রাশিদুল ইসলাম রাশেদঃ
হাজার হাজার ছাত্র জনতা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রতিষ্ঠা করার জন্য নয়। লালপুরকে ২৪ এর আগের বাংলাদেশ মনে করবেন না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে কোন সন্ত্রাসী, কোন গুন্ডা, কোন চাঁদাবাজির জায়গা হবেনা। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে মনে করবেন না, লালপুরের মানুষ আপনাদেরকে পবিত্র মনে করে। গতকাল ঈদের পরে স্লোগান হওয়ার কথা ছিল ঈদ মোবারক। কিন্তু জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ঈদের আনন্দ ও মহিমাকে কলুষিত করেছে আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে অস্ত্র বের করে আমাদের ভাই সাব্বির ও সুজাতকে হত্যা করার জন্য গুলি করেছে।
.
আমি স্পষ্ট করে প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা ২০২৪ এর পরে অস্ত্র উদ্ধারের নামে নাটক করেছেন। লালপুরে অস্ত্রের ঝনঝনানি প্রশাসন যদি নির্মূল করতে না পারেন, তাহলে বলে দেন। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী এই অস্ত্রধারীদেরকে নির্মূল করার জন্য যথেষ্ট। আপনারা চুনোপুটি ধরে আমাদেরকে বোকা বানাতে চেয়েছেন। আপনারা রাঘব বোয়ালদেরকে চিনেন না? গত ১৭ বছরে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির ধরে ধরে জেলে পুরেছেন। ফাঁসি দিয়েছেন। আর চিহ্নিত সন্ত্রাসীদেরকে আপনারা চিনতে পারছেন না। নাটক বন্ধ করেন। প্রশাসনের ভাইয়েরা নাটক বন্ধ করেন। যদি আপনারা সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হন, তাহলে লালপুরের জনগণ কি করবে আমার জানা নেই। এর জন্য দায়ভার আপনাদেরকে নিতে হবে। লালপুরের পরিবেশ সুন্দর ও সুস্থ রাখার জন্য অনতিবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের গেপ্তার করতে হবে।
.
ঈদের দিন সোমবার উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ শেষে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগের গুলি করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ১১টায় উপজেলার তিনি বটতলা মোড়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন লালপুর উপজেলা জামায়াতের আমির ও জেলা জামায়াতের সূরা ও কর্ম পরিষদের সদস্য, লালপুর – বাগাতিপাড়া আসনে (সংসদীয় আসন ৫৮) জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
এ সময় লালপুর থানার ওসিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনি যোগাযোগ করতে চান না। ফোন দিলে ধরতে চান না। জনগণের মান ইজ্জতের প্রতি আপনার দায়িত্ব নাই? কার হয়ে কাজ করছেন? ফিরে আসুন। ২০২৪ এর পরের বাংলাদেশে কোন কুচক্রীর কুচক্র চলবে না।
.
তিনি আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আমাদের ভাইদেরকে হত্যা করার জন্য যারা গুলি করেছেন, আমাদের ভাইদের বাড়ির প্রতি যারা আক্রমণ করেছেন, তারা লালপুরকে ২৪ এর আগের বাংলাদেশ মনে করবেন না। হাজার হাজার ছাত্র জনতা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, আপনাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রতিষ্ঠা করার জন্য নয়। সুন্দরভাবে যদি লালপুরে বসবাস করতে চান, তাহলে প্রথমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে আইনের আওতায় আসতে হবে। আপনাদের বিচার হবে। তারপরে লালপুরে বসবাস করবেন।
.
এ সময় উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এড. মাসুদ রানা বলেন, ডক্টর ইউনুস এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন মসৃণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আওয়ামী সন্ত্রাসী দোসররা বিভিন্ন অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আওয়ামী লীগকে বলতে চাই- আপনার বাড়ি আপনার জন্য নিরাপদ, আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আপনার জন্য নিরাপদ। কিন্তু যদি কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, অপতৎপরতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চান, তাহলে জনগণ বসে থাকবে না। ৩২ নম্বরের অবস্থা যেমন হয়েছে, আপনাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ির অবস্থা তেমন হবে। অপতৎপরতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর আগে ৩২ নম্বরের দিকে তাকাবেন। তারপর অপতৎপরতা চালাবেন। এর আগে নেতাকর্মীরা লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি লালপুর ত্রিমোহনী হয়ে ঈশ্বরদী – বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে চিনি বটতলা মোড়ে প্রতিবাদ সভায় যুক্ত হয়।
.
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা কর্ম পরিষদ ও জেলা সূরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুল ওহাব, লালপুর উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি হাফেজ মো: আফজাল হোসেন, নাটোর জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জাহিদ হাসান, যুব বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা হামিদুল ইসলাম ও বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।।
প্রিন্ট