করোনা ভাইরাসের এই মহামারিতে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২২ দিনে ২৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় ১১১ এবং উপসর্গ নিয়ে আরো ১৩৩ জন। আর গত ২৪ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা গেছে ১৯ ব্যক্তি।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান বলেন, গত ১ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত করোনা এবং উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণহানি হয়েছে ২৪৪ জন। এদের মধ্যে করোনায় ১১১ এবং উপসর্গ নিয়ে আরো ১৩৩জন।
তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন তারা ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদ, মাগুরা জেলা থেকে এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলো।
এই চিকিৎসক আরো বলেন, দূরদুরান্ত থেকে যে রোগী গুলো আসে তাদের শারীরিক অবস্থা একেবারের খারাপ নিয়ে আসে। যে কারনে তাদের মধ্যেই মৃত্যুর হার বেশি।
তিনি বলেন, করোনার এই দূর্যোগে আমরা প্রত্যেক রোগীকে সাধ্যমত সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের চেষ্টার ঘারতি নেই কোথাও।
হাসপাতালের এই পরিচালক আরো বলেন, ২২ দিনের মধ্যে সব থেকে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে ১৭ জুলাই। এই দিনে মারা গেছে ২১ ব্যক্তি। এছাড়াও ২০ ও ২২ জুলাই ১৯ জন করে প্রাণ হানি হয়েছে।
বর্তমানে ৫১৬ শয্যার এই মেডিকেল কলেজে পুরোটাই করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সোমবার (২২ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ৩০৬ জন ভর্তি রোগী রয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউয়ে রয়েছে ১৬ জন।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ’র) ফরিদপুর শাখার সভাপতি ডা. আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো বলেন, এই ভেরিয়েন্টা খুবিই ঝুকিপূর্ন । আক্রান্ত ব্যক্তিকে অল্প সময়েই খারাপ দিকে চলে যাচ্ছে আর এই জন্য মৃত্যু বাড়ছে।
তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি শরীরে সামান্য জ্বর, ঠান্ডা বা অন্য কোনো সমস্যা হলেই দ্রæত চিকিৎসকরে পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে সকলকেই চলতে হবে।
ফরিদপুর জেলার করোনা আক্রান্তে বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ২৮২ নমূনা পরীক্ষায় নতুন শনাক্ত হয়েছে ৯০ জন। শতকরা হারে যা ৩৪.৫৭ভাগ।
তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ১৬ হাজার ৪৭৪ ব্যক্তি, সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৯৮৭ জন। ফরিদপুর জেলায় এ পযন্তু মোট মৃত্যু ৩৪১।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, করোনার এই দূর্যোগে সকলকেই স্বাস্থ্য বিধির মধ্যে আসতে হবে। শুধু আইন প্রয়োগ করে নয়, করোনা যুদ্ধে সকল শ্রেনি মানুষের সহযোগিতা দরকার।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি জেলার হাট-বাজার, বিপনী বিতানসহ জনবহুল স্থানে মানুষকে সচেতন করতে এবং স্বাস্থ্য বিধির মধ্যে আনতে।
প্রিন্ট