ঢাকা , শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বালিয়াকান্দিতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবক নিহত Logo শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা: হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড, খালাস ৩ Logo সংযুক্ত আরব আমিরাতে আ.লীগ নেতাদের সম্পদের পাহাড়, টাকা ফেরত দিতে ইতিবাচক সাড়া Logo ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে লিবিয়ায় পাঠাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র Logo ছাড়া পেয়ে সাংবাদিকদের যা বললেন উপদেষ্টার মাথায় বোতল ছুড়ে মারা সেই শিক্ষার্থী Logo গোমস্তাপুরে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু Logo সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক ‌ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ Logo কিশোর গ্যাংদের কোপে দুই কিশোর নিহতের ঘটনার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল Logo ৪০ রোহিঙ্গাকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে ভারত! Logo মঙ্গলকোট থানার লাখুড়িয়ায় শান্তির খোঁজে বসছে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ার খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দুদুক অভিযানঃ নৈশপ্রহরীর পকেট থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

 

কুষ্টিয়ার খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দুদুক অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় দুদকের টিম তল্লাশি করে কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী হারুনার রশিদ হারুনের পকেট থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। হারুন উক্ত টাকার উৎস সম্পর্কে দাবি করেছেন যে, টাকাগুলো তার ব্যক্তিগত ব্যবসা করার টাকা। তার কাছে টাকার উৎসের প্রমাণ চেয়েছে দুদক।

.

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে দুদকের সমন্বিত কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। কুষ্টিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন।

.

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে কিছু অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা অফিসের নৈশপ্রহরীর কাছে ৪০ হাজার টাকা পেয়েছি। উনি ব্যক্তিগত ব্যবসার টাকা বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের এ অভিযান চলমান থাকবে।

.

তিনি আরও বলেন, খোকসার সাব-রেজিস্ট্রার সপ্তাহে একদিন ডিউটি করেন। সেবাগ্রহীতাদের কাছে থেকে এই অফিসের স্টাফরা যে ফি আদায় করেন, সেগুলো দৈনন্দিন রেকর্ড করা হয় না। কিছু দিন পরে সেগুলো রেকর্ড করা হয়। উনাদের নির্দেশনা দিয়েছি যে, যখন টাকা কালেকশন করবেন তখনই রেকর্ড করবেন এবং চালানটা জমা দেবেন। আমরা রেজিস্ট্রির ফটোকপি চেয়েছি, রেকর্ডপত্র চেয়েছি। পরবর্তীতে আমরা কমিশন বরাবর রিপোর্ট দাখিল করব।

.

কুষ্টিয়ার খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। এই অফিসটি ঘুষ, অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। দীর্ঘদিন ধরে দলিল লেখক, তাদের লোকজন, স্ট্যাম্প ভেন্ডারের মালিক ও স্থানীয় প্রভাবশালী বেশ কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি চক্র রমরমা ঘুষ বাণিজ্য করে আসছে। ঘুষের টাকার ভাগ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পকেটে চলে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

.

আরও অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দলিল রেজিস্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রতি দলিল রেজিস্ট্রি করার জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। নামের ভুল থাকলে ঘুষ দিতে হয়। দলিলের দাম বেশি নেওয়া হয়। এভাবে প্রতিটি সেবার জন্য পদে পদে ঘুষ আদায় করা হয়।

.

এ বিষয়ে খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী হারুনার রশিদ হারুন বলেন, আমি অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত না। আমার পকেটে ব্যক্তিগত ব্যবসার ৪০ হাজার টাকা ছিল। সেটা দুদক উদ্ধার করেছে। সেই টাকা ঘুষের টাকা না।

.

আপনি নৈশপ্রহরী, দিনের বেলায় অফিস করেন কেন? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গরিব মানুষ দিনের বেলায় অফিসে এসে কামকাজ করি। মুহুরি দলিল লেখকরা কিছু টাকা-পয়সা দেন। বাড়তি কিছু টাকা পাই এ জন্যই দিনের বেলায় অফিস করি।

.

সাব-রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিক কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে কর্মরত। খোকসা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে সপ্তাহে একদিন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।

.

অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে খোকসার সাব-রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিক বলেন, অফিসের বাইরে কী হয়, বাইরে কে কী নেন, সে ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। তবে অফিস ও অফিসের স্টাফরা সরকারি ফির বাইরে একটি টাকাও নেয় না। যে টাকাটা নেওয়া হয়, সেই টাকার রশিদও দেওয়া হয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

বালিয়াকান্দিতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবক নিহত

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ার খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দুদুক অভিযানঃ নৈশপ্রহরীর পকেট থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার

আপডেট টাইম : ০৯:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
ইসমাইল হােসেন বাবু, সিনিয়র ষ্টাফ রিপাের্টার :

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

 

কুষ্টিয়ার খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দুদুক অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় দুদকের টিম তল্লাশি করে কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী হারুনার রশিদ হারুনের পকেট থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। হারুন উক্ত টাকার উৎস সম্পর্কে দাবি করেছেন যে, টাকাগুলো তার ব্যক্তিগত ব্যবসা করার টাকা। তার কাছে টাকার উৎসের প্রমাণ চেয়েছে দুদক।

.

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরের দিকে দুদকের সমন্বিত কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। কুষ্টিয়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বুলবুল আহমেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন।

.

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে কিছু অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা অফিসের নৈশপ্রহরীর কাছে ৪০ হাজার টাকা পেয়েছি। উনি ব্যক্তিগত ব্যবসার টাকা বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের এ অভিযান চলমান থাকবে।

.

তিনি আরও বলেন, খোকসার সাব-রেজিস্ট্রার সপ্তাহে একদিন ডিউটি করেন। সেবাগ্রহীতাদের কাছে থেকে এই অফিসের স্টাফরা যে ফি আদায় করেন, সেগুলো দৈনন্দিন রেকর্ড করা হয় না। কিছু দিন পরে সেগুলো রেকর্ড করা হয়। উনাদের নির্দেশনা দিয়েছি যে, যখন টাকা কালেকশন করবেন তখনই রেকর্ড করবেন এবং চালানটা জমা দেবেন। আমরা রেজিস্ট্রির ফটোকপি চেয়েছি, রেকর্ডপত্র চেয়েছি। পরবর্তীতে আমরা কমিশন বরাবর রিপোর্ট দাখিল করব।

.

কুষ্টিয়ার খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। এই অফিসটি ঘুষ, অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। দীর্ঘদিন ধরে দলিল লেখক, তাদের লোকজন, স্ট্যাম্প ভেন্ডারের মালিক ও স্থানীয় প্রভাবশালী বেশ কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি চক্র রমরমা ঘুষ বাণিজ্য করে আসছে। ঘুষের টাকার ভাগ অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পকেটে চলে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

.

আরও অভিযোগ রয়েছে, সিন্ডিকেটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দলিল রেজিস্ট্রি করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চক্রটি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রতি দলিল রেজিস্ট্রি করার জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। নামের ভুল থাকলে ঘুষ দিতে হয়। দলিলের দাম বেশি নেওয়া হয়। এভাবে প্রতিটি সেবার জন্য পদে পদে ঘুষ আদায় করা হয়।

.

এ বিষয়ে খোকসা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী হারুনার রশিদ হারুন বলেন, আমি অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত না। আমার পকেটে ব্যক্তিগত ব্যবসার ৪০ হাজার টাকা ছিল। সেটা দুদক উদ্ধার করেছে। সেই টাকা ঘুষের টাকা না।

.

আপনি নৈশপ্রহরী, দিনের বেলায় অফিস করেন কেন? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গরিব মানুষ দিনের বেলায় অফিসে এসে কামকাজ করি। মুহুরি দলিল লেখকরা কিছু টাকা-পয়সা দেন। বাড়তি কিছু টাকা পাই এ জন্যই দিনের বেলায় অফিস করি।

.

সাব-রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিক কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে কর্মরত। খোকসা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে সপ্তাহে একদিন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।

.

অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে খোকসার সাব-রেজিস্ট্রার রাসেল মল্লিক বলেন, অফিসের বাইরে কী হয়, বাইরে কে কী নেন, সে ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। তবে অফিস ও অফিসের স্টাফরা সরকারি ফির বাইরে একটি টাকাও নেয় না। যে টাকাটা নেওয়া হয়, সেই টাকার রশিদও দেওয়া হয়।


প্রিন্ট