ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সংস্কার সংস্কার বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যাবেনাঃ -মাহবুবের রহমান শামীম Logo বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ফরিদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ‌আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo মুকসুদপুরে পান্নু ফুটবল একাডেমির আয়োজনে দোয়া ও ইফতার মহফিল Logo বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে সচেতনতামূলক সভা Logo গোমস্তাপুরে ট্রেনের সাথে ট্রাক্টরের সংঘর্ষে ট্রাক্টর চালক নিহত Logo কালুখালীতে জাকের পার্টির মিশন জলসা ও ইফতার Logo দৌলতপুর সীমান্তে বিজিবির পৃথক অভিযানে মাদকসহ এক নারী আটক Logo খোকসা ২৫ শে মার্চ গণহত্যা ও মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা Logo বোয়ালমারীতে বিএনপির পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন Logo সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী মিতালী-৫ লঞ্চের ধাক্কায় নৌকা ডুবিতে শিশু নিখোঁজ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আলু নষ্টের আশঙ্কায় কৃষকঃ হিমাগারে আলু পরিবহনের লম্বা সিরিয়াল

মানিক কুমার দাসঃ

ফরিদপুর হিমাগারে আলু রাখতে সিরিয়ালের বিশাল জ্যামে কৃষক। ব্যবসায়ী ও কৃষকরা এ আশঙ্কায় যে আলু হিমাগারে ষ্টক না করতে পারলে ব্যাপক লস গুনতে হবে । হিমাগারের বাইরে ট্রাকের দীর্ঘ সারি নিয়ে অপেক্ষায় সবাই। হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, অধিক ফলন ও একইসঙ্গে সবাই আলু নিয়ে আসার কারণে এ বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। ৬০ হাজারের বেশি বস্তা আলু হিমাগারে নেওয়া হয়েছে। এখনো যারা অপেক্ষমান রয়েছেন তাদের আলুও পর্যায় ক্রমে হিমাগারে নেওয়া হবে।

জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতিবছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বুকিং দিতে হয়। আলু রাখার মৌসুম মার্চ মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।ফরিদপুর ছাড়াও এ হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেন গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। আলু ছাড়াও ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই কিছুদিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করেন। সুবিধামতো সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

 

হিমাগার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে গোয়ালচামট এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৯৯৫ সালে ‘ফরিদপুর হিমাগার লিমিটেড’ নামে হিমাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই হিমাগারটির ধারণক্ষমতা রয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার বস্তা। প্রতি বস্তায় ৬০ কেজি করে আলু রাখতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবসায়ীরা বস্তাপ্রতি ৪০৫ টাকা হারে ভাড়া প্রদান করেন।
সরেজমিনে হিমাগার ঘুরে দেখা যায়, ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে হিমাগার ফটকের সামনে ট্রাক ,ট্রাক্টর, ভটভটি, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে আলু বোঝাই করে নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী ও কৃৃষকরা। হিমাগারে রাখার জন্য সেখানে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

কেউ কেউ তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন। জানা যায় আগতদের অধিকাংশ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে এসেছেন। পাঁচ-ছয়দিন ধরে অপেক্ষা করেও অনেক কৃষক আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে হতাশায় ভুগছেন। এ বছর বুকিং দিয়েও আলু রাখতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন কৃষক ও ব্যবসায়ী। তাদের আশঙ্কা, প্রচণ্ড গরমে ট্রাকবোঝাই আলু নিয়ে দীর্ঘ সময় এভাবে অপেক্ষায় থাকলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ট্রাকে বস্তায় রাখা আলু। ফরিদপুর হিমাগারে আলু রাখার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে আসা মমিন মিয়া বলেন, পাঁচদিন আগে ১৩ টন আলু নিয়ে ফরিদপুর এসেছি। অপেক্ষা করতে করতে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এখন ভয় হচ্ছে ট্রাকে রাখা আলু প্রচণ্ড গরমে পচন না ধরে যায়।

ফরিদপুর হিমাগারের ম্যানেজার রুস্তুম মোল্লা  জানান, মূলত ব্যবসায়ী ও কৃষকরা বছরের মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানে আলু সংরক্ষণ করেন। আলু ছাড়াও ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই অল্পদিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করে রাখেন। সুবিধামতো সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

তিনি আরো বলেন, আমাদের আনলোডের শ্রমিক সংখ্যা কম। যে কারণে দূর থেকে আসা ট্রাকগুলো থেকে আমরা পর্যাপ্ত আলু আনলোড করতে পারছি না। তবে আশা করছি, আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে যে গাড়িগুলো অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলো থেকে আমরা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারব।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সংস্কার সংস্কার বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করা যাবেনাঃ -মাহবুবের রহমান শামীম

error: Content is protected !!

আলু নষ্টের আশঙ্কায় কৃষকঃ হিমাগারে আলু পরিবহনের লম্বা সিরিয়াল

আপডেট টাইম : ৯ ঘন্টা আগে
মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি :

মানিক কুমার দাসঃ

ফরিদপুর হিমাগারে আলু রাখতে সিরিয়ালের বিশাল জ্যামে কৃষক। ব্যবসায়ী ও কৃষকরা এ আশঙ্কায় যে আলু হিমাগারে ষ্টক না করতে পারলে ব্যাপক লস গুনতে হবে । হিমাগারের বাইরে ট্রাকের দীর্ঘ সারি নিয়ে অপেক্ষায় সবাই। হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, অধিক ফলন ও একইসঙ্গে সবাই আলু নিয়ে আসার কারণে এ বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। ৬০ হাজারের বেশি বস্তা আলু হিমাগারে নেওয়া হয়েছে। এখনো যারা অপেক্ষমান রয়েছেন তাদের আলুও পর্যায় ক্রমে হিমাগারে নেওয়া হবে।

জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতিবছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বুকিং দিতে হয়। আলু রাখার মৌসুম মার্চ মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত।ফরিদপুর ছাড়াও এ হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেন গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। আলু ছাড়াও ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই কিছুদিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করেন। সুবিধামতো সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

 

হিমাগার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে গোয়ালচামট এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৯৯৫ সালে ‘ফরিদপুর হিমাগার লিমিটেড’ নামে হিমাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই হিমাগারটির ধারণক্ষমতা রয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার বস্তা। প্রতি বস্তায় ৬০ কেজি করে আলু রাখতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবসায়ীরা বস্তাপ্রতি ৪০৫ টাকা হারে ভাড়া প্রদান করেন।
সরেজমিনে হিমাগার ঘুরে দেখা যায়, ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে হিমাগার ফটকের সামনে ট্রাক ,ট্রাক্টর, ভটভটি, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে আলু বোঝাই করে নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ী ও কৃৃষকরা। হিমাগারে রাখার জন্য সেখানে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

কেউ কেউ তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন। জানা যায় আগতদের অধিকাংশ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে এসেছেন। পাঁচ-ছয়দিন ধরে অপেক্ষা করেও অনেক কৃষক আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে হতাশায় ভুগছেন। এ বছর বুকিং দিয়েও আলু রাখতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন কৃষক ও ব্যবসায়ী। তাদের আশঙ্কা, প্রচণ্ড গরমে ট্রাকবোঝাই আলু নিয়ে দীর্ঘ সময় এভাবে অপেক্ষায় থাকলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ট্রাকে বস্তায় রাখা আলু। ফরিদপুর হিমাগারে আলু রাখার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে আসা মমিন মিয়া বলেন, পাঁচদিন আগে ১৩ টন আলু নিয়ে ফরিদপুর এসেছি। অপেক্ষা করতে করতে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এখন ভয় হচ্ছে ট্রাকে রাখা আলু প্রচণ্ড গরমে পচন না ধরে যায়।

ফরিদপুর হিমাগারের ম্যানেজার রুস্তুম মোল্লা  জানান, মূলত ব্যবসায়ী ও কৃষকরা বছরের মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানে আলু সংরক্ষণ করেন। আলু ছাড়াও ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই অল্পদিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করে রাখেন। সুবিধামতো সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।

তিনি আরো বলেন, আমাদের আনলোডের শ্রমিক সংখ্যা কম। যে কারণে দূর থেকে আসা ট্রাকগুলো থেকে আমরা পর্যাপ্ত আলু আনলোড করতে পারছি না। তবে আশা করছি, আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে যে গাড়িগুলো অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলো থেকে আমরা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করতে পারব।


প্রিন্ট