ শুরু হয়েছে।
.
এছাড়াও আলু উত্তোলনের পরপরই সেসব জমিতে বোরো চাষ করা হচ্ছে। এবার হাইব্রিড, উফশী এবং স্থানীয় জাতের ধান চাষ হচ্ছে। তানোর পৌর এলাকার কৃষক বাবু, হাবিবুর ও ফারুক হোসেন জানান, এবার ধানে ভালোই পাক ধরেছে, আবহাওয়া এখনো অনুকূলে আছে। ধানে তেমন কোনো রোগবালাইও নাই। আমরা আশা করছি এবার বোরো ধানের ফলন যেমন ভালো হবে, তেমনি বাজারেও ভালো দাম পাওয়া যাবে। কৃষকেরা জানান, এবার সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ ও ম্রমিকের মজুরি বেশী হওয়ায় বোরো চাষে খরচ বেড়েছে।
.
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানি ধরে রাখার লক্ষে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) চলতি মৌসুমে সেচ নির্ভর বোরো চাষে একটা গভীর নলকূপ ৯৮০ ঘণ্টার বেশি চালাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে বছরে একটা গভীর নলকূপ চলবে এক হাজার ৯৬০ ঘণ্টা।বিএমডিএর নতুন এ সিদ্ধান্তের কারণে বরেন্দ্রভূমির রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার পানি সংকট সম্পন্ন এলাকাগুলোতে বোরো চাষ হ্রাস পেয়েছে।
.
জানা গেছে, তানোরে চলতি মৌসুমে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৪৫০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিকটন।কিন্ত্ত লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশী জমিতে বোরো
চাষ হয়েছে।
.
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, বোরো ধানের উৎপাদনে খরচ কমাতে পরিমিত সেচ ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এছাড়াও পোকামাকড় দমনে কীটনাশক ব্যবহার কম করে জৈব পদ্ধতিতে পোকামাকড় দমনে গুরুত্ব দিতে হবে।
.
তিনি আরো বলেন, বোরো আবাদে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সুষম সার ব্যবহার, পার্চিং পদ্ধতিতে ও লাইন করে ধান লাগালে বোরো ধানের ফলন বৃদ্ধি হয় কৃষকদের এসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ বছর বোরো আবাদ ও ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
প্রিন্ট