রাশিদুল ইসলাম রাশেদঃ
নাটোরের লালপুর উপজেলার পশ্চিম ডেবরপাড়া গ্রামের মৃত রনজিত কারিগরের ছেলে আবু রায়হানের স্বপ্ন ছিল চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই হবেন উদ্যোক্তা। সেই স্বপ্ন পূরণে প্রথমে গড়েছিলেন ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগির খামার। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী লাভ না হওয়ায় ইউটিউব দেখে শুরু করেন কোয়েল পাখি পালন। এবার কাঙ্খিত সাফল্য পেতে শুরু করেছিলেন আবু রায়হান (৩৫)। কিন্তু বিধি বাম। আকস্মিকভাবে গত চারদিনে রানীক্ষেত রোগে মারা গেছে খামারের প্রায় সব কোয়েল পাখি।
বুধবার (১২ মার্চ, ২০২৫) সরেজমিনে দেখা যায়, খামারের ভেতর কোয়েল পাখি মরে স্তুপ হয়ে পড়ে আছে। সেগুলো ঝুড়িতে উঠাচ্ছেন রায়হান। তাঁর ছেলে সাকিব সেই পাখিগুলো বস্তায় ভরে রাখছেন। পরে বস্তাগুলো মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।
এ সময় খামারি আবু রায়হান বলেন, তিন মাস আগে ৫ হাজার পাখির বাচ্চা কিনে খামার শুরু করেছিলেন। দুই মাসের মধ্যে পাখিগুলো ডিম দিতে শুরু করে। প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ডিম উৎপাদন হচ্ছিলো। গত ৭ মার্চ থেকে খামারে শুরু হয় বিপর্যয়। হঠাৎ কিছু পাখি ঝিমিয়ে পড়ে মারা যেতে থাকে। উপজেলা পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করেও শেষ রক্ষা হয়নি। একে একে সব কোয়েল মারা যায়। এখন শুধু ৪০টি পাখি বেঁচে আছে। সেগুলোও অসুস্থ থাকায় বিক্রি করতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে খামারটি গড়েছিলেন। পাখি বিক্রির মাধ্যমে সেই ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা থাকলেও এখন তিনি সব হারিয়ে পথে বসেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, রানীক্ষেত রোগে আবু রায়হানের খামারে কোয়েল পাখি মারা গেছে। এটি এক ধরনের সংক্রামক ভাইরাস। যা খামারের ভেতর দ্রুত ছড়ায়। এ রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত খামার পরিদর্শন করে খামারিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
প্রিন্ট