ইসমাইল হোসেন বাবুঃ
কুষ্টিয়ার মিরপুরে কাপড় ব্যবসায়ী শিপন আলীকে (৩৯) কৌশলে অপহরণ করে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার মামলায় অভিযুক্ত ৭ হিজড়াকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ওয়াপদা সাইকেল স্ট্যান্ড এলাকার দুর্লভ প্রামাণিকের ছেলে ইমন ওরফে নেহা (২৮), একই এলাকার সোহেল রানার ছেলে বাঁধন ওরফে বেলী (২৬), আব্দুর রহমানের ছেলে মিজান ওরফে আঁখি (৩৬), নজু জোয়াদ্দারের ছেলে মিন্টু ওরফে ফুলি (২৮), মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে আলামিন ওরফে পানি (২৯), ইয়ার আলীর ছেলে হৃদয় ওরফে পাখি (২১) ও আকবার আলীর ছেলে জাফর ওরফে সোনালী (২৬)।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি একজন ভ্রাম্যমাণ কাপড় ব্যবসায়ী। ব্যবসার সূত্র ধরে অভিযুক্ত নেহা, আঁখি ও বেলীর সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা মাঝে মাঝে তার কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে কাপড় কিনতেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় এসে তারা পাঁচটি শাড়ি কেনেন এবং বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য ভুক্তভোগীকে মিরপুরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।
কাপড়ের টাকা নিতে সরল বিশ্বাসে তাদের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মিরপুরের ওয়াপদা এলাকায় যান ভুক্তভোগী। সেখানে নেহার বাড়িতে পৌঁছালে তারা শাড়ির বকেয়া টাকা পরিশোধ করেন। এরপর তাকে খাবার খেতে দেওয়া হয়। খাবার খাওয়ার পরপরই তার মাথা ঝিমঝিম করতে শুরু করে এবং তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
রাতের দিকে জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখতে পান, তার মাথা বেলীর হাঁটুর ওপর রাখা এবং আশপাশে অন্যান্য আসামিরা বসে আছেন। তখন তিনি টের পান, তার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে এবং অপারেশনের মাধ্যমে তাকে জোরপূর্বক তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনার কারণ জানতে চাইলে আসামিরা কোনো উত্তর না দিয়ে তাকে জোরপূর্বক বাড়িতে আটকে রাখে। দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর গত ৩ মার্চ সুযোগ বুঝে পালিয়ে এসে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
এ বিষয়ে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, কাপড় ব্যবসায়ীর উপর সংঘটিত নৃশংস ঘটনার তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত সাতজন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট