আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর বাগমারা তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আলোচিত সহকারী শিক্ষক আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন পত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।এদিকে ২০২৪ সালে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নামে শুধু মাত্র তার দুই বছরের ইনক্রিমেন্ট স্থগিত করে তাকে এখনো স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। এতে অভিভাবক, সুশিল সমাজ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে,উঠেছে সমালোচনার ঝড়,বইছে মুখরোচক নানা গুঞ্জন,জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া,শিক্ষক সালামের খুঁটির জোর নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
.
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিবরিয়া বলেন, আব্দুস সালাম তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন, তিনি একই বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। তিনি বলেন, তার কাছে প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করাতে, তার বিরুদ্ধে
গোপনে সকল পরীক্ষার প্রশ্ন পত্র বিদ্যালয় থেকে ফাঁস করে শিক্ষার্থীদের দেয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
তিনি গত ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় প্রশ্ন পত্রের ছবি গোপনে তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে এবং তার কাছে প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীদের ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে দিতে গিয়ে ভুল করে “তাহেরপুর ক্লাস্টার ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ” নামক শিক্ষকদের গ্রুপে দিয়ে দেয়। এতে তার এই কুকর্ম সকলের কাছে ধরা পড়ে যায়।পরবর্তীতে এবিষয়ে রাজশাহীর শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগের ভিত্তিতে তৎকালীন তিনজন এটিও এবিষয়ে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা তদন্তে নিশ্চিত করন করেন, তদন্তকারিগণ হলেন রেজাউল কামাল, খলিলুর রহমান ও মামুনুর রশিদ ।
.
এদিকে কর্মকর্তাগণ তদন্তে এসে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুস সালামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে ডিলিট করা ছবি থেকে প্রশ্ন পত্রের ছবি দেখতে পায় , ধরা পড়ে গেল তিনি প্রশ্ন পত্র ফাঁসের অভিযোগ স্বীকার করেন।
এসময় আক্ষেপ করে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এবিষয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই ঘটনার সঠিক বিচার চেয়ে একটি ফেসবুকে ইস্ট্যটাসও দেন।
.
কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুস সালাম রাজনৈতিক প্রভাববিস্তার করে শিক্ষক শহীদুলের দেয়া ফেসবুক ইস্ট্যাটাজ ডিলিট করাতে বাধ্য করেন। শিক্ষক শহীদুল ইসলাম জানান এমন অপরাধ করে কোন শিক্ষাক তার স্বপদে বহাল থাকা উচিত নয়। কিন্তু বিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে সালাম এখনো স্বপদে কর্মরত আছেন।
.
স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ এই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের যদি শাস্তি না হয় এবং সে যদি একই বিদ্যালয়ের স্বপদে বহাল থাকে তাহলে পূর্বের মতো ঘটনা আবারো ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যায়।তারা এই শিক্ষকের অপসারণ চাই। তা না হলে তারা তাদের সন্তানদের আর এখানে লেখা পড়া করাবেন না।এরকম শিক্ষা ধ্বংসকারি কোনো শিক্ষক যেনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থান না পায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
.
এবিষয়ে বাগমারা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ধরনের অপরাধের ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত আমরা উপজেলা থেকে দিতে পারি না, আমরা শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে তার তদন্ত রিপোর্ট জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিতে পারি এ বিষয়ে যা ব্যবস্থা নেওয়ার জেলা শিক্ষা অফিস থেকেই নেয়া হয়েছে।এবিষয়ে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আব্দুস সালামের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রিন্ট