আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর তানোরে শতফুল বাংলাদেশ এনজিও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।গত ১৬ মার্চ রোববার ভুক্তভোগী গ্রাহক রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে শতফুল এনজিও থেকে ঋণ নিতে গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে তাদের স্বাক্ষরিত ফাঁকা স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা। যা এনজিও নীতিমালা পরিপন্থী বলে গ্রাহকেরা জানিয়েছে। এতে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র মতে, গ্রামঞ্চলের সাধারণ মানুষ অভাব-অনটনের তাড়োনায় এনজিওর নিকট হতে ঋণ নিয়ে কিস্তি হিসাবে সাধারণত টাকা নিয়ে থাকেন। আর এই সুযোগে এনজিওর কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের নিকটে প্রথমে ব্যাংকের ফাঁকা চেকের পাতা এবং তিনশত টাকা মূল্যের ফাঁকা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নিয়ে রাখছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহক রবিউল ইসলামের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে,তিনি একজন কৃষক, মৎস্যচাষী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার সাংসারিক দায়বসত তিনি তার স্ত্রীকে শতফুল বাংলাদেশ এনজিওর সদস্য করেন। এনজিও সমিতির কোড নম্বর ৬৭, সদস্য নম্বর ৬৭৪৯ এবং পাস বই ইস্যুর তারিখ- ১৩/০২/২০২৪ ইং। তার স্ত্রী এনজিওর নিয়মিত গ্রাহক এবং তিনি ঋণ গ্রহণ ও নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করে আসছেন।এখানো এনজিতে তার প্রায় ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা রয়েছে। তিনি আবারো ৪ লাখ টাকা ঋণ গ্রহনের প্রস্তাব করেন। তাকে ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার বকেয়া সমস্ত টাকা পরিশোধ করানো হয়। কিন্ত্ত টাকা পরিশোধের পরেও তাকে ঋণ না দিয়ে প্রায় একমাস যাবত ঘোরানো হচ্ছে।
গত ১৬ মার্চ রোববার রবিউল ইসলাম ঋণ গ্রহণের জন্য শতফুল বাংলাদেশ তানোর শাখায় গেলে তাকে ঋণ দেয়া যাবে না বলে বের করে দেয়া হয়। এমতাবস্থায় তিনি তার সঞ্চয়কৃত প্রায় ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করতে চাইলে টাকা না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। অথচ তার স্ত্রীর নামে শতফুল বাংলাদেশ এনজিওর কাছে ফাঁকা চারটি চেক এবং ফাঁকা স্ট্যাম্প স্বাক্ষরসহ জমা আছে। এতে এনজিও দ্বারা ক্ষতি সাধনের আশঙ্কায় তিনি শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম বলেন, মাঠে তার ৫০ বিঘা আলু রয়েছে।
এসব আলু উত্তোলনে টাকার প্রয়োজন।কিন্ত্ত শতফুল এনজিও তাকে ৪ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কোনো কারণ ছাড়াই ঋণ দিবে না বলে জানিয়েছে,এমনকি সঞ্চয়ের ৫০ হাজার টাকা ও এনজিওর কাছে তার স্ত্রীর স্বাক্ষরিত ফাঁকা চারটি চেক এবং ফাঁকা স্ট্যাম্প রয়েছে সেগুলো না দিয়ে কালক্ষেপণ করছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শতফুল বাংলাদেশ তানোর শাখার কর্মকর্তা (ম্যানেজার) ইসমত আরা খাতুন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রবিউল ইসলাম নিয়মিত কিস্তি দেয় না, তাই তাকে ঋণ দেয়া যাবে না, সঞ্চয়ের টাকা, স্ট্যাম্প ও চেক নিতে হলে তার স্ত্রীকে নিয়ে আসতে হবে। ঋণ প্রদানে গ্রাহকের স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক স্ট্যাম্প নেয়া যায় কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো সদোত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, তিনি জেলায় মিটিংয়ে আছেন। তিনি বলেন,অফিসে গিয়ে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন।
প্রিন্ট