রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৫নং গোগ্রাম ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসলাম আলীর বিরুদ্ধে ভিজিএফ (VGF) কর্মসূচির চাউল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে দ্রুত গ্রেফতার ও অপসারণের দাবিতে আজ রবিবার (২৩ মার্চ) উপজেলা নির্বাহী অফিসের সামনে মানববন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসলাম আলী ক্ষমতার অপব্যবহার করে গরিব ও দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চাউল অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ইউনিয়নে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোগ্রাম ইউনিয়নের ২৩৮০ জন সুবিধাভোগীর জন্য বরাদ্দকৃত চাউল সঠিকভাবে বিতরণ করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, ওয়ার্ডভিত্তিক তালিকায় অনিয়ম করা হয়েছে এবং প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হয়েছেন।
স্মারকলিপিতে জনগণ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছে, দাবি গুলো—
১। ভিজিএফ সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রকাশ করা।
২। চাউল বিতরণে অনিয়মের নিরপেক্ষ তদন্ত করা।
৩। আসলাম আলীকে দ্রুত গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনা।
৪। তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করা এবং নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া।
৫। দরিদ্র জনগণের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা।
৬। দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা।
এ বিষয়ে গোগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, “দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান আসলাম আলী নানা অনিয়ম করে আসছেন। এবার তিনি ভিজিএফ চাউল আত্মসাৎ করে সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। আমরা চাই, তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এছাড়া, ফারদপুর মোড়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বটগাছ কাটার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে উঠেছে। এলাকাবাসীর মতে, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে থাকা এ গাছ বিনা অনুমতিতে কেটে ফেলা হয়েছে, যা পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেছেন, ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতে করে সরকারি প্রকল্পগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, এবং জনগণ তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসলাম আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন, “এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমি কোনো অনিয়ম করিনি।”
এলাকাবাসী এখন প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছে। তারা আশাবাদী, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহাম্মেদ জানান, “বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রিন্ট