ইসমাইল হোসেন বাবুঃ
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে শুরু হচ্ছে উপমহাদেশের প্রখ্যাত মরমি কবি ও সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের স্মরণোৎসব। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে প্রতি বছর তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকলেও এ বছর পবিত্র রমজানের কারণে একদিনে শুধু আলোচনা সভা এবং বাউলদের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে শেষ হবে এই উৎসব। এবার দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলা।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়োজনে দর্শনার্থীদের জন্য কোনো উৎসব না থাকলেও সাধুসঙ্গ চলবে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী।
জানা গেছে, মরমি সাধক লালন শাহ তার জীবদ্দশায় দোল পূর্ণিমার রাতে শিষ্যদের নিয়ে কালীগঙ্গার তীরে সাধুসঙ্গে বসতেন। তারই ধারাবাহিকতায় লালন শাহের তিরোধানের পরও প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শেষ দিকে তার আখড়ায় দোলপূর্ণিমা উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে দেশ-বিদেশ থেকে লাখো ভক্ত সেখানে জড়ো হন। অষ্টপ্রহরে গুরুকার্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাধুসঙ্গ।
আখড়াবাড়ির ভারপ্রাপ্ত খাদেম মশিউর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুরুকার্যের মাধ্যমে শুরু হবে সাধুসঙ্গ। এরপর রাখাল সেবা, মধ্যরাতে অধিবাস, শুক্রবার ভোররাতে বাল্য সেবা এবং দুপুরে পূর্ণসেবার মধ্য দিয়ে শেষ হবে বাউল ও ভক্তদের সাধুসঙ্গ।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান জানান, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাজারসংলগ্ন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আগত বাউল সাধক, ভক্ত অনুরাগী এবং দর্শনার্থীদের সহযোগিতার জন্য গ্রামপুলিশ, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) তৌফিকুর রহমান বলেন, প্রতি বছর দোলপূর্ণিমা তিথিতে মরমি সাধক ফকির লালন সাঁইয়ের তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসব অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ ও সাড়ম্বরে উদযাপন হয়ে থাকে। তবে এ বছর দোল পূর্ণিমা পবিত্র রমজান মাসে হওয়ায় স্মরণোৎসবে শুধু আলোচনা সভা এবং বাউল আপ্যায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা ও যথাযথ ভাব-গাম্ভীর্য রক্ষার্থে এ বছর বাউলদের মাগরিবের পরে এবং রাতে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রিন্ট